স্পেনে বার্সা-রিয়ালের মাঝেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ফ্রান্সে ট্রফির অপেক্ষায় পিএসজি
ধীরে ধীরে পরিণতির দিকে এগোচ্ছে ইউরোপের শীর্ষ ৫ ঘরোয়া লিগের লড়াই। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ বা ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ-তে এরই মধ্যে ট্রফির গন্তব্য দৃশ্যমান। প্রিমিয়ার লিগে যেমন লিভারপুলের হাতেই লাগাম। আর লিগ আঁ-তে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন হওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার। তবে স্প্যানিশ লা লিগা কিংবা ইতালিয়ান সিরি ‘আ’তে দৃশ্যপট ভিন্ন।
জার্মান বুন্দেসলিগাও শেষ মুহূর্তে জমে উঠতে পারে। উত্তাপটা অবশ্য শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়ারই নয়, শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করে নেওয়া নিয়েও ক্লাবগুলো মধ্যে চলছে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা।
লড়াইয়ে কি তবে রিয়াল-বার্সাই
লা লিগার শিরোপা লড়াইটা ধীরে ধীরে তিন থেকে দুই দলের মধ্যে সীমিত হওয়ার পথে। বিশেষ করে গতকাল রাতের থ্রিলারে বার্সেলোনার কাছে ৪-২ গোলে আতলেতিকো মাদ্রিদের হারের পর চিত্রনাট্যে এখন বেশ পরিবর্তন এসেছে। এই ম্যাচের পর ২৭ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সা।
আর নিজেদের ম্যাচে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ২-১ গোলে জেতা রিয়াল আছে দুইয়ে। এক ম্যাচ বেশি খেলা রিয়ালের পয়েন্টও ৬০। কিন্তু গোল ব্যবধানে বার্সার (+৪৮) চেয়ে রিয়াল (+৩২) বেশ পিছিয়ে। আর তিনে থাকা আতলেতিকোর পয়েন্ট ২৮ ম্যাচে ৫৬। এমন পরিস্থিতিতে রিয়াল-বার্সাকে টেক্কা দিতে হলে দ্রুত লড়াইয়ে ফিরতে হবে আতলেতিকোকে। পাশাপাশি শীর্ষে থাকা দুই দলের পয়েন্ট হারানোর প্রার্থনাও করতে হবে।
১২ পয়েন্টে এগিয়ে লিভারপুল
৫ দিনের ব্যবধানে দুটি শিরোপা লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়া লিভারপুলের এই সপ্তাহে লিগে কোনো খেলা ছিল না। তবে লিভারপুল সমর্থকেরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে পারেন যে দুর্দশা আসার আগে অন্তত লিগে বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছে তাদের দল। ২৯ ম্যাচ শেষে প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ৭০। সমান ম্যাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে আর্সেনাল।
সর্বশেষ গতকাল রাতে চেলসিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে গানাররা। তবে এই জয়ের পরও লিভারপুলের চেয়ে ১২ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে তারা। এখন ৯ ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা লড়াইয়ে লিভারপুলকে টেক্কা দিতে হলে অতিনাটকীয় কিছুর অপেক্ষা করতে হবে আর্সেনালকে।
একদিকে ছন্দ হারানো লিভারপুলের পয়েন্ট হারানোর প্রার্থনা যেমন করতে হবে, তেমনি নিজেদের ম্যাচগুলোতেও জয়রথ ধরে রাখতে হবে। এই লিগে শীর্ষ চার নিয়েও আছে নানামুখী দ্বৈরথ। নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে ব্রাইটনের সঙ্গে ড্র করার পর ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি এখন আছে ৫ নম্বরে। তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চারে আছে চেলসি।
নাপোলির চেয়ে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে ইন্টার
কদিন আগেও সিরি ‘আ’র পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল নাপোলি। কিন্তু মাত্র কয়েক ম্যাচের ব্যবধানে নাপোলিকে পেছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ইন্টার মিলান। ২৯ ম্যাচ শেষে ইন্টারের পয়েন্ট ৬৪। গত রাতে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে আতালান্তাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে তারা। অন্যদিকে দুইয়ে থাকা নাপোলির পয়েন্ট ২৯ ম্যাচে ৬১। ৩ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার জন্য কেবল নিজেদেরকেই দুষতে পারে তারা।
সর্বশেষ ম্যাচে অবনমন অঞ্চলের দল ভেনেৎসিয়ার সঙ্গেও যে গোলশূন্য ড্র করেছে নাপোলি। এদিকে ইন্টারের কাছে হারের পর আতালান্তার শিরোপা লড়াইয়ে থাকাও এখন কঠিন। ২৯ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ৫৮।
তবু এগিয়ে বায়ার্ন
বুন্দেসলিগায় নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে ইউনিয়ন বার্লিনের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। এরপরও শীর্ষস্থান ভালোভাবে দখলে রেখেছে তারা। ২৬ ম্যাচে বায়ার্নের পয়েন্ট ৬২। হ্যারি কেইন-জামাল মুসিয়ালাদের পয়েন্ট হারানোর সুযোগটা অবশ্য দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার লেভারকুসেন।
স্টুটগার্টকে গতকাল রাতে লেভারকুসেন হারিয়েছে ৪-৩ গোলে। এ জয়ের পর ২৬ ম্যাচে জাবি আলোনসোর দলের পয়েন্ট ৫৬। তবে শীর্ষে থাকা বায়ার্নের চেয়ে এখনো ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে তারা। হাতে থাকা ৮ ম্যাচ দিয়ে লেভারকুসেন এই ব্যবধান কমাতে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
পিএসজির শিরোপা জয় শুধুই সময়ের ব্যাপার
২৬ ম্যাচ শেষে কোনো দল যদি ১৯ পয়েন্টে এগিয়ে থাকে, তাহলে চাইলেই সেই দলকে শিরোপা দিয়ে দেওয়া যায়। লিগ আঁ-তে পিএসজির অবস্থা অনেকটা তেমনই। শীর্ষ পাঁচ লিগের এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দলও তারা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মার্শেইয়ের বিপক্ষে গতকাল রাতে ৩-১ গোলে জিতেছে পিএসজি।
এই জয়ের পর ২৬ ম্যাচে পিএসজির পয়েন্ট ৬৮। সমান ম্যাচে মার্শেইয়ের পয়েন্ট ৪৯। পরের ম্যাচে যদি পিএসজি জেতে, তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৭১ এবং এগিয়ে যাবে ২২ পয়েন্টে। আর নিজেদের পরের ম্যাচে মার্শেই হেরে গেলে তাদের পয়েন্ট ৪৯-ই থেকে যাবে। অর্থাৎ পরের ৭ ম্যাচের সব কটি জিতলেও পিএসজিকে ছুঁতে পারবে না তারা। ফলে এখন পিএসজির সামনে সুযোগ আছে পরের ম্যাচেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। শেষ পর্যন্ত সেটি না হলেও খুব দ্রুতই ট্রফিটা তাদের হাতে ওঠা নিশ্চিত।