সাবিনা-সানজিদার ক্যারিয়ারে এমন হয়নি আগে
‘সাবিনা আপুর সঙ্গে তো আমার প্রায় প্রতিদিনই কথা হয়…’
ভারতের নারী ফুটবল লিগে এই প্রথমবার খেলতে গেছেন সানজিদা আক্তার। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের উইঙ্গার খেলছেন কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। অন্যদিকে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ভারতের লিগে খেলছেন এ নিয়ে দ্বিতীয়বার, আছেন বেঙ্গালুরুর ক্লাব কিকস্টার্টে। দেশের ফুটবলের দুই সতীর্থ এখন ভারতের লিগে গিয়ে মাঠে একে অপরের প্রতিপক্ষ। আজ কলকাতায় ইন্ডিয়ান উইমেনস লিগের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে সাবিনার কিকস্টার্ট ও সানজিদার ইস্টবেঙ্গল।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলা, বাফুফে ভবনের ক্যাম্পে সময় কাটানো, একসঙ্গে বিদেশ সফর—সানজিদার সঙ্গে সাবিনার সম্পর্কটা নেহাতই সতীর্থের নয়, ছোট বোন-বড় বোনের। দুজন একই সময়ে ভারতের লিগে খেলবেন, হোক না দুজন দুই দলে, তাঁদের মধ্যে কথা হবে না, এমনটা কীভাবে হয়! সানজিদা সেটিই বললেন, ‘ফুরসত পেলেই হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা আদান-প্রদান হয় তাঁর সানজিদার সঙ্গে, ভিডিও কল তো হয়ই।’
সেই সানজিদারই আজ ‘কেমন যেন’ লাগছে! অন্য রকম একটা অনুভূতি। এমনটা তো আর কখনোই হয়নি বলতে গেলে। জাতীয় দলের সতীর্থ, দেশের নারী ফুটবল লিগেও ছিলেন ক্লাব বসুন্ধরা কিংসে সতীর্থ। সেই সানজিদাই আজ মাঠের লড়াইয়ে নামবেন সাবিনার বিপক্ষে। বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচ।
এই প্রথম সানজিদা আর সাবিনা মাঠে নেমে বুটে-বুটে টক্কর নেবেন। একজন অন্যজনের পা থেকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। হয়তো একবার–দুবার ফাউলও হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারটিই সানজিদার কাছে ‘কেমন যেন’ লাগছে, ‘সাবিনা আপুর বিপক্ষে এর আগে আমি কখনোই মাঠে খেলিনি। সেদিক দিয়ে ইস্টবেঙ্গল-কিকস্টার্ট ম্যাচে আমার ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা হবে। এমন অভিজ্ঞতা সাবিনা আপুরও হবে, এটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। তবে আমরা দুজনই পেশাদার ফুটবলার। যেকোনো মূল্যেই দলের জয় চাইব। খেলা শেষে আবার আগের মতো। এটাই ফুটবলারদের জীবন।’
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সময়টা দারুণ কাটছে বলেই জানালেন সানজিদা। তবে একটা দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। লিগে ইস্টবেঙ্গলের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। সাত দলের লিগে ৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ৪ পয়েন্ট পেয়েছে তারা।
সানজিদা আগের ম্যাচেই প্রথম খেলেছেন ওডিশা এফসির বিপক্ষে। সে ম্যাচে ১০ নম্বর জার্সি নিয়ে খেলেছেন দারুণ। গোলও পেয়ে যেতে পারতেন ভাগ্য সহায় থাকলে। সানজিদার মধ্যে তাই পরের ম্যাচগুলোয় ভালো করার, দলকে জেতানোর তাড়নাই কাজ করছে, ‘আমাদের ম্যাচ জিততে হবে। লিগে ইস্টবেঙ্গল মাত্র একটা ম্যাচ জিতেছে, আর সেদিন ওডিশার সঙ্গে ড্র করল। এভাবে তো হবে না। আমাদের লড়াই করতে হবে। দেখা যাক কী হয়!’
সানজিদার সঙ্গে ম্যাচ নিয়ে কাল কথা বলারই সুযোগ পাননি সাবিনা। প্রথম আলোর বার্তায় হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর বিনয়ী জবাব, ‘কাল (আজ) ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে ম্যাচ। মাত্র অনুশীলন থেকে এলাম। টিম মিটিংয়ে যাব। এরপর আমরা দলের খেলোয়াড়েরা আলাদা করে বসব।’
কিকস্টার্টের ‘নাম্বার টেন’ একটা খারাপ খবরও দিলেন, ‘পারিবারিক সমস্যার মধ্যে পড়েছি। এ জন্য দেশে ফিরতে হচ্ছে।’
নিজের মুখে না বললেও জানা গেছে সাবিনার মায়ের অসুস্থতার কথা। সে কারণেই তিনি স্বল্প সময়ের জন্য দেশে ফিরছেন। ১০ ফেব্রুয়ারি কিকস্টার্টের ম্যাচ আছে ওডিশার বিপক্ষে। সে ম্যাচের আগেই ভারতে ফিরে যাবেন তিনি।
৭ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগে সাবিনার কিকস্টার্টের অবস্থান ৩-এ। শীর্ষ দুই অবস্থানে আছে ওডিশা এফসি ও গোকুলাম কেরালা।