স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে তানভীরের 'ফেরা'

তানভীর চৌধুরী
তানভীর চৌধুরী

মৃত্যুর খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন। তবু তাঁকে বাঁচানোর আশা ধরে রেখেছিলেন চিকিৎসকেরা। সেই লড়াইয়ে জিতে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন ফুটবলার তানভীর চৌধুরী। গত ১৯ মে নাটোরের বাড়ি থেকে ঢাকা আসার পথে বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলারের জ্ঞান ফিরেছে। টুকটাক কথা বলছেন। কিন্তু স্মৃতিশক্তি ফিরে না পাওয়ায় মনে রাখতে পারছেন না কিছুই।
আড়াই মাস হলো তাঁর ঠিকানা স্কয়ার হাসপাতালের বিছানা। বেশ কয়েক দিন ছিলেন কোমায়। কৃত্রিমভাবে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। অবস্থার খানিক উন্নতি হওয়ায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে দিন কয়েক আগে। কিন্তু পাশে গেলে কাউকে চিনতে পারছেন না। কথা বললে তাকিয়ে থাকেন। হঠাৎ দু-একটা কথা বলে পরক্ষণেই তা ভুলে যান।
স্বাভাবিকভাবে খেতেও পারেন না। এখনো পাইপ দিয়ে খাবার দিতে হয়। ডান হাত ও ডান পা একটু নড়াচড়া করতে পারেন। শরীরের বাঁ পাশে কোনো সাড়া নেই। তবু চিকিৎসকেরা দেখাচ্ছেন আশার আলো। বছর পনেরো আগে নিটল-টাটা প্রথম জাতীয় লিগের সেরা খেলোয়াড়টি ভালো হয়ে যাবেন। ঢাকার প্রায় সব বড় দলে খেলা এই ফরোয়ার্ডের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনাই তাঁরা দেখেন।
কিন্তু চিকিৎসাপ্রক্রিয়ায় সময় লাগবে। স্ত্রী শাহ দিল আফরোজ তাই হাসপাতালের পাশে একটা বাসা ভাড়া নিয়েছেন। দুই শিশুসন্তান নিয়ে থাকেন। অপেক্ষায় আছেন স্বামীকে নিজেদের মধ্যে ফিরে পাওয়ার, ‘সে চোখ মেলে তাকিয়েছে দেড় মাস আগে। জীবন নিয়ে শঙ্কাটা কেটে গেছে। কিন্তু আমাদের কোনো কথাবার্তায় সাড়া দিতে পারে না। দুই-এক দিন থেকে একটা শব্দ বলছে, মা। এরপরই আবার চুপ। পুরোপুরি সুস্থ হতে লম্বা সময়ই লাগবে।’
এত বড় দুর্ঘটনার পর সময় লাগাই স্বাভাবিক। তবে তানভীর বেঁচে থাকাটাই পরিবারের কাছে সবচেয়ে বড় স্বস্তির।