ব্রাজিলের ফুটবল কিংবদন্তি মারিও জাগালো হাসপাতালে
খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের তালিকাটা খুব ছোট। সবার আগে এই কীর্তি গড়া ব্যক্তিটি মারিও জাগালো।
ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ও দিদিয়ের দেশম এরপর তাঁকে ধরে ফেলেন। জাগালো তবু একটি জায়গায় অনন্য—খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন একাধিকবার!
ব্রাজিলের এই ‘আইকনিক’ ফুটবল ব্যক্তিত্বের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কাল রিও ডি জেনিরোর হাসপাতাল খবরটি নিশ্চিত করেছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জাগালোকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
তবে ৯০ বছর বয়সী জাগালোর শারীরিক অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছে রিও ডি জেনিরোর বারা ডি’অর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ‘যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছেন।’ এর আগে কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছিলেন জাগালো। পরে পরীক্ষায় তিনি নেগেটিভ হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আগামী মাসে ৯১ বছরে পা রাখতে যাওয়া জাগালো ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ‘বুড়ো নেকড়ে’ নামে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বয়সেও তিনি বেশ সরব। প্রায়ই নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের বিভিন্ন ছবি ও স্যুভেনির ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীসংখ্যা এক লাখের বেশি। মাত্র চার দিন আগেই তিনি সেলুনে চুল-দাঁড়ি কাটানোর একটি ছবি পোস্ট করেন।
ইনসাইড ফরোয়ার্ড ও বাঁ প্রান্তের উইঙ্গার হিসেবে ব্রাজিল দলে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত খেলেন জাগালো। পেলের সঙ্গে জিতেছেন ১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপ। এরপর ১৯৭০ সালে কোচ হিসেবে জেতেন বিশ্বকাপ।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে সহকারী কোচ হিসেবেও জিতে নেন বিশ্বকাপ। চার বছর পর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে ফাইনালে উঠেও শিরোপার দেখা পাননি। ২০০৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের টেকনিক্যাল সহকারীর ভূমিকায় ছিলেন জাগালো।
জাগালো ছাড়া খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন শুধু জার্মান কিংবদন্তি বেকেনবাওয়ার (১৯৭৪ ও ১৯৯০) ও ফ্রান্সের বর্তমান কোচ দেশম (১৯৯৮ ও ২০১৮)। বলার অপেক্ষা রাখে না, ১৯৭০ বিশ্বকাপই জাগালোর কোচিং ক্যারিয়ারে সেরা মুহূর্ত।
তোস্তাও, পেলে, জর্জিনহো, রিভেলিনো, গারসনদের নিয়ে সে বিশ্বকাপে চোখধাঁধানো ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পূজারি জাগালোর দ্রুত সুস্থতা কামনা করে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলে, ‘আমার বন্ধু জাগালো, জানি তুমি কঠিন সময় পার করছ। কিন্তু এটা জেনে রাখো, তোমার দ্রুত সুস্থতার জন্য আমি প্রার্থনা করছি।’
৮১ বছর বয়সী পেলেও তিন বছর ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। মলাশয়ের ক্যানসারের জন্য অস্ত্রোপচার করিয়েছেন এবং কিডনির পাথরও অপসারণ করাতে হয় তিনবার বিশ্বকাপজয়ী এই কিংবদন্তিকে। এ ছাড়া কোমরের সমস্যায়ও ভুগছেন পেলে।