দোষী হলে ২০ থেকে ৪০ পয়েন্ট কাটা যেতে পারে ম্যানচেস্টার সিটির

আর্থিক নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠিন শাস্তি হতে পারে ম্যানচেস্টার সিটিরছবি: ফেসবুক

খেলাধুলায় শতাব্দীর আলোচিত বিচার’—গত বছরের সেপ্টেম্বরে ম্যানচেস্টার সিটি ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের মধ্যে আইনি লড়াই শুরুর আগে আদালতের কার্যক্রমকে এ নাম দিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজপরিবারের মালিকানাধীন ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে আর্থিক নীতিমালা ভঙ্গের ১১৫টি অভিযোগ গঠন করেছিল প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ। এ অভিযোগের বিষয়ে একটি স্বাধীন প্যানেল শুনানি কার্যক্রম শেষ করেছে। এখন আদালতের রায় ঘোষণার পালা।

আদালত থেকে শিগগিরই বড় ধরনের দুঃসংবাদ শুনতে পারে ম্যানচেস্টার সিটি
ছবি: রয়টার্স

সিটির বিরুদ্ধে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করে ২০১৮ সালে। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত বিষয়গুলো তখন আমলে নেওয়া হয়। পরে তদন্ত কার্যক্রমের সময় যুক্ত হয় অসহযোগিতার অভিযোগও।

আরও পড়ুন

ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও বিতর্কিত বিষয়ে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার অর্থ হলো সিটি নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছে। অনেকের ধারণা, দোষী সাব্যস্ত হলে ওই সময়ের মধ্যে ক্লাবটির জেতা ট্রফিগুলো কেড়ে নেওয়া হবে, জয়ী ঘোষণা করা হতে পারে ওই প্রতিযোগিতাগুলোয় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দলকে। এ ছাড়া প্রিমিয়ার লিগ থেকে চ্যাম্পিয়নশিপে (দ্বিতীয় স্তরে) নামিয়ে নেওয়া বা নির্দিষ্ট সময়ের নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হতে পারে।

সম্প্রতি ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছেন আর্লিং হলান্ড
ছবি: এক্স

তবে শীতকালীন দলবদলে কয়েকজন খেলোয়াড়কে দলে ভেড়ানো ও ২০৩৪ সাল পর্যন্ত আর্লিং হলান্ডের চুক্তি নবায়ন দেখে মনে হচ্ছে, সিটিকে শিগগিরই দ্বিতীয় স্তরে নামিয়ে দেওয়া হবে না, হয়তো অনেক পয়েন্ট কাটা হবে। যার ফলে আগামী মৌসুমে উয়েফার প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নিতে পারবে না।

এমনিতেই মাঠে ম্যানচেস্টার সিটির সময় খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। এক ম্যাচ জিতছে তো পরের ম্যাচেই পয়েন্ট হারাচ্ছে। আজ রাতে ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষে ম্যাচটি তো তাদের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগে বাঁচা–মরার লড়াই হয়ে উঠেছে। কয়েক দিনের মধ্যে হয়তো আদালত থেকেও বড় ধরনের দুঃসংবাদ পেতে যাচ্ছে পেপ গার্দিওলার দল।

ফুটবল অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ কী বলছেন

ম্যানচেস্টার সিটির ভাগ্যে কী ঘটতে পারে, সে ব্যাপারে ইংল্যান্ডের শেফিল্ড হ্যালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রব উইলসনের মতামত জানতে চেয়েছে অনলাইন ক্যাসিনোর ওয়েবসাইট ‘স্লিঙ্গো’। তিনি দেশটির শীর্ষস্থানীয় ফুটবল অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত।

ফুটবল অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. রব উইলসন
ছবি: সংগৃহীত

ড. উইলসন বলেছেন, ‘তারা (ম্যানচেস্টার সিটি) সরাসরি অবনমিত হবে, এমন আশা করছি না। আমার মনে হয়, তাদের অনেক পয়েন্ট কাটা হবে। আমার অনুমান ছিল প্রায় ৫০ (পয়েন্ট কাটা) হবে। তবে এমন ধারণা যখন করেছিলাম, তখন তারা প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল। এখন সম্ভবত ২০ থেকে ৪০ পয়েন্টের মধ্যে কিছু একটা হবে। সঙ্গে আগামী গ্রীষ্মকালীন দলবদলে নিষেধাজ্ঞাও পেতে পারে। জানুয়ারিতে তাদের কার্যকলাপ (শীতকালীন দলবদল) দেখে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আমি আশা করছি, ম্যানচেস্টার সিটির শাস্তি হবে। কিন্তু এটা ম্যানচেস্টার সিটি-প্রিমিয়ার লিগ উভয় পক্ষের জন্যই জয় হবে। কারণ, এটা সিটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পয়েন্ট কর্তন হলেও ফুটবল ক্লাব হিসেবে তাদের অস্থিতিশীল করার জন্য যথেষ্ট হবে না।’

আরও পড়ুন

উইলসন আরও বলেছেন, ‘আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, (গ্রীষ্মকালীন) দলবদলে তাদের ওপর একটা নিষেধাজ্ঞা আসবে। কারণ, তাদের কিছু স্তরের ক্রীড়া অনুমোদন প্রদান করতে হবে। সেটাই বলে দেবে কেন তারা হঠাৎ দলবদলের বাজারে গিয়েছিল এবং সম্ভাব্য চার খেলোয়াড়ের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ যে প্রবণতা দেখিয়েছে, সেই অনুযায়ী একই মৌসুমের মধ্যে করতে হবে। এ কারণেই এভারটনের সঙ্গে বড় ধরনের লড়াই হয়েছিল। কারণ, লভ্যাংশের অনুপাত (প্রফিট শেয়ারিং রেশিও) হিসাব করার দুটি ভিন্ন পর্যায়ের ওপর ভিত্তি করে একই মৌসুমে এভারটনের ২ পয়েন্ট কেটে নেওয়া হয়েছিল।’