৪ বছরের নিষেধাজ্ঞা ১৮ মাসে নেমে আসায় ‘দুঃস্বপ্ন’ শেষ হলো পগবার
নিষিদ্ধঘোষিত মাদক গ্রহণের দায়ে গত ফেব্রুয়ারিতে চার বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন ফ্রান্সের তারকা ফুটবলার পল পগবা। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্লাব, জাতীয় দলসহ সব ধরনের ফুটবল থেকে ছিটকে যান পগবা। এই শাস্তির পর পগবার ফুটবল ক্যারিয়ারও শেষ ধরে নিয়েছিলেন অনেকে।
তবে শাস্তি ঘোষণার ৯ মাসের মাথায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার মতো খবর পেয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে পগবার নিষেধাজ্ঞা ৪ বছর থেকে নেমে এসেছে ১৮ মাসে। সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ৩১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার আগামী বছর জানুয়ারি থেকে অনুশীলন করতে পারবেন এবং প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফিরতে পারবেন ১১ মার্চ থেকে, তাঁর ৩২তম জন্মদিনের চার দিন আগে।
পগবাকে ঘিরে ডোপ–কাণ্ডের শুরু হয় গত বছরের ২০ আগস্ট সিরি ‘আ’তে জুভেন্টাস–উদিনেস ম্যাচের পর। সেই ম্যাচের পর ডোপ পরীক্ষায় পগবার শরীরে টোস্টোস্টেরনের (পুরুষদের প্রধান স্টেরয়েড হরমোন, যা শুক্রাশয়ে উৎপন্ন হয়) মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। টেস্টোস্টেরন মাঠে খেলোয়াড়দের শক্তিবর্ধনে সাহায্য করে।
এই পরীক্ষার পর সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাময়িকভাবে পগবাকে নিষিদ্ধ করে ইতালির ন্যাশনাল অ্যান্টি–ডোপিং ট্রাইবুন্যাল (নাডো)। এরপর ৬ অক্টোবর নমুনার ‘কাউন্টার-অ্যানালাইসিসে’ও একই ফল আসে। নিষিদ্ধ ড্রাগ নেওয়ার ঘটনায় সাধারণত চার বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
পগবা দোষ স্বীকার করলে শাস্তির পরিমাণ কমার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সেটি না হওয়ায় কৌঁসুলিরা তাঁর সর্বোচ্চ চার বছরের নিষেধাজ্ঞার দাবি জানান। এই ধারাবাহিকতায় পরে ৪ বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েন পগবা। তবে আগে থেকে শাস্তি ভোগ করতে থাকায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকেই পগবার নিষেধাজ্ঞার সময় বিবেচনা করা হয়।
শাস্তি কমার খবরে বিবৃতি দিয়ে পগবা বলেছেন, ‘অবশেষ দুঃস্বপ্ন শেষ হলো। আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন থেকে আবার নিজের স্বপ্নের পথে চলা শুরু করতে পারব।’ বিবৃতিতে পগবা আরও বলেছেন, ‘সব সময় বলে এসেছি, আমি জ্ঞানত অ্যান্টি–ডোপিং এজেন্সির নিয়ম ভঙ্গ করিনি। আমি যখন ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করি, সেটি পুরুষ অ্যাথলেটদের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে না বা বাড়ায় না।’
খেলার প্রতি সব সময় সৎ থাকার কথা বললেও এ ঘটনায় দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেছে পগবা। তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা আমার জীবনের অত্যন্ত কষ্টদায়ক সময় ছিল। কারণ, আমি যে কাজের জন্য এত পরিশ্রম করেছি, সেটি থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
২০১৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা পগবা ২০২২ সাল থেকে খেলছিলেন জুভেন্টাসের হয়ে। ক্লাবটির হয়ে খেলার জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি ছিল। তবে চার বছরের নিষেধাজ্ঞার পর তাঁর আবার ফুটবলে ফিরে আসার সম্ভাবনাও একরকম শেষ হয়ে যায়।
বয়স ও ছন্দ ধরে রাখা নিয়ে সংশয় ছিল এ আশঙ্কার বড় কারণ। চোটের কারণে ২০২২ বিশ্বকাপে খেলতে না পারা পগবা নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর তাঁর ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শাস্তি কমানোর ঘোষণা আসার পর এখন নতুন করে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন এই মিডফিল্ডার।