টটেনহামের সঙ্গে ১৯ বছরের সম্পর্ক শেষ করে কেইন এখন বায়ার্নের
মঞ্চটা প্রস্তুত হয়েই ছিল। অপেক্ষা ছিল শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা আসার। অবশেষে সেই ঘোষণাটাও দিয়ে দিল বায়ার্ন মিউনিখ। হ্যারি কেইন এখন থেকে বায়ার্নের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একাধিক পোস্টে কেইনকে কেনার ঘোষণা দিল জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। ১১ কোটি ইউরোতে আগামী ৪ বছরের জন্য কেইনকে চুক্তিবদ্ধ করল বায়ার্ন। দলবদলের শুরু থেকে একে একে তিনবার প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয় বায়ার্ন। কিন্তু এরপরও হাল ছাড়েনি তারা। টটেনহাম থেকে শেষ পর্যন্ত কেইনকে কিনেই নিল তারা।
ধারে বিভিন্ন ক্লাবে খেললেও ২০০৯ সাল থেকে টটেনহামের সঙ্গেই ছিলেন কেইন। আর বয়সভিত্তিক দল হিসাব করলে সম্পর্কটা ২০০৪ থেকে। দীর্ঘ এ সম্পর্কের ইতি টেনে কেইন এখন বায়ার্নের। বায়ার্নে যোগ দেওয়া নিয়ে কেইন বলেছেন, ‘আমি বায়ার্নের অংশ হতে পেরে খুবই আনন্দিত। বায়ার্ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্লাবগুলোর একটি। আমি সব সময় বলেছি, আমি লড়াই করতে চাই এবং শীর্ষ স্তরের ফুটবলে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। ক্লাবটি তাদের জেতার মানসিকতার জন্য পরিচিত। এখানে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে।’
কেইনকে স্বাগত জানিয়ে বায়ার্ন সভাপতি হার্বার্ট হেইনার বলেছেন,‘হ্যারি কেইন, মিউনিখে স্বাগত। শীর্ষ সারির এই ফুটবলারের আগমনে আমরা আনন্দিত। হ্যারি শুধু বায়ার্নকেই শক্তিশালী করবে না, বরং সে এখন গোটা বুন্দেসলিগার সম্পদ।’
টটেনহামের আইকন খেলোয়াড় পরিচিত পেলেও তার শুরুটা কিন্তু হয়েছিল স্পারদের নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালের হয়ে। ২০০১ সালে ৮ বছর বয়সে কেন আর্সেনালের যুব দলে যোগ দেন। তবে এক মৌসুম পরেই যথেষ্ট ভালো মনে না হওয়ায় কেইনকে বের করে দেয় গানাররা।
কেইন আবার ফিরে যান রিডগিওয়েইস রোভার্সে, যেখান থেকে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। সেখানে কাটান আরও দুই বছর। পরে এক বছরের জন্য যোগ দেন ওয়াটফোর্ডের একাডেমিতে। সব শেষে থিতু হন টটেনহামে। এরপর বাকিটা ইতিহাস। টটেনহামের সঙ্গে কেইন এতটাই জড়িয়ে যান যে তাঁকে নিয়ে স্পার সমর্থকেরা স্লোগানও বানান, ‘হ্যারি কেইন, হি ইজ ওয়ান অব আওয়ার ওউন’ নামে। গত মৌসুম পর্যন্ত টটেনহামের প্রতিটি ম্যাচে স্লোগানটি শোনা যেত, কিন্তু এখন আর শোনা যাবে না।
টটেনহামে এই অবস্থানে আসতে অবশ্য তাঁর বেশ কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। স্ট্রাইকার হওয়ার পথে তাঁর বড় বাধা ছিল অতিরিক্ত ওজন। তবে সেই বাধাকেও একসময় ঠিকই পেছনে ফেলেন তিনি। কঠোর পরিশ্রমে বাড়তি মেদ ঠিকই ঝরিয়ে ফেলেন কেইন। কিন্তু আক্ষেপ একটাই, কেইনের দখলে কোনো শিরোপা নেই। সেই শিরোপার খোঁজেই চেনা ক্লাব ও পরিবেশ ছেড়ে এখন জার্মানিতে পাড়ি জমালেন। এখন বায়ার্নের হয়ে অধরা সেই ট্রফিটি কেইন হাতে নিতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।