স্টোকসের 'সেরা কিউই' উইলিয়ামসনই
>নিউজিল্যান্ডের বর্ষসেরা নাগরিকের মনোনয়ন পেয়েছেন কিউই বংশোদ্ভূত ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। স্টোকসের ব্যাটে চড়ে এই নিউজিল্যান্ডকেই হারিয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু স্টোকস এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, কেন উইলিয়ামসনই এই পুরস্কারের যোগ্য দাবিদার।
দম আটকানো বিশ্বকাপ ফাইনালের আমেজ এখনো কাটেনি। নির্ধারিত ১০০ ওভারের খেলা টাই, তারপর সুপার ওভারেও টাই; শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতেছে বাউন্ডারি নিয়মে। আর দলটিকে এ পর্যন্ত টেনে এনেছিলেন বেন স্টোকস অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংস খেলে। এ ছাড়া গোটা বিশ্বকাপে ৬৬.৪২ গড়ে ৪৬৫ রানের পাশাপাশি ৭ উইকেটও নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ইংল্যান্ড দলের এ অলরাউন্ডার। এমন দুর্দান্ত পারফর্ম করায় স্টোকসকে ‘নিউজিল্যান্ডের বর্ষসেরা নাগরিক’ হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে। তবে স্টোকস মনে করেন এ পুরস্কারের সত্যিকারের যোগ্য নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন স্বয়ং।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা এক পোস্টে স্টোকস বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বর্ষসেরা নাগরিক হওয়ার জন্য আমাকে মনোনীত করা হয়েছে, এ আমার জন্য অনেক গর্বের একটা বিষয়। নিউজিল্যান্ড ও মাওরি ঐতিহ্যের একজন হতে পেরে আমি গর্বিত। কিন্তু এমন সম্মানজনক পুরস্কারের জন্য আমাকে মনোনয়ন দেওয়াটা ঠিক নয়। অনেক মানুষ আছেন যারা নিউজিল্যান্ডের জন্য আমার থেকেও বেশি করেছেন। অনেক মানুষ আছেন যারা আমার থেকেও বেশি যোগ্য, এ পুরস্কার পাওয়ার জন্য। আমি ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছি। আমি এখানেই পাকাপাকিভাবে থিতু। সেই ১২ বছর বয়স থেকে আমি যুক্তরাজ্যে বাস করছি।’
উইলিয়ামসনের প্রতি সকল কিউই নাগরিকের নিঃস্বার্থ সমর্থন থাকা উচিত বলে মনে করেছেন স্টোকস ‘আমার মনে হয় পুরো দেশের মানুষের উচিত নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে সমর্থন দেওয়া। তাঁকে কিউই কিংবদন্তি হিসেবে গণ্য করা উচিত। সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে সে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কত্ব করেছে এই বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ছিল উইলিয়ামসন। নেতা হিসেবেও সে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সে অনেক ভালো একজন মানুষ, খেলার মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে সে তাঁর খেলোয়াড়ি মানসিকতা বজায় রাখে। নিউজিল্যান্ডের বর্ষসেরা নাগরিক হওয়ার জন্য যা যা গুন থাকা প্রয়োজন, আমি মনে করি তার সবগুলোই উইলিয়ামসনের আছে। নিউজিল্যান্ড, তাঁকে সমর্থন দাও। সে এই পুরস্কারের যোগ্য এবং আমার ভোটটাও সেই পাচ্ছে।’
স্টোকস আর উইলিয়ামসনের সঙ্গে মনোনয়ন পেয়েছেন টিভি উপস্থাপক সাইমন বার্নেট, সাবেক রাগবি তারকা মানু ভাতুভেই এবং ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে ভয়াবহ সেই হামলায় প্রতিরোধ গড়ে নিউজিল্যান্ডের ‘জাতীয় বীর’ বনে যাওয়া আফগান অভিবাসী আবদুল আজিজ। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত ১০ মনোনয়ন প্রাপ্তের সংক্ষিপ্ত তালিকা। বর্ষসেরার পুরস্কার দেওয়া হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। বেন স্টোকসের জন্ম আর শৈশবের একটা নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে। তাঁর বাবা জেরার্ড স্টোকস দেশটির খ্যাতনামা রাগবি খেলোয়াড় ও কোচ। নানা জায়গায় কোচিং করিয়ে ডাক পান ইংল্যান্ডের ওয়ার্কিংটন টাউন রাগবি লিগ ক্লাবের কোচ হতে। সে ডাকে সাড়া দিয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান জেরার্ড, সঙ্গে পুরো পরিবার। ফলাফল হিসেবে নিউজিল্যান্ডের বেন স্টোকস হয়ে যান ইংল্যান্ডের। ১৬ বছর হলো ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন স্টোকস। তাঁর বাবা-মা ২০১৩ সাল থেকে বসবাস করছেন নিউজিল্যান্ডে।