গোল আর শিরোপা দুটিই যেন জাফর ইকবালের 'বন্ধু'

এবার অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলের ‘পোস্টার বয়’ জাফর ইকবাল। ফাইল ছবি
এবার অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলের ‘পোস্টার বয়’ জাফর ইকবাল। ফাইল ছবি

থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামের ভিআইপি গ্যালারির পুরোটা জুড়েই বাংলাদেশ। জাফর ইকবাল-মাহফুজ হাসান প্রিতমরা চেয়ার ছড়িয়ে ছিটিয়ে যেন বাড়ির উঠোনে খোশমেজাজে গল্প করছে। টানা দুই ম্যাচ জিতে টেবিলের শীর্ষে থাকা খেলোয়াড়দের মনে কী খেলা করে, তা দূর থেকেই টের পাওয়া যায়। টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক জাফর ইকবালের চোখমুখে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিজ্ঞা। দুই ম্যাচে তিন গোল করে যে হয়ে উঠেছে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলের ‘পোস্টার বয়’! 

জাফরের ব্যক্তিগত ঝলকেই ভারতের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ। নিজে গোল করেছিল দুটি, করিয়েছিল আরও একটি। দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষেও তার পা থেকে এসেছে দুর্দান্ত এক গোল। জাফর যেমন সর্বোচ্চ গোলদাতা, তাঁর দলও আছে টুর্নামেন্টের শীর্ষে। দেশের হয়ে শিরোপা নিশ্চিত ও ব্যক্তিগত গোল্ডেন বুট জয়—দুটিই যদি হয়, আনন্দের ষোলোকলাই পূর্ণ হবে জাফরের, ‘আমার লক্ষ্য এখন দুটিই। শিরোপা ছোঁয়া ও গোল্ডেন বুট জয়।’
চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলা এই উইঙ্গারের রক্তেই মিশে আছে গোল-শিরোপা। তৃতীয় বিভাগে খেলে আগের মৌসুমেই প্রথমবারের মতো আরামবাগের জার্সিতে প্রিমিয়ার লিগে নাম লিখিয়েছে জাফর। গোলও করেছিল পাঁচটি। প্রিমিয়ার লিগে এসেই পাঁচ গোল, বাংলাদেশের একজন উইঙ্গারের জন্য সেটা ঢের বেশি! ২০১৫-১৬ মৌসুমে ফেডারেশন কাপে আরামবাগের রানার্সআপ হওয়ার পেছনেও ছিল জাফরের বড় অবদান। গত কিছুদিনে আরামবাগের মতো নিচু সারির দলের জন্য রানার্সআপ ট্রফিই তো শিরোপার চেয়ে বেশি কিছু!
জুনিয়র ডিভিশনে নিয়মিত সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার অভ্যাস আছে জাফরের। শিরোপা নিজেদের করে নিয়ে ঘরে ফেরার ইতিহাসও তার আছে। ২০১৫ সালে তৃতীয় বিভাগ লিগে এক হ্যাটট্রিকসহ করেছিল নয় গোল। তার দল দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবও হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে আগ্রাবাদ কমরেডের হয়ে তিন ম্যাচে ছয় গোল। দলও জিতে শিরোপা। ব্যক্তিগত গোল ও শিরোপা—দুটিই যেন হাঁটে জাফরের হাত ধরে। ওই বছর চট্টগ্রাম পাইওনিয়ার লিগে ১৩ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিল বর্তমানে চট্টগ্রামে আবাহনীতে খেলা এই উইঙ্গার। তার দল মাদারবাড়ী শোভনীয়া ক্লাবও হয় চাম্পিয়ন। হোক বিভাগীয় বা জুনিয়র ডিভিশন লিগ। সেরা গোলদাতা ও চ্যাম্পিয়ন তো হয় সেরা একজনই। এ কথাগুলোই মনে করিয়ে দিলেন বান্দরবান থেকে উঠে আসা জাফর, ‌‘বড় পর্যায়ে না হোক, ছোট পর্যায়ে সেরা গোলদাতা ও শিরোপা জয়ের অভ্যাস আছে আমার। এই টুর্নামেন্টেও সে সম্ভাবনাই তৈরি হয়েছে।’
ভারতকে ৩-৪ গোলে হারিয়ে শুরু, এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়। সামনের দুটি বাধার নাম নেপাল ও ভুটান । যুবারা যেভাবে এগোচ্ছে, আশায় বুক বাঁধতেই পারে বাংলাদেশ।