‘সুন্দর ফুটবল’ খেলতে চায় না আবাহনী
ক্লাব ইগলসের বিপক্ষে ‘সুন্দর ফুটবল’ খেলতে চায় না ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এএফসি কাপের প্রাথমিক রাউন্ডে ১৬ আগস্ট সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মালদ্বীপের ক্লাবের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের রানার্সআপরা। এই ঘোর বর্ষায় সিলেটে যে কাদা প্যাচপেচে মাঠে খেলতে হবে, সেটি খুব ভালো করেই জানেন আবাহনীর কোচ মারিও লেমোস। তিনি মনে করেন, এই ম্যাচে সুন্দর ফুটবল যে দল খেলবে, তাদেরই বিপদ। বৃষ্টিভেজা মাঠে মারকাটারি ফুটবলই খেলতে চান নীল-হলুদ শিবিরের পর্তুগিজ কোচ।
কেন ‘সুন্দর ফুটবলে’ ভয় লেমোসের। সেটির ব্যাখ্যা দিলেন গতকাল ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে দাঁড়িয়ে, ‘আমরা ম্যাচটা জিততে চাই। তবে বুঝতে পারছি, খেলাটা বৃষ্টিভেজা মাঠেই খেলতে হবে। এই মাঠে সুন্দর ফুটবল যে খেলতে চাইবে, হারবে তারাই। বৃষ্টিভেজা মাঠে ভালো ফুটবল খেলা সম্ভব নয়। এমন মাঠে বল কাদাপানিতে আটকে যাবে। খেলোয়াড়েরা শরীরের ভারসাম্য হারাবে। তাই এখানে কার্যকর ফুটবল খেলতে হবে। সুন্দর ফুটবল বলতে যা বোঝায়, তা অবশ্যই নয়।’
শুক্রবার সকালে ঢাকায় নেমে সেদিন বিকেলেই সিলেটে পৌঁছে গেছে মালদ্বীপের ক্লাবটি। ২০২১ সালে এএফসি কাপের প্রাথমিক রাউন্ডে ভুটানের থিম্পু এফসিকে হারিয়ে প্লে–অফে জায়গা করে নিয়েছিল ক্লাবটি। পরে অবশ্য ভারতের বেঙ্গালুরু এফসির কাছে ১-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার দ্বিতীয়বারের মতো ক্লাব ইগলস এএফসি কাপে খেলছে। শনিবার বিকেলে সিলেট বিকেএসপির সিনথেটিক টার্ফে অনুশীলন করেছে তারা। আবাহনী আজ সিলেট পৌঁছাবে।
গতকাল ঢাকার শেষ অনুশীলন সেশনটিও ছিল বৃষ্টিভেজা, কাদাপানিতে মাখামাখি। এতে কি আবাহনীর একটু সুবিধাই হলো? লেমোসের কথা, ‘মালদ্বীপের দলটা ভালো। কিন্তু তারা বৃষ্টিভেজা মাঠে কতটা অভ্যস্ত, সেটা একটা ব্যাপার। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই বাংলাদেশি ফুটবলাররা বৃষ্টিভেজা মাঠে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে জানে, এটাতে তারা অভ্যস্ত। আমি মনে করি, সিলেটে এই জায়গা আবাহনী কিছুটা এগিয়ে থাকবে।’
আবাহনীতে বিদেশি ফুটবলার বেশ কয়েকজন। ফলে এএফসির প্রতিযোগিতায় ছয় বিদেশি ফুটবলার একাদশে খেলানোর সুবিধাটা তারা নিতে চাচ্ছে। যদিও কোস্টারিকার দানিয়েল কলিন্দ্রেস চলে যাওয়াও কিছুটা ঝামেলায় পড়েছে তারা। তবে এএফসি কাপে খেলতে দুই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার এসেছেন আবাহনীতে—ব্রুনো মাতোস ও জোনাথন রেইস। ডিফেন্ডার ইউসেফ ও ফরোয়ার্ড এমেকা ওগবাহ ছিলেন, তাঁদের পাশাপাশি শেখ জামাল থেকে গ্রানাডিয়ান ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট, মোহামেডান থেকে উজবেক মিডফিল্ডার মুজাফফরভ ও ফর্টিস থেকে ডেনিলোকে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলা দুজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ওজুকু ডেভিড ও মোস্তফাকে ধারে নেওয়া হয়েছে। এখন একাদশে কোন ৬ বিদেশি খেলাবেন, সেটি নিয়ে তাই যথেষ্ট ভাবতে হচ্ছে কোচ লেমোসকে।
কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট মালদ্বীপের মাজিয়া এফসিতে খেলেছেন। মালদ্বীপ ফুটবল সম্পর্কে ভালো ধারণা তাঁর। এএফসি কাপের ম্যাচটাকে নিজেদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ হিসেবেই দেখছেন কর্নেলিয়াস, ‘যেহেতু একটাই ম্যাচ, তাই এটাই আবাহনীর ফাইনাল। মালদ্বীপের ক্লাব ইগলস তাদের অন্যতম সেরা ক্লাব। তবে আমরাও ছেড়ে কথা বলব না। মালদ্বীপে খেলেছি, তবে বাংলাদেশ আর মালদ্বীপের ঘরোয়া ফুটবল অনেক দিক থেকেই আলাদা।’
আবাহনীর কাছে এই ম্যাচের আরেকটা বড় গুরুত্ব আছে। সেটি বললেন ক্লাব ম্যানেজার ও আবাহনীর সাবেক ফুটবলার সত্যজিৎ দাস রুপু, ‘এটা তো শুধু আবাহনীর একটা ম্যাচ নয়। আমরা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। এটা বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যকার খেলা। পুরো দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে।’
আবাহনী তাই চাইবে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে।