টানা পাঁচ দিন কেঁদেছিলেন নেইমার, ছাড়তে চেয়েছিলেন ব্রাজিল দল
কাতারে গত ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল–ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ নিশ্চয়ই মনে আছে? অতিরিক্ত সময়ে এগিয়ে গিয়েও গোল হজম করে সমতায় ফিরতে বাধ্য হয় ব্রাজিল। এরপর টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিতে হয় বিশ্বকাপ থেকে। সেই হারে নেইমার এতটাই দুঃখ পেয়েছিলেন যে ছাড়তে চেয়েছিলেন ব্রাজিল জাতীয় দল। ব্রাজিলের খ্যাতিমান সংবাদকর্মী, ইউটিউবার ও স্ট্রিমার কাসিমিরোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেছেন নেইমার।
স্ট্রিমার কাসিমিরোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেইমার জানিয়েছেন, গত বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে হারের পর জাতীয় দল থেকে অবসর নিতে চেয়েছিলেন। নেইমার নিশ্চিত করেছেন, শিগগিরই জাতীয় দল থেকে অবসর নিচ্ছেন না। সাক্ষাৎকারে নেইমারের কথাগুলো প্রকাশ করেছে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো।
পিএসজির এ ব্রাজিলিয়ান তারকা বলেছেন, ‘সত্যি বলতে বিশ্বকাপের পর আমি আর (জাতীয় দল) ফিরতে চাইনি। কিন্তু নতুন করে আবারও ভাবতে হয়েছে। আমি তো সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত, তা-ই না? তাই ওই ভাবনা পুনর্বিবেচনা করে পাল্টাতে হয়েছে। বিশ্বকাপের পর আমি আর কষ্ট পেতে চাইনি। কিন্তু পরিবারকে ভুগতে দেখাটাও কষ্টকর।’
নেইমার জানিয়েছেন, ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে ৪–২ গোলে হারের পর কয়েক দিন খুব বাজে কেটেছে তাঁর। অতিরিক্ত সময়ে তাঁর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু সেখান থেকে সমতায় ফিরতে বাধ্য হয়ে তারপর টাইব্রেকারে হার—এমন হার মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়েছিল নেইমারের, ‘আমি টানা পাঁচ দিন কেঁদেছি। ওভাবে স্বপ্ন চূর্ণ হওয়ায় খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। ০–০ ব্যবধানে থেকে টাইব্রেকারে ম্যাচ হারব এবং কোনো গোল করব না—সেটা মেনে নিতে রাজি আছি; কিন্তু গোল করব, এরপর গোল হজম করে টাইব্রেকারে হারব—সেটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন।’
চোট থেকে সেরে উঠে পিএসজির অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন নেইমার। সাক্ষাৎকারে নেইমার জানিয়েছেন, কাতারে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ওই হারই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত। তখন দলের ভেতরে পরিবেশ কেমন ছিল, তা জানিয়ে নেইমার বলেছেন, ‘এটা (ক্রোয়েশিয়ার কাছে হার) আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত। আমার পাশে একজন কাঁদছিল, অন্যপাশে আরেকজন। গোটা দলের পরিবেশ খুব ভারী হয়ে উঠেছিল। আমি সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আর কখনো যেতে চাই না।’
কাতার বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে অ্যাঙ্কেলের চোটে পড়েছিলেন নেইমার। পায়ে ব্যথা নিয়েই পরের ম্যাচগুলো খেলেছিলেন। বাদ পড়ার পর সতীর্থ মারকিনিওসের সাহায্যের কথাও বলেছেন নেইমার, ‘ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে সপ্তাহ। চোট পেয়েছিলাম। কেউ জানত না, অসুস্থও হয়ে পড়েছিলাম। সারা দিন বিছানায় থেকে চিকিৎসা করিয়েছি। বিছানার বাইরে শুধু পা’টাই থাকত। ফিজিওথেরাপিস্ট সর্বস্ব দিয়ে চিকিৎসা করেছে। তখন মারকিনিওস আমার পাশে ছিল, সে সঙ্গ দিয়েছে।’
পিএসজির ম্যাচে চোট পেয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে আর মাঠে নামেননি নেইমার। গত মার্চে কাতারে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। প্রায় পাঁচ মাসের মতো মাঠের বাইরে আছেন। নেইমারের ক্যারিয়ারে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতি। ২১ জুলাই লে হার্ভের বিপক্ষে প্রাক্–মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে পিএসজি।