দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের পর টাইব্রেকারে জয় মেসির মায়ামির
ইন্টার মায়ামি ৪ (৫): ৪ (৩) ডালাস এফসি
ম্যাচ শেষ হতে তখন ৩০ মিনিটও বাকি নেই, ইন্টার মায়ামি পিছিয়ে ৩-১ গোলে। এমন সময়ও একটি দল যার ভরসায় নির্ভার থাকতে পারে, মায়ামিতে সেই লিওনেল মেসি ছিলেন। দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ডালাস এফসির বিপক্ষে ইন্টার মায়ামিকে উদ্ধার করলেন সেই মেসিই।
৬৫ মিনিটে মায়ামির বেঞ্জামিন ক্রিমাশ্চি ব্যবধান ৩-২ করেন। গোলটি হওয়ার পথে বেঞ্জামিনকে শেষ পাসটা দেন জর্দি আলবা। আর বক্সের বাইরে থেকে পড়ে যেতে যেতে আলবাকে ফাঁকায় বলটা বাড়িয়েছিলেন মেসিই।
এরপর আবার ডালাস এফসি ৪-২ গোলে এগিয়ে যায়। দলকে সমতায় ফেরাতে পরের দুটি গোলেও ‘অবদান’ রাখেন মেসি। ব্যবধান ৪-৩ করা গোলটির উৎস তাঁর ফ্রি-কিক। এরপর ৮৫ মিনিটে আরেকটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিক বলে জালে জড়ান সরাসরিই।
মেসির জোড়া গোলের সুবাদে টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে আর হতাশ হতে হয়নি মায়ামিকে। ডালাসকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে লিগস কাপের শেষ আটে উঠেছে ইন্টার মায়ামি।
ডালাসের টয়োটা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ছিল ইন্টার মায়ামির জার্সিতে মেসির প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচ। আগের ৩ ম্যাচে ৫ গোল করা আর্জেন্টাইন তারকা প্রতিপক্ষের মাঠে গোল পেয়েছেন শুরুতেই। ম্যাচের ৬ মিনিটেই বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শটে বল জালে জড়ান মেসি। মায়ামিতে এটিই তাঁর দ্রুততম গোল।
তবে শুরুর এই লিড ধরে রাখতে পারেনি মায়ামি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ৮ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল দিয়ে ফেলে ডালাস। এর মধ্যে ৩৭ মিনিটে গোল করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ফাকুন্দো কুইগনোন, ৪৫তম মিনিটে তানজানিয়ার বার্নার্ড কামুনগো।
প্রথমার্ধের শেষের দিকের এই ছন্দ দ্বিতীয়ার্ধেও ধরে রাখে ডালাস এফসি। এ সময় মায়ামি রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় দলটি। যে ধারায় ৬৩ মিনিটে ডালাস পেয়ে যায় তৃতীয় গোলও। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে পা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান ২১ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন উইঙ্গার আলান ভালেসকো।
ম্যাচের ওই মুহূর্তের ডালাস যে গতিতে ছুটছিল, তাতে মায়ামির হারই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। তবে বদলি নামা বেঞ্জামিন ক্রিমাশ্চি দ্রুতই মায়ামিকে লড়াইয়ে ফেরান। মেসির বাড়ানো বল ধরে আলবা গোলমুখে দিলে কাছ থেকে নেওয়া শটে জালে জড়িয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।
এর পাঁচ মিনিট পরই ম্যাচে আবার নাটকীয়তা। এবার নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন মায়ামির মিডফিল্ডার রবার্ট টেলর। তবে আত্মঘাতী থেকে পাওয়া গোলের সুবিধাটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ডালাস। ৮০ মিনিটে মায়ামিকে আত্মঘাতী গোল ‘উপহার’ দেন ডালাসের মার্কো ফারফান। এই গোলে বলা যায় মেসিরই ‘অ্যাসিস্ট’ ছিল। তাঁর নেওয়া মাপা ফ্রি কিকেই হেডে বল জালে জড়ান ফারফান। ম্যাচের স্কোরলাইন তখন ৪-৩।
এরপরই মেসি-ম্যাজিক! সমতা আনতে বাকি যে গোলটি দরকার ছিল, ৮৫ মিনিটে সেটিই এনে দেন মেসি। বক্সের সামান্য বাইরে পাওয়া ফ্রি-কিক কাছের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান আর্জেন্টাইন তারকা। দেয়াল হয়ে দাঁড়ানো ডালাস খেলোয়াড়েরা লাফিয়ে উঠলেও নাগাল পাননি, বল যায় তাঁদের মাথার ওপর দিয়ে। আবার বল আসছে বুঝে সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে নাগাল পাননি দলটির গোলরক্ষকও। দারুণ ফ্রি-কিকে মায়ামিকে ৪-৪ সমতায় নিয়ে আসেন মেসি।
টাইব্রেকারে প্রথম শটটি নেন মেসি। অনায়াস এক শটে গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে বল পাঠান জালে। মায়ামি গোল পায় পরের ৪ শটেও। ডালাস প্রথম ৪ শটের একটি থেকে গোল করতে না পারায় পঞ্চম শটের আর দরকার হয়নি।
শেষ আটে মেসিদের প্রতিপক্ষ হবে হিউস্টন ডিনামো–শার্লট এফসি ম্যাচের জয়ী দল। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১১ আগস্ট।