কোপায় মারপিট: বিয়েলসা ভেবেছিলেন নুনিয়েজরা সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন
মার্সেলো বিয়েলসা ফুটবলপাগল মানুষ। তাঁর ধ্যানজ্ঞানে ফুটবল। মাঠের গ্যালারির এক কোণে জটলা দেখেছেন উরুগুয়ে কোচ বিয়েলসা। সেখানে উরুগুয়ের খেলোয়াড়দেরও দেখেছেন। আর্জেন্টাইন এই কোচ খুব সরল মনে ভেবেছিলেন, তাঁর দলের খেলোয়াড়েরা বুঝি সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে গ্যালারিতে গেছেন। বিয়েলসার এই ভুল ভাঙতেও সময় লাগেনি।
নর্থ ক্যারোলাইনার ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় সকালে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে কলম্বিয়া। ম্যাচ শেষে অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্য দেখা গেছে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে।
কলম্বিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন উরুগুয়ের খেলোয়াড়েরা। দলটির ডিফেন্ডার হোসে মারিয়া হিমিনেজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গ্যালারির ওই অংশে উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। তাঁদের কারও কারও সঙ্গে শিশু বাচ্চাও ছিল। কলম্বিয়ার সমর্থকেরা তাঁদের প্রতি আক্রমণাত্মক আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেন হিমিনেজ। আর এ ঘটনা থেকেই মারামারির সূত্রপাত। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
হারের পর উরুগুয়ে কোচ মার্সেলো বিয়েলসা জানিয়েছেন, ম্যাচ শেষে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত তিনি দেখেননি। বিয়েলসা এ নিয়ে বলেন, ‘মাঝমাঠে কিছু কথা–কাটাকাটি হয়েছে, আর যখন এটা ঘটতে দেখেছি, তখন ড্রেসিংরুমে ছিলাম। ভেবেছিলাম, সমর্থন দেওয়ার জন্য তারা (উরুগুয়ের খেলোয়াড়েরা) ভক্তদের ধন্যবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু এরপর শুনলাম, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানে সমস্যা হয়েছে।’
উরুগুয়ের খেলোয়াড় ও কলম্বিয়ার সমর্থকদের মধ্যে মারামারির দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার দারউইন নুনিয়েজ মারামারিতে বেশ উৎসাহী ছিলেন। গ্যালারিতে ঢুকে কলম্বিয়ার সমর্থকদের তাক করে একের পর এক ঘুষি মেরেছেন। যদিও বেশির ভাগই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। চোটের কারণে সেমিফাইনালে খেলতে না পারা উরুগুয়ে সেন্টারব্যাক রোনাল্ড আরাউহোও এ সময় নুনিয়েজের পাশে ছিলেন এবং ঘুষি মেরেছেন।
কোপা আমেরিকার আয়োজক দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল এ ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ফুটবলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এমন যেকোনো সহিংস আচরণের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে কনমেবল। ফুটবল ইতিবাচক মূল্যবোধ নিয়ে সবাইকে একসূত্রে গাঁথবে, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করি। মাঠ ও মাঠের বাইরে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার জায়গা নেই। (কোপার) বাকি দিনগুলোতে সবাই যে যার জাতীয় দলকে সমর্থন দিয়ে অবিস্মরণীয় উৎসবের অংশ হবে, আমরা সেই নিমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’