আগের দিন কাটাতে হয়েছিল ১ উইকেট নিয়েই, দ্বিতীয় দিন সকালে বাংলাদেশ পেল ৪ উইকেটের দেখা। শতক করা ডেভন কনওয়ের পর রস টেলর, হেনরি নিকোলস ও ড্যারিল মিচেল ফিরেছেন, তবে অধিনায়ক টম ল্যাথাম অপরাজিত আছেন ২১৫ রান করে। নিউজিল্যান্ড পেরিয়ে গেছে ৪০০ রান। ১২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নবিরতিতে স্বাগতিকেরা গেছে ৫ উইকেটে ৪২৩ রান নিয়ে। হ্যাগলি ওভালে প্রথম ইনিংসে এখনোই এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর।
দিনের প্রথম বলেই মাইলফলকে পৌঁছে যান আগের দিন ৯৯ রানে অপরাজিত থাকা ডেভন কনওয়ে। ইবাদত হোসেনের লেগস্টাম্পের ওপর ফুললেংথের বলে ফ্লিক করে চার মেরে পৌঁছে যান তিন অঙ্কে। ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ টেস্টে কনওয়ের এটি তৃতীয় শতক, ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে তাঁর চেয়ে বেশি ৪টি করে শতক আছে শুধু সুনীল গাভাস্কার ও জর্জ হেডলির।
শতকের পর অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি কনওয়ে। ল্যাথামের ডাকে সাড়া দিয়ে কাভার থেকে সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়েছিলেন, স্ট্রাইক প্রান্তে মেহেদী হাসান মিরাজের সরাসরি থ্রোয়ে রান-আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। এর আগে ল্যাথামের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উঠেছে ২১৫ রান, বাংলাদেশের বিপক্ষে যেটি নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি ছিল কনওয়ে ও উইল ইয়াংয়ের—সিরিজের প্রথম টেস্টে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে হয়েছিল সেটি।
প্রথম দিন অপেক্ষায় থাকা রস টেলর অবশেষে নেমেছেন তাঁর ক্যারিয়ারে শেষ টেস্টে ব্যাটিংয়ে। ক্রাইস্টচার্চের করতালির ভেতর নামার পর বাংলাদেশ খেলোয়াড়েরা তাঁকে দিয়েছেন গার্ড অব অনার। নামার পর খেলেছেন টেলর-সুলভ শট—কাভার ড্রাইভে চারের পর কাট করে মেরেছেন আরেকটি।
তাসকিনকে কাভার দিয়ে চার মেরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দ্বিশতক পেয়েছেন ল্যাথাম। ৩০৫ বলে এ মাইলফলকে গেছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ইনিংসে কোনো উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের দ্বিশতক পাওয়ার মাত্র পঞ্চম ঘটনা এটি, সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দ্বিশতক পেয়েছিলেন ব্রায়ান ইয়াং।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যে কোনো ইনিংসে কোনো উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের দ্বিশতক পাওয়ার এটি সপ্তম ঘটনা। ২০১৮ সালে সর্বশেষ ল্যাথামই পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ২০০ রানের দেখা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়েলিংটনে। ল্যাথাম এরপর ছাড়িয়ে গেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো নিউজিল্যান্ড অধিনায়কের সর্বোচ্চ ইনিংসকেও—২০০৪ সালে চট্টগ্রামে এর আগে ২০২ রান করেছিলেন স্টিফেন ফ্লেমিং।
অন্যদিকে অবশ্য ল্যাথামকে রেখে একে একে ফিরেছেন টেলররা। ইবাদতকে ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে শরীফুলের হাতে ধরা পড়েছেন দারুণ শুরু করা টেলর। ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ ইনিংসে ৩৯ বলে ২৮ রান করেছেন নিউজিল্যান্ড কিংবদন্তি, ফেরার পথে অভিবাদন পেয়েছেন ইবাদতদের, উঠে দাঁড়িয়েছে হ্যাগলি ওভালও। হেনরি নিকোলস ফিরেছেন ০ রানেই। ইবাদতের বলে কট-বিহাইন্ড হয়েছেন এ বাঁহাতি, দারুণ রিভিউয়ে সে উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। ৪১৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে কিউরা।
এর আগেই ল্যাথাম জীবন পেয়েছেন তাসকিনের হাতে। লিডিং-এজে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন, ছুটে গিয়ে হাতে নিলেও রাখতে পারেননি তাসকিন। নিউজিল্যান্ডের বেশ কয়েকটা ক্যাচ এদিন গেছে স্লিপের গ্যাপ দিয়ে।
বিরতির ঠিক আগে অবশ্য ড্যারিল মিচেলকে ফিরিয়েছেন শরীফুল ইসলাম। আউটসাইড-এজড হয়েছেন তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে আল্ট্রা-এজ দেখিয়েছে পরিষ্কার স্পাইক।