চুমুর জন্য কাঠগড়ায় উঠতে হচ্ছে স্পেনের সাবেক ফুটবল-প্রধানকে

লুইস রুবিয়ালেসরয়টার্স

স্পেনের এক বিচারক চুমু-কাণ্ডে আলোচিত স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরুর প্রস্তাব দিয়েছেন। গত আগষ্টে ফিফা নারী বিশ্বকাপে স্পেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে দেশটির খেলোয়াড় হেনি হেরেমোসোর ঠোঁটে চুমু খেয়ে তুমুল সমালোচিত হন রুবিয়ালেস। যার জেরে ফেডারেশন সভাপতির পদ ছাড়তে হয় তাঁকে। যৌন হয়রানি ও জবরদস্তির অভিযোগও গঠন করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন

প্রাথমিক তদন্ত শেষে গতকাল স্পেনের অদিয়েন্সিয়া ন্যাসিওনাল আদালতের বিচারক ফ্রান্সিসকো দে হোর্হে বলেছেন, রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কারণ ‘চুমুটা পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতে ছিল না এবং কাজটা একদমই অপ্রত্যাশিত ছিল।’

শুধু রুবিয়ালেস নয়, এই ঘটনার তোলপাড় শুরু হওয়ার পর হেরমোসোর ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য আরও তিনজনকে বিচারের সন্মুখীন করার প্রস্তাব দিয়েছেন বিচারক ফ্রান্সিসকো। ‘চুমুটা পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতে ছিল, এটা জনসন্মুখে বলার জন্য’ হেরমোসোর ওপর চাপ তৈরি করেছিলেন স্পেন নারী দলের সাবেক কোচ হোর্হে ভিলদা, ছেলেদের দলের পরিচালক আলবার্ট লুকু ও স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) বিপণন কর্মকর্তা রুবেন রিভেরা। বিচারক এই তিনজনের বিরুদ্ধেও তদন্ত চালিয়েছেন।

নারী বিশ্বকাপ জয়ের পর হেনি হেরমোসোকে জড়িয়ে ধরে চুমু দেন লুইস রুবিয়ালেস
রয়টার্স

গত বছরের ২০ আগষ্ট সিডনিতে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফিফা নারী বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে খেলোয়াড়দের পদক বিতরণের সময় হাজারো ক্যামেরার সামনে ‘চুমু-কান্ড’ ঘটানোর পর রুবিয়ালেস দাবি করেছিলেন, সেটি ‘পারস্পারিক সম্মতি ভিত্তিতে’ই হয়েছিল। যদিও হেরমোসো তা অস্বীকার করেছিলেন। উচ্চ আদালতে শুনানির পর বিচারক ফ্রান্সিসকো দে হোর্হে রায়ে বলেছেন, চুমুটা ‘যৌনতার জন্য দেওয়া হোক বা না হোক, খেলায় অসাধারণ এক অর্জনের জন্য তখন যে আবেগের স্ফুরণ ঘটেছিল, তার ভিত্তিতে আইনি বিষয়গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।’

আরও পড়ুন

বিচারক আরও জানিয়েছেন, হেরমোসোর ওপর চাপ তৈরি করতে ভিলদা, লুকু ও রিভেরা যে ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টা’ চালিয়েছেন, সেই প্রমাণ তিনি পেয়েছেন। আর সেটা রুবিয়ালেসের সঙ্গে কথা বলেই তারা করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ‘হেরমোসো ভিডিওবার্তায় বলবেন চুমুটা সম্মতির ভিত্তিতে ছিল।’ বিচারক বলেছেন, এমন কাজ রুবিয়ালেস যে মূল অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত, অবশ্যই তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

বিচারকের প্রস্তাব পক্ষে থাকায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে আনুষ্ঠানিক বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর অনুরোধ জানাতে পারবেন। এর পর বিচার কার্যক্রমের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে।

চুমু-কাণ্ডের পর রুবিয়ালেসকে নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। স্প্যানিশ আইন অনুযায়ী, সম্মতি না থাকার পরও চুমু খেলে সেটি যৌন হয়রানি হিসেবে বিবেচিত হয় আর এমন অপরাধের শাস্তি জরিমানা থেকে সর্বোচ্চ চার বছরের জেল। ৪৬ বছর বয়সী রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে গত সেপ্টেম্বরে মামলা করেন হেরমোসো। এ মাসের শুরুতে আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে হেরমোসো বলেছিলেন, তিনি চাপের মধ্যে আছেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন যেটা তার স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করছে।’

আরও পড়ুন