সালাম মুর্শেদীর দাবি, বাফুফেতে কোনো দুর্নীতি হয়নি
বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ও অর্থ কমিটির প্রধান সালাম মুর্শেদী খুব স্পষ্ট ভাষায় বললেন, ‘কোনো দুর্নীতি হয়নি।’ তাঁর এই বক্তব্য আজ বিকেলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাহী কমিটির জরুরি সভার পর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে।
মজার ব্যাপার হলো এই একই সংবাদ সম্মেলনে সালাম মুর্শেদীর ‘কোনো দুর্নীতি হয়নি’ বক্তব্যের একটু আগে, তাঁরই পাশে বসে বাফুফে সভাপতি বলেছেন, ফিফা কর্তৃক দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে আর কখনো বাফুফের কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
এ ছাড়া যা ঘটেছে এবং কেন এসব ঘটেছে, সেটি তদন্ত করে দেখতে আজকের সভায় ১০ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বাফুফে। কমিটিতে আছেন বাফুফের চার সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, ইমরুল হাসান, মহিউদ্দিন মহী ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া, বাফুফের সদস্য সত্যজিৎ দাস, ইলিয়াস হোসেন ও জাকির হোসেন চৌধুরী এবং বাফুফের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির তিন সদস্য। এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে কমিটি।
সভায় বাফুফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বর্তমান প্রটোকল ম্যানেজার ইমরান হোসেনকে। সালাম মুর্শেদী জানিয়েছেন, আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নতুন সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিকেল চারটায় শুরু হয়ে জরুরি সভা চলেছে এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়। সভার একমাত্র আলোচ্য বিষয় ছিল সোহাগের নিষেধাজ্ঞা ও ভবিষ্যৎ করণীয়। সভায় বাফুফের বেশির ভাগ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। দুই সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া যোগ দিয়েছেন অনলাইনে।
সংবাদ সম্মেলনে বাফুফের সভাপতি ও সিনিয়র সহসভাপতি এসব তথ্য জানালেও সাংবাদিকদের বেশির ভাগ প্রশ্নেরই সরাসরি উত্তর দেননি তাঁরা অথবা এড়িয়ে গেছেন। দুর্নীতি প্রসঙ্গে সালাম মুর্শেদী উল্টো প্রশ্নকর্তাকে বলেন, ‘কোনো দুর্নীতি হয়নি। আপনার এই শব্দ প্রত্যাহার করুন। ফিফা কোনো দুর্নীতির কথা বলেনি।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাজী সালাউদ্দিনের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত কি না, এমন প্রশ্নে হেসে সালাম মুর্শেদীর উত্তর, ‘অনেক ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বাংলাদেশের একমাত্র ফেডারেশন, যেটা বহির্বিশ্বের তত্ত্বাবধানে নির্বাচিত হয়। এখান থেকে কারও চলে যাওয়া বা ব্যান করার সুযোগ নেই।’ তবে পরমুহূর্তে তিনি আবার বলেছেন, ‘...নিজে যদি আপনি না চলে যান।’
ফিফা তদন্ত করে বাফুফেতে যেসব অনিয়মের সন্ধান পেয়েছে, সেটি চলে আসছিল সেই ২০১৬-১৭ সাল থেকে। এর জন্য মাঝে বাফুফেকে একাধিকবার সতর্ক করেছে ফিফা। সভাপতি হিসেবে তারপরও সতর্ক হননি সালাউদ্দিন, নেননি কোনো ব্যবস্থা। দায় তো তাহলে তাঁর ওপরও আসে। এ ব্যাপারে সালাউদ্দিনের ব্যাখ্যা, আবু নাঈম সোহাগ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, তাঁর অফিস ভুল করেছে—এসবই এখন প্রমাণিত। এখানে সভাপতি হিসেবে তাঁর দায় নেওয়ার কিছু নেই।
ইফতারের ঠিক আগে তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন শেষ করার আগে সালাম মুর্শেদী বলেছেন, ভবিষ্যতে যেন এ রকম ভুল আর না হয়, সে জন্য তাঁরা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবেন।