বিতর্ক উসকে দিলেন এমেকা-ল্যান্ডিং

আবাহনীর বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের দুই গোল মানতে না পেরে এমেকা ডার্লিংটন ক্ষুব্ধ হয়ে কী যেন বলছেন l ফাইল ছবি
আবাহনীর বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের দুই গোল মানতে না পেরে এমেকা ডার্লিংটন ক্ষুব্ধ হয়ে কী যেন বলছেন l ফাইল ছবি

রাগে গজরাচ্ছেন তাঁরা দুজন, ‘এটা পাতানো খেলা...পাতানো খেলা। বাংলাদেশে আর খেলব না!’
ল্যান্ডিং তো অধিনায়কের বাহুবন্ধনী ছুড়ে ফেললেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ঘাসে। এমেকার মুখে দলটির ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক ফুটবলার আশরাফউদ্দিন চুন্নুর নাম। তিনি নাকি ডাগআউটে দাঁড়িয়ে শেষ মুহূর্তে আবাহনীকে ম্যাচ ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছেন!
এমেকা ও ল্যান্ডিং দুজনই দুটি গোল করে শেখ জামালকে জয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে দুই গোল খেয়ে হেরে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ দুই আফ্রিকান কর্মকর্তাদের দিকে আঙুল তুলেছেন। পরশু তাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ওই ম্যাচের পর শেখ জামালের ডাগআউটে বিরাট হইচই।
আবাহনীর স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন গোটা মৌসুমেই ছিলেন গোলহীন। এদিন শেষ দিকে বদলি নেমেই দুটি গোল করলেন, নাটকীয়ভাবে আবাহনীর জয় ৩-২ গোলে। শেষ মুহূর্তে দুই-তিন গোল করে জিতে যাওয়ার অনেক উদাহরণ আছে ফুটবলে। ইউরোপে এমনটা আকছার হয়। কিন্তু জীবনের বাধাহীন গোল দেখে দর্শকদের সন্দেহ, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়! চট্টগ্রাম আবাহনীরও তীব্র আপত্তি এই ম্যাচ নিয়ে।
অনেকে অঙ্ক মেলাচ্ছেন, চট্টগ্রাম আবাহনীকে শিরোপা-বঞ্চিত করতেই শেখ জামাল ছেড়ে দিয়েছে ঢাকা আবাহনীকে। বড় আবাহনী চলতি লিগে পরশু প্রথম হারলে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান তিন থেকে শূন্যে নেমে আসত। সেটা ঠেকাতেই আবাহনীকে জিতিয়ে দেওয়া হলো কি না, এই প্রশ্ন অনেকের মনেই।
তবে চুন্নু তা মানতে রাজি নন, ‘পাতানো ম্যাচ কেন খেলব আমরা? আমাদের কী স্বার্থ? কে চ্যাম্পিয়ন হবে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা নিজেরাও তো ভালো অবস্থানে আছি। কাজেই ম্যাচ ছাড়ার প্রশ্নই আসে না।’
নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা আর গাম্বিয়ান ল্যান্ডিংয়ের অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর কথা, ‘অসম্ভব, ওদের কথাবার্তা আমার কাছে বিস্ময়কর লাগছে। আসলে ওরা ম্যাচে সুযোগ মিস করায় আমি বকা দিয়েছিলাম। এ জন্যই হয়তো ম্যাচের পর প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ম্যাচে এমন হয়ই।’ শেখ জামালের কোচ জোসিমউদ্দিন জোসির ভাষ্য, ‘আমি কাউকে ইচ্ছাকৃত গোল খেতে বলিনি।’
তবে শেখ জামালের কেউ কেউ অন্য হিসাব মেলাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, এই লিগেই শেষ মিনিটে রহমতগঞ্জের কাছে গোল খেয়ে হেরেছে শেখ জামাল। মোহামেডান, আরামবাগ, মুক্তিযোদ্ধার কাছে হেরেছে। তখন তো ক্ষোভ জানাননি ল্যান্ডিং-এমেকারা। ঢাকা আবাহনীকে হারাতে এই দুজনকে নাকি মোটা অঙ্কের টাকার প্রস্তাব দিয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। সেটা হয়নি বলেই দুই আফ্রিকানের এমন ক্ষোভ বলে তাঁদের অনুমান।
তদন্তেই বেরিয়ে আসবে সব। সেটি করা হবে বলে জানিয়েছে বাফুফে। তবে সাধারণ ধারণা হলো, নানা সমীকরণ সামনে রেখে দলগুলোর মধ্যে পয়েন্ট ছাড়াছাড়ি হচ্ছে। প্রথম পর্বে দারুণ খেলা রহমতগঞ্জের দ্বিতীয় পর্বে অবিশ্বাস্য রূপান্তর নিয়েও কথা উঠছে। অবনমন বাঁচানোর লড়াইয়ে থাকা দলগুলো ফাঁকফোকর খুঁজছে কীভাবে পয়েন্ট পাওয়া যায়! অতীতে এই নাটক ছিল, এখনো আছে। এটাই দেশের ফুটবলের বড় এক ক্ষত।