শ্রীলঙ্কা যেভাবে আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল!
২০১৯ বিশ্বকাপে আন্ডারডগ কারা? আফগানিস্তান, বাংলাদেশ বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম বলতে পারেন অনেকেই। ঐতিহ্য বা ইংল্যান্ডের অতীত ইতিহাস চিন্তা করে অন্য দলগুলোকে এগিয়ে রাখছেন সবাই। কিন্তু গত দুই বছরের ফর্ম ও দলের খেলোয়াড়দের অবস্থা বিবেচনা করলে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকবে শ্রীলঙ্কা দল। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে তারা। সব মিলিয়ে হতাশাজাগানো এক পরিস্থিতি। কিন্তু বিশ্বকাপে ঠিকই বিজয়ী বেশেই যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা।
গতকাল ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের জার্সি উন্মোচন করেছে শ্রীলঙ্কা। ইদানীং নতুন জার্সি উন্মোচন করে সমর্থকদের সন্তুষ্ট করা যায় না। সবাই কোনো না কোনো খুঁত খুঁজে নিচ্ছে। শ্রীলঙ্কার নতুন জার্সি নিয়েও এমনটা শুনিয়েছেন কতিপয় সমর্থক। জার্সির বিশাল অংশজুড়ে একটি কচ্ছপসদৃশ ডিজাইন রয়েছে। শ্রীলঙ্কার বহু পরিচিত সিংহের পরিবর্তে এ ডিজাইন দেখে অনেকেই রসিকতা করেছেন, এ দলের সঙ্গে সিংহকে মেলাতে না পেরেই এ কাজটা করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা বোর্ডের জন্য স্বস্তিদায়ক হলো, এমন সমালোচকদের সংখ্যা খুবই কম। নিজেদের প্রথাগত নকশা থেকে সরে এসে একদম ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়ায় প্রশংসাই পেয়েছে শ্রীলঙ্কা বোর্ড। উজ্জ্বল রঙের এ জার্সি অন্য দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছে। মাঠের খেলায় যা-ই হোক, জার্সির দিক থেকে অনেক দলের চেয়েই এগিয়ে থাকছে শ্রীলঙ্কা।
শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, শ্রীলঙ্কা চমকে দিয়েছে জার্সির পেছনের গল্প দিয়েও। শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপের জার্সি বানানো হয়েছে সাগরে ভেসে থাকা প্লাস্টিকের আবর্জনা দিয়ে। কচ্ছপসদৃশ নকশা দিয়ে সামুদ্রিক জীবনের প্রতি দলটির অঙ্গীকারের কথাই প্রকাশ করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কা দলের পোশাকের পৃষ্ঠপোষক এমএএস হোল্ডিং শ্রীলঙ্কার উপকূলে ভেসে থাকা প্লাস্টিক জোগাড় করেছে। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী। এমএএস হোল্ডিংয়ের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা শীরেন্দ্র লরেন্স জানিয়েছেন, ‘২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য সাগরের প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমরা খুশি যে টেকসই ও সৃষ্টিশীলতাকে একসঙ্গে করে খেলাধুলার পোশাকে নতুন মাপকাঠি সৃষ্টি করতে পেরেছি।’ শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট জানিয়েছে, এর মাধ্যমে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহারে সবাইকে সচেতন করতে চায় তারা। সমুদ্রের প্রাণী ও পরিবেশ বাঁচাতে সবাইকে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিতে চাচ্ছে তারা।
ক্রিকেটে এমন কিছু এই প্রথম দেখা গেলেও ফুটবলে এর আগে সাগরে ভেসে থাকা প্লাস্টিকের ব্যবহার দেখা গেছে। ২০১৬ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ একটি ম্যাচে এমন জার্সি গায়ে চাপিয়ে মাঠে নেমেছিল। আর ২০১৮-১৯ মৌসুমে রিয়ালের পুরো মৌসুমের তৃতীয় কিটটি বানানো হয়েছে এভাবে।