১০০ পেয়ে সবার ওপরে বাংলাদেশ
সবার আগে তিন অঙ্কের ‘ম্যাজিক ফিগারে’ পৌঁছে গেল বাংলাদেশ!
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে ওয়ানডের সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশ ছিল দুই নম্বরে। তবে শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের চেয়ে ১৫ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ‘বাছাই’ হিসেবে আয়োজিত আইসিসির এই ১৩ দলের সুপার লিগে শীর্ষে ওঠার হাতছানি নিয়েই সিরিজটা শুরু করেছিলেন তামিম ইকবালরা, আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিতেই ইংল্যান্ডকে পেরিয়ে সবার ওপরে ওঠা হয়ে গেল বাংলাদেশের!
পাশাপাশি ‘সেঞ্চুরি’ও হয়ে গেল বাংলাদেশ দলের! সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকায় এখন শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের নামের পাশে পয়েন্টের ঘরে জ্বলজ্বল করছে ‘জাদুকরী সংখ্যাটি’—১০০!
সুপার লিগে এ পর্যন্ত ১৪টি ম্যাচ খেলেছে, এর মধ্যে ১০ ম্যাচ জিতেছে, হেরেছে ৪টি। জয়প্রতি ১০ পয়েন্ট করে ১০০ পয়েন্ট হয়ে গেল বাংলাদেশের। দুইয়ে থাকা ইংল্যান্ড ৯৫ পয়েন্ট পাওয়ার পথে ম্যাচ খেলেছে ১৫টি। এই ১৫ ম্যাচে ইংল্যান্ডের ৯টি জয়ের পাশে ৫টি হার, সেখান থেকে পেয়েছে ৯০ পয়েন্ট। আর একটি ম্যাচে ফল হয়নি, সে ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট পেয়েছে ইংলিশরা।
পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ পাঁচ দলের পক্ষে বাংলাদেশের সমান ১৪ ম্যাচের হিসাবে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাওয়া গাণিতিকভাবে সম্ভব নয়। চার আর পাঁচ নম্বরে থাকা আয়ারল্যান্ড (৬৮ পয়েন্ট) ও শ্রীলঙ্কা (৬২) তো এরই মধ্যে ম্যাচই খেলে ফেলেছে ১৮টি করে। ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা ভারত ম্যাচ খেলেছে ১২টি। ১৪ ম্যাচ হতে বাকি দুই ম্যাচে জিতলেও ভারতের পয়েন্ট হবে ৯৯!
সুপার লিগে প্রতিটি দল নিজের ও পরের মাঠে চারটি করে আটটি সিরিজ খেলবে। প্রতি সিরিজে পূর্বনির্ধারিত তিনটি ম্যাচ আসবে সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকার হিসাবে। অর্থাৎ, প্রতিটি দল ২৪টি করে ম্যাচ খেলবে। ২০২৩ সালের মার্চে শেষ হবে সুপার লিগের এই পর্ব।
বাংলাদেশের বাকি দশ ম্যাচের একটি তো এই সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষেই, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার। তবে এর পরের তিন সিরিজের নয়টি ম্যাচ বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের এই পয়েন্ট তালিকার সম্ভাব্য অবস্থা নিয়ে শঙ্কায় ফেলবে। বাকি তিনটি সিরিজের দুটি প্রতিপক্ষের মাটিতে, প্রথমটি আগামী মার্চে শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপর মে মাসে আয়ারল্যান্ডে তিন ম্যাচের সিরিজ।
সুপার লিগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বাকি থাকা সিরিজটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে সেটি পিছিয়ে ২০২৩ সালের মার্চে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তা এখন তো সবার ওপরে আছে বাংলাদেশ, বাকি তিন সিরিজ—বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দুটির পর পয়েন্ট তালিকায় কোন অবস্থানে গিয়ে ঠেকে বাংলাদেশের অবস্থান, সেটিই বড় বিবেচনার ব্যাপার। কারণ, ২০২৩ বিশ্বকাপের স্বাগতিক ভারতের পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান সাপেক্ষে বিশ্বকাপে সুপার লিগ থেকে সুযোগ পাবে পয়েন্ট তালিকার প্রথম সাত কিংবা আটটি দল।
এই মুহূর্তে ভারত সেরা আটের মধ্যে আছে, শেষ পর্যন্ত তা-ই থাকলে পয়েন্ট তালিকার প্রথম আট দল সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। কিন্তু ভারত প্রথম আট দলের মধ্যে না থাকলে? স্বাগতিক হিসেবে ভারত তো এমনিতেই সুযোগ পাবে, সে ক্ষেত্রে সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকার প্রথম সাত দল সরাসরি যাবে বিশ্বকাপে। ১৩ দলের বাকি পাঁচ দল আনুষ্ঠানিক বাছাইপর্ব খেলবে নিচের স্তরের বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা আরও পাঁচ দলের সঙ্গে, দশ দলের সেই বাছাইপর্ব থেকে দুই দল সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে।
তা সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকায় যদি দুই দলের পয়েন্ট সমান হয় সে ক্ষেত্রে কী হবে? সহজ নিয়ম! প্রথমে দেখা হবে সমান পয়েন্ট পাওয়া দুই দলের মধ্যে কারা বেশি ম্যাচ জিতেছে। সেখানেও মিলে গেলে হিসাবে আসবে নেট রানরেট। সেখানেও পার্থক্য তৈরি না হলে? ২০২০ সালের ১ জুলাই আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের মধ্যে যারা এগিয়ে ছিল, তারাই এগিয়ে থাকবে।