ভিনিকে তিনে রেখে রদ্রি বললেন, ‘খারাপ লাগবে কেন’
ব্যালন ডি’অর তো জিতলেন রদ্রি। কিন্তু তাঁকে যদি ভোটদাতাদের দলেও রাখা হতো, তাহলে ভোট দিতেন কাকে?
বুঝিয়ে বলা যাক। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ১০০ দেশের সাংবাদিকেরা (৯৯ জন, সিরিয়া ভোট দেয়নি) ভোটের মাধ্যমে এবার ছেলেদের ব্যালন ডি’অরজয়ী হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্পেন ও ম্যানচেস্টার সিটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলে কাকে কাকে ভোট দিতেন? স্পেনের ‘রেডিও কোপ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রশ্নের উত্তরে রদ্রি বলেছেন, রদ্রি, দানি কারভাহাল ও তারপর ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
অর্থাৎ, ভোটের মাধ্যমে ব্যালন ডি’অরজয়ী বাছাইয়ে রদ্রি নিজেকেই বেছে নিতেন। এরপর দ্বিতীয় রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্ডার এবং জাতীয় দলে তাঁর সতীর্থ ও বন্ধু কারভাহাল। এবার ব্যালন ডি’অর ভোটে দ্বিতীয় ভিনিসিয়ুসকে তিন নম্বরে রাখতেন রদ্রি।
আমি কারভাহালকে দ্বিতীয় হিসেবে ভোট দিতাম। এরপর ভিনিসিয়ুস।ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলে নিজেকে শীর্ষে রেখে যা করতেন রদ্রি
ব্যালন ডি’অর পুরস্কার নিয়ে এবার বেশ বিতর্কই হলো। গত ২৮ অক্টোবর প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলেতে পুরস্কার দেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞ–সমর্থকদের চোখে ফেবারিট ছিলেন ভিনিসিয়ুস। রিয়ালের হয়ে গত মৌসুমে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। রদ্রি জিতেছেন সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ ও স্পেনের হয়ে ইউরো। সেরা খেলোয়াড়ও হন ইউরোর, ওদিকে চ্যাম্পিয়নস লিগে সেরা হয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস।
কিন্তু পুরস্কারের দিন সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে রিয়ালও টের পেয়ে যায়, এবারের বাৎসরিক সেরার ট্রফিটা তাদের খেলোয়াড়ের হাতে উঠছে না। প্রতিবাদ জানিয়ে রিয়াল আর ব্যালন ডি’অরের অনুষ্ঠানে যায়নি, ভিনিকেও দেখা যায়নি। পরে পুরস্কারটির আয়োজক ‘ফ্রান্স ফুটবল’ জানায়, ভিনিকে ৪১ পয়েন্টে হারিয়ে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন রদ্রি। ১০০টি দেশের মধ্যে ৯৯টি দেশের সাংবাদিকেরা নিজেদের শীর্ষ ১০ খেলোয়াড়ের তালিকা তৈরি করে সবাইকে ভোট দিয়েছেন। তালিকায় সবার ওপরে থাকা খেলোয়াড় পেয়েছেন ১৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় ১২ পয়েন্ট ও ১০ পয়েন্ট পেয়েছেন তৃতীয় খেলোয়াড়। ক্রম অনুযায়ী চতুর্থ থেকে দশম স্থানের খেলোয়াড়েরা পেয়েছেন যথাক্রমে ৮, ৭, ৫, ৪, ৩, ২ ও ১ পয়েন্ট।
সে যাহোক, নিজেকে সবার ওপরে রেখে ভোট দেওয়া নিয়ে রদ্রি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি কারভাহালকে দ্বিতীয় হিসেবে ভোট দিতাম। এরপর ভিনিসিয়ুস।’
গত সেপ্টেম্বরে এসিএল চোটে আগেই মৌসুমের শেষ দেখে ফেলা রদ্রি মনে করেন, যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবেই তিনি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। তাঁর যুক্তি, ‘আমি এই মৌসুমের সবচেয়ে ধারাবাহিক খেলোয়াড় ছিলাম। হয়তো নিজের সেরাটায় উঠতে পারিনি। তবে আমার মনে হয় গত মৌসুমে আমি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত তৈরি করেছি, ধারাবাহিকতার বিচারেও তা–ই। কিন্তু এটার যোগ্য কি না, তা নিয়ে বিতর্ক করার আমি কে!’
সে এখনো তরুণ। অনেক বছর ধরেই সে এমন কার্যকর থাকবে। আমি তো বলব, সে–ই একমাত্র খেলোয়াড় যে মেসি ও রোনালদোর কাছাকাছি।হলান্ডকে নিয়ে রদ্রি
ভিনিসিয়ুস ও রিয়াল ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেও এই দুই পক্ষের সঙ্গে তাঁর কোনো সমস্যা নেই বলেও জানিয়েছেন রদ্রি, ‘(ভিনির অনুপস্থিতিতে) আমার কেন খারাপ লাগবে? এটা ছিল পরিবারের সঙ্গে উদ্যাপনের জন্য আমার মুহূর্ত। সেখানে কারা ছিল না, কারা আসতে চায়নি—এসব বিষয় আমার ভাবনায় সবার শেষে আসবে।’ তবে ভিনিকে সম্মান করার কথা জানিয়ে রদ্রি বলেছেন, ‘লোকজনের ভোট ভালো লাগে, কারণ এটা কারও মতামত। আমি ভিনিসিয়ুস ও রিয়াল মাদ্রিদকে অনেক সম্মান করি। যারা আমাকে চেনে, তারা এটা জানে।’
সাক্ষাৎকারে নিজের ক্লাব–সতীর্থ আর্লিং হলান্ডকে নিয়েও কথা বলেছেন ২৮ বছর বয়সী এই তারকা। তাঁর মতে, লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছাকাছি কেউ থেকে থাকলে সেটি নরওয়ে তারকা হলান্ড, ‘সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকরী খেলোয়াড় হলান্ড। সে এখনো তরুণ। অনেক বছর ধরেই সে এমন কার্যকর থাকবে। আমি তো বলব, সে–ই একমাত্র খেলোয়াড় যে মেসি ও রোনালদোর কাছাকাছি।’