ব্রাজিলের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নির্বাচনে সমর্থন নেইমারের
ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা। নির্বাচনপূর্ব একাধিক জরিপের ফলাফল বলছে, বলসোনারোর চেয়ে এগিয়ে আছেন লুলা।
তবে জরিপে উঠে আসা জনমতের উল্টো পথে আছেন নেইমার। ব্রাজিল ফুটবলের এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার সমর্থন দিয়েছেন বলসোনারোকে। রোববারের ভোটাভুটিতে বলসোনারোর জন্য ভোট চেয়েছেন তিনি।
৩০ বছর বয়সী ব্রাজিল ফরোয়ার্ড বর্তমানে ফ্রান্সে। সেখান থেকে বলসোনারোর প্রতি সমর্থনে একটি টিকটক ভিডিও তৈরি করেছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, বলসোনারোর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার হওয়া গানে ঠোট মেলাচ্ছেন নেইমার।
ব্রাজিলিয়ান ঢঙে নাচের তালে গাওয়া গানটির কথা এ রকম—‘ভোট, ভোট, নিশ্চিত করতে ২২ চাপুন, এটিই বোলসোনারোর নম্বর’। ২২ হলো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে বলসোনারোর প্রার্থিতার নম্বর।
নেইমারের টিকটক ভিডিওটি কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার দেন বলসোনারো। এর আগে গত বুধবার সাও পাওলোতে নেইমারের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক প্রতিষ্ঠান নেইমার ইনস্টিটিউটে গিয়েছিলেন বলসোনারো।
ওই সময় প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন নেইমার। ওই ভিডিওতে বলসোনারো ও তাঁর দলের সমর্থকেরা বিপুল পরিমাণে শেয়ার করেন।
২০১৯ সাল থেকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আছেন বলসোনারো। ২০২০ সালে কোভিড–১৯ প্রাদুর্ভাবের পর তাঁর বিভিন্ন মন্তব্য ও কাণ্ড ব্রাজিলের ভেতরে এবং বাইরে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।
করোনাকে প্রথমে সাধারণ সর্দি–কাশি বলে অভিহিত করেন তিনি। এরপর বাজারে টিকা আসার পর মন্তব্য করেন, টিকা নিলে নারীর দাড়ি ও পুরুষের নারীকণ্ঠ হতে পারে। শুধু করোনা নিয়ে নয়, বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, প্রকৃতি–পরিবেশের ক্ষতি এবং পারিবারিকভাবে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে।
গত বছর মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অভিযোগ করে, শতাধিক সমালোচককে তাঁর অ্যাকাউন্টে গিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন বলসোনারো।
এ ছাড়া আমাজন ধ্বংসে কথিত ভূমিকার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করে অস্ট্রিয়ার পরিবেশবাদী সংগঠন অলরাইজ।
এ ছাড়া ২০২০ সালে বলসোনারোর বড় ছেলে ফ্লাভিও বলসোনারোর (৩৯) বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার, তহবিলের অপব্যবহার ও একটি অপরাধ সংস্থা পরিচালনার অভিযোগে মামলাও হয়। আর সংবাদমাধ্যমকে প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরার কাজটিও করেন প্রায়ই।
সমালোচকদের চোখে ‘গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের ট্রাম্প’ হিসেবে পরিচিত বলসোনারো এখন আবারও ক্ষমতায় আসতে পাচ্ছেন নেইমারের সমর্থন।