রোনালদোর ছেলের জন্য পাঁচ দেশের দরজা খোলা

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছেলে রোনালদো জুনিয়রইনস্টাগ্রাম

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এখন ক্যারিয়ারের গোধূলিবেলায় আছেন। বড়জোর ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত হয়তো আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যাবে তাঁকে। তবে বিদায় নেওয়ার আগেই ফুটবলমঞ্চে হয়তো নিজের উত্তরসূরি রেখে যাচ্ছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। শুধু রেখে যাচ্ছেন বললে অবশ্য কম বলা হবে, রোনালদোর ছেলেকে নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়িও শুরু হতে পারে।

রোনালদোর ছেলে এরই মধ্যে রোনালদো জুনিয়র নামে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সম্ভাব্য ৫টি দেশের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কোনটিতে খেলবে, তা নিয়েও চলছে নানা জল্পনাকল্পনা।

রোনালদো জুনিয়রের এরই মধ্যে ক্লাব ফুটবলের জুনিয়র দলে অভিষেক হয়েছে। খেলেছে জুভেন্টাস এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবেও। এসব দলে খেলে বিভিন্ন সময় নিজের ছাপও রেখেছে সে। বর্তমানে রোনালদো জুনিয়র তার বাবার ক্লাব আল নাসরের যুবদলে খেলছে।

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ক্লাবের হয়ে তার পায়ের ঝলকের ভিডিও বেশ মুগ্ধতাও ছড়িয়েছে। এখন হয়তো আরও বড় পরিসরে নিজেকে চেনানোর পথে হাঁটবে রোনালদো জুনিয়র।

এর মধ্যে আলোচনায় এসেছে তাঁর জাতীয় দলে খেলার প্রসঙ্গও। বিভিন্ন দিক বিবেচনায় ১৪ বছর বয়সী ছোট রোনালদোর যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, স্পেন, কেপ ভার্দে এবং পর্তুগালের হয়ে খেলার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা।

কোন দেশের হয়ে খেলবে রোনালদোর ছেলে
মার্কা

জন্মসূত্রে

২০১০ সালে রোনালদো তখন খেলেন রিয়াল মাদ্রিদে। কিন্তু নিজের সন্তানকে জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ক্যালিয়াফোর্নিয়ার সান দিয়েগোতে। এর মানে রোনালদো জুনিয়র চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল দলে খেলতে পারবে। যেখানে তার সঙ্গী হতে পারেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক ও টিমোথি উইয়া। তবে ছেলেকে যুক্তরাষ্ট্রে খেলাতে হয়তো রাজি হবেন না ‘সিআর সেভেন।’ ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা একরকম নেই বললেই চলে।

বসবাসের কারণে

২০২১ সালের আগস্টে সবাইকে চমকে দিয়ে রোনালদো যোগ দেন ম্যাচচেস্টার ইউনাইটেডে। তাঁর এই দ্বিতীয় ফেরা অবশ্য খুব একটা আনন্দের হয়নি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সেই সময়ের কোচ এরিক টেন হাগের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে হতাশা নিয়েই ইউনাইটেড ছেড়ে আল নাসরে যোগে দেন রোনালদো। কিন্তু দুই মেয়াদে রোনালদোর ইউনাইটেডে খেলা সুবিধা দিতে পারে ইংল্যান্ড দলকে। কিছু আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করে রোনালদোর ছেলেকে চাইলে ইংল্যান্ড খেলাতে পারে ফিল ফোডেন–জুড বেলিংহামদের সঙ্গেও।

আরও পড়ুন

খেলতে পারেন স্পেনের হয়েও

২০০৯ সালের দলবদলে ঝড় তুলে রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখান রোনালদো। স্পেনে আসার এক বছর পরেই বাবা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রোনালদো। ছেলে রোনালদো জুনিয়রের জন্ম আটলান্টিকের অন্য পাড়ে হলেও তাঁর শৈশব কেটেছে স্পেনে। অন্তত ৮ বছর পর্যন্ত রোনালদোর সঙ্গে ছেলে এ দেশেই ছিল। আইনগতভাবে ১০ বছরের নিচের বয়সী কেউ যদি অন্তত ৩ বছর স্পেনে থাকে, তবে তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যা হয়তো শেষ পর্যন্ত স্পেন দলের দুয়ারও খুলে দিতে পারে রোনালদো জুনিয়রের জন্য। যেখানে তাকে জুটি বাধতে দেখা যেতে পারে লামিনে ইয়ামাল–নিকো উইলিয়ামসদের সঙ্গে।

বড় ছেলে জুনিয়রকে নিয়ে দিনের বড় একটা সময় কাটান রোনালদো।
ইনস্টাগ্রাম

কেপ ভার্দেও আছে

ইসাবেল দা পিয়েদাদেকে কারও তেমন চেনার কথা নয়। কিন্তু আফ্রিকান দ্বীপ কেপ ভার্দের এই অধিবাসীই মূলত রোনালদো জুনিয়রের নানী। অর্থাৎ কেপ ভার্দে হচ্ছে মূলত রোনালদো জুনিয়রের নানাবাড়ি। কেপ ভার্দের হয়ে রোনালদো জুনিয়রের হয়ে খেলার জন্য এই একটি কারণই যথেষ্ট হতে পারে। যদিও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা যে সবচেয়ে কম, তা আগেই বলা যায়।

পর্তুগালই তবে শেষ কথা

ওপরের চারটি দেশ যতই আশা করুক, রোনালদো জুনিয়র হয়তো বাবার পথে হেঁটে সেই পর্তুগালের হয়েই খেলবে। পর্তুগালের জার্সিতে তার বাবা একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন। সেই জার্সিটাই নিশ্চিতভাবে বেশি টানবে রোনালদো জুনিয়রকে। বাবার কারণে জাতীয় দল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণাও পাওয়া যাবে। পাশাপাশি বাবার ক্যারিয়ারের অপূর্ণতাগুলোও হয়তো পর্তুগালের জার্সিতে পূরণ করতে চাইবে রোনালদো জুনিয়র। তবে সবচেয়ে বড় কথা, রোনালদো নিজেও হয়তো চাইবেন, তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই ছেলে পর্তুগালের জার্সিতে নিজেকে মেলে ধরুক।