১৯৯৯ সালের পর এবারই প্রথম প্রিমিয়ার লিগে খেলছে নটিংহাম ফরেস্ট। ইংলিশ ফুটবলের শীর্ষ স্তরে খেলতে এসে পুরো দলকেই পাল্টে ফেলেছে ক্লাবটি। ক্লাবটি এবার গ্রীষ্মকালীন দলবদলে নতুন খেলোয়াড় দলভুক্ত করেছে ২১ জন; প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে যা এক মৌসুমে কোনো দলের সর্বোচ্চ নতুন খেলোয়াড় কেনার রেকর্ড।
দীর্ঘদিন পর লিগে ফিরে আসা নটিংহামই যেখানে খেলোয়াড় কেনার রেকর্ড গড়েছে, সেখানে বাকিরাও বসে থাকেনি। নটিংহাম গড়েছে সংখ্যায় রেকর্ড, আর বড় দলগুলো গড়েছে টাকায় রেকর্ড।
যার ফলে ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগের মধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগই খেলোয়াড় কেনায় রেকর্ড গড়ে ফেলেছে। স্পেনের লা লিগা, ইতালির সিরি আ, জার্মানির বুন্দেসলিগা আর ফ্রান্সের লিগ আঁ–র ক্লাবগুলো একত্রে যা খরচ করেছে, প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো তার সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে খেলোয়াড় কেনায়।
তাই খেলার মান ও জনপ্রিয়তার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যার অবস্থান যেখানেই হোক, মৌসুমের শুরুতেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ।
২০২২–২৩ মৌসুমের গ্রীষ্মকালীন দলবদল শুরু হয়েছিল ১০ জুন, শেষ হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর। আড়াই মাসের বেশি সময় ধরা চলা এই দলবদল পর্বে ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ২১ হাজার কোটি টকা) খরচ করেছে প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো।
ট্রান্সফার মার্কেটের তথ্য বলছে, প্রিমিয়ার লিগের খরচ যেখানে দুই বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে সেখানে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের অন্য কেউ ১ বিলিয়ন ডলারও খরচ করেনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ইতালির সিরি আ। ৫৫০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে তৃতীয় ফ্রান্সের লিগ আঁ।
স্পেনের লা লিগা চতুর্থ (৫০০ মিলিয়ন) ও জার্মানির বুন্দেসলিগা পঞ্চম (৪৮০ মিলিয়ন) স্থানে। সব মিলিয়ে এই চার লিগের অর্থ খরচের পরিমাণ ও প্রিমিয়ার লিগের খরচের পরিমাণ প্রায় সমান।
ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ শুধু অন্যদের তিন গুণ ব্যবধানেই পেছনে ফেলেনি, নিজেদেরও পূর্বের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৭ সালে ১.৬ বিলিয়নের বেশি খরচ হয়েছিল প্রিমিয়ার লিগে। আর করোনা–পরবর্তী মৌসুম হিসেবে গত মৌসুমে খরচ হয়েছিল ১.৩ বিলিয়নের কাছাকাছি।
প্রিমিয়ার লিগের এবার এত বেশি খরচের কারণ মূলত প্রায় সবকটি ক্লাবই খেলোয়াড় কিনেছে বেশি হারে এবং বেশি টাকায়। ২০ ক্লাবের ৯টিই ১০০ মিলিয়নের বেশি অর্থ খরচ করেছে। এর মধ্যে চেলসিই খরচ করেছে ২৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রুশ ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ থেকে এ বছর ক্লাবটির মালিকানা কিনে নিয়েছেন মার্কিন বিলিয়নিয়ার টড বোহলি। চেলসির খরচের পরিমাণটি প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে রেকর্ড।
তবে এক মৌসুমে এরচেয়ে বেশি খরচের রেকর্ডও আছে, ২০১৯ সালে ৩৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে যে রেকর্ড এখন স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের দখলে।
চেলসির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্ছ ২৪৬ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
সব মিলিয়ে এবারের দলবদলে ১৬৯ জন ফুটবলার দলভুক্ত করেছে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো, যা ২০২১ সালে ছিল ১৪৮ জন, ২০২০ সালে ছিল ১৩২ জন।