সালাহউদ্দিন পদত্যাগ করবেন না, আবারও নির্বাচনে দাঁড়াবেন
নীরবতা ভাঙলেন কাজী সালাহউদ্দিন। পদত্যাগের দাবি উড়িয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি পদে পঞ্চম মেয়াদে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী ২৬ অক্টোবর।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ফুটবল–সমর্থকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ সালাহউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি তোলে। সংগঠনটি দুই দফায় বাফুফের সামনে গিয়ে বিক্ষোভও করেছে। রোববার সংগঠনটি সালাহউদ্দিনকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেয়।
তবে সেই আলটিমেটামকে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না ২০০৮ থেকে বাফুফের সভাপতি পদে থাকা সালাহউদ্দিন। প্রথম আলোকে তিনি বলেছেন, ‘আমি পদত্যাগ করব না। নির্বাচন করব। নির্বাচন করা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেটা থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন কীভাবে?’
কাজী সালাহউদ্দিন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘হ্যাঁ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বললে আমি ব্যাপারটা ভেবে দেখতাম। কিন্তু কোথা থেকে কিছু ছেলেপেলে আমাকে হুমকি দেবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওরা (বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস) বলেছে, আমাকে যেখানে পাবে, সেখানেই নাকি মারবে। এটা তো ওরা বলতে পারে না।’
ফুটবল আলট্রাসের ফুটবলে অবদান কী, এ প্রশ্ন তুলেছেন কাজী সালাহউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘ওরা কারা? ফুটবলে ওদের কী অবদান আছে? ফুটবলের জন্য ওরা কী করেছে। ওরা বলতে পারে নির্বাচন দেন। আমি তো নির্বাচন দিয়ে দিয়েছি। ৩ অক্টোবর আমার কমিটির মেয়াদ শেষ। আমি ১৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বোর্ড সেটি নিয়ে গেছে ২৬ অক্টাবর। সেই নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। এটা কী ধরনের কথা! কোন দেশে এসে পড়লাম আমরা!’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি তো অন্যায় কিছু করিনি, কেন সরে যাব। সরে যাওয়ার পথ তো নির্বাচন। নির্বাচনে হারলে আমি চলে যাব। সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করে কেন এসব হুমকি দেওয়া হচ্ছে? এতে আমি ভীত নই। প্রয়োজনে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রটেকশন চাইব। নাগরিক হিসেবে সে অধিকার আমার আছে।’
বাফুফের নেতৃত্ব নিয়ে অগণতান্ত্রিক কিছু করার সুযোগ নেই। করলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হবে জানিয়ে বাফুফের সভাপতি বলেন, ‘এএফসি থেকে আমাকে বলেছে, আমার কোনো সহায়তা লাগবে কি না। আমি বলেছি, কোনো কিছু দরকার নেই। সব ঠিক আছে। আমি তো দেশে এসব হুমকির কথা বলে দেশকে নিষেধাজ্ঞায় ফেলতে পারি না।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল কাজী সালাউদ্দিনের। সেটা মেনে নিয়েই তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, গত সরকারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমি কখনো মন্ত্রী, এমপি হতে চেয়েছি? চাইনি। আমার কাছে ঢাকার মেয়র হওয়ার অফার ছিল। কিন্তু আমি হইনি। আমি ফুটবল নিয়েই থাকতে চেয়েছি আর সেটা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে। আমি প্রথমবার যখন নির্বাচন করি ২০০৮ সালে, তখন তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করেছি। বাদল, সালাম, নাবিলরা তো আমার প্যানেলে ছিল না। এভাবে প্রতিবারই আমি ভোটে জিতেছি।’
১৫ বছর ধরে কাজী সালাহউদ্দিন সাফেরও সভাপতি, সেটাও নির্বাচিত। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ওরা বলছে, আমি এখন পদত্যাগ না করলে ঘোষণা দিতে হবে, যাতে নির্বাচন না করি। এটা তো জোর করা। নির্বাচন করব না, এই প্রতিশ্রুতি জোর করে আপনি আদায় করতে পারেন না।’