‘কালো জার্সি’র ব্রাজিলের জয়ের রাতেও বর্ণবাদের থাবা
কালো জার্সি পরে খেলতে নেমেছে ব্রাজিল—এমন দৃশ্য এর আগে কেউ কখনো দেখেনি। প্রথমবারের দেখা গেল গতকাল রাতে। বার্সেলোনায় গিনির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম কালো জার্সি পরতে দেখা গেল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে হয়ে যাওয়া বর্ণবাদী আচরণের প্রতিবাদেই মূলত কালো জার্সি পরে খেলতে নামা। প্রথমার্ধে কালো জার্সি পরে খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে চিরচেনা হলুদ জার্সিতেই দেখা গেছে ব্রাজিলকে।
এই প্রীতি ম্যাচটিও অবশ্য ছিল ব্রাজিলের বর্ণবাদবিরোধী অবস্থানের অংশ, যার স্লোগান ছিল, ‘বর্ণবাদ নিয়ে কোনো খেলা নয়।’ খেলা শুরুর আগে হয়েছে হাঁটু গেড়ে প্রতিবাদও। তবে ভিনির সমর্থনে আয়োজিত এ ম্যাচেও পড়েছে বর্ণবাদের থাবা। ভিনিসিয়ুসের এক বন্ধুর সঙ্গে মাঠে বাইরে করা হয়েছে বর্ণবাদী আচরণ। যার প্রতিবাদ করেছেন ভিনি নিজেই।
মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য ব্রাজিল জিতেছে দাপটের সঙ্গেই। গিনিকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে লাতিন পরাশক্তিরা। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হারের পর এটি ব্রাজিলের প্রথম জয়। এর আগে খেলা প্রীতি ম্যাচে মরক্কোর কাছে হেরেছিল ব্রাজিল।
মাঠের লড়াইয়ে শুরু থেকে দাপট দেখানো ব্রাজিল প্রথম গোল পায় ম্যাচের ২৭ মিনিটে। ব্রাজিলের জার্সিতে প্রথমবারের মতো গোলের দেখা পান নিউক্যাসল তারকা জোয়েলিন্টন। ৩ মিনিট পর দারুণ ফিনিশিংয়ে ব্রাজিলকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন রদ্রিগো। তবে বিরতির আগেই এক গোল শোধ করে ম্যাচ জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেয় গিনি।
বিরতি থেকে ফিরতেই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ব্রাজিল। ৪৭ মিনিটে দলের হয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এদের মিলিতাও। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল পান যাকে ঘিরে এই ম্যাচ সেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও। এই ম্যাচে ভিনিকে ১০ নম্বর জার্সিতেও দেখা গেছে। যিনি বর্তমানে ফিফার বর্ণবাদীবিরোধী কমিটির প্রধানও বটে।
তবে ব্রাজিল যখন মাঠে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ম্যাচ খেলছিল, তখন মাঠেই বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন ভিনিসিয়ুসের বন্ধু এবং উপদেষ্টা ফিলিপে সিলভা। জানা গেছে, সিলভা যখন মাঠে প্রবেশ করছিলেন, তখন তাঁর উদ্দেশে এক নিরাপত্তাকর্মী পকেট থেকে কলা বের করে বলেন, হাত ওপরে তোলো, তোমার জন্য এটাই আমার পিস্তল।
এই ঘটনার প্রতিবাদে টুইটারে ভিনি লিখেছেন, ‘আমি যখন ঐতিহাসিক কালো জার্সিতে খেলছিলাম এবং আবেগে ভাসছিলাম, তখন আমার বন্ধুকে অপমান করা হলো এবং তাকে নিয়ে তামাশা করা হলো। এমন আচরণ দুঃখজনক। ব্যাকস্টেজ জঘন্য ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই, নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ কোথায়?’