ভারতকে যা ইচ্ছা তা–ই করতে দিচ্ছে আইসিসি
আহমেদাবাদ টেস্টের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। মাইকেল ভন এক কাঠি সরেস। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের উইকেটকে ভন শুধু ‘জঘন্য’ই বলেননি, এর সঙ্গে তিনি দুষেছেন আইসিসিকেও।
ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ‘নখদন্তহীন’ মনে করেন ইংল্যান্ডের সাবেক এ অধিনায়ক। ভনের চোখে আইসিসিকে এমন মনে করার কারণও আছে। ভারতের মতো ‘শক্তিশালী দেশগুলো’ যখন যা খুশি তা–ই করবে, তখন আইসিসিকে এর বাইরে অন্য কিছু মনে হওয়ার তো কারণ নেই।
উইকেট নিয়ে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার যুবরাজ সিংও প্রশ্ন তুলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য এমন উইকেট নেতিবাচক বিজ্ঞাপন তৈরি করে বলে মনে করেন যুবরাজ। আহমেদাবাদে দ্বিতীয় দিনে খেলার প্রায় ২৫ ওভার বাকি থাকতে ১০ উইকেটের জয় পায় ভারত।
দিবারাত্রির এই টেস্টে প্রথম দিন থেকেই বল ভীষণ বাঁক নেয়। কোনো দলের ব্যাটসম্যানই স্পিন স্বস্তির সঙ্গে খেলতে পারেননি।
বল কতটা বাঁক নিয়েছে, তার প্রমাণ টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুটের বোলিং শুরু করা। খণ্ডকালীন স্পিনার আগের ইনিংসেই নিয়েছেন ৫ উইকেট!
ভন স্বীকার করছেন স্পিনবান্ধব উইকেটে ভারত ইংল্যান্ডের চেয়ে ভালো দল। কিন্তু আহমেদাবাদের উইকেটে ভারতের জয়ে মহিমা খুব সামান্যই।
টেস্ট ক্রিকেটে ম্যাচ জয়ের যে তৃপ্তি, এই জয়ের মধ্যে তার রেশ খুব সামান্য বলেই মনে করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফে এই ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার লিখেছেন, ‘ভারতের মতো শক্তিশালী দেশগুলোকে যত দিন পর্যন্ত যা খুশি তা–ই করতে দেওয়া হবে, তত দিন পর্যন্ত আইসিসিকে নখদন্তহীন মনে হবে।’
ভন সরাসরি লিখেছেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভারতকে যা খুশি তা–ই করতে দিচ্ছে। এ কারণে টেস্ট ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ওপর বিরক্তি প্রকাশ করে কথাটা লিখেছেন তিনি, ‘এসব কারণে সম্প্রচারক সংস্থাগুলো টাকাও ফেরত চাইতে পারে। খেলোয়াড়েরা মানসম্পন্ন না হওয়ায় টেস্ট দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে—এটা তারা মেনে নেবে, কিন্তু ঘরোয়া বোর্ডের এমন বাজে পিচ বানানো মেনে নেবে না। তিন দিন আগেই ম্যাচ শেষ হয়েছে, ওদিকে তাদের টাকাও খসছে। এতে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই এবং টেস্টের স্বত্ব পেতে ভালো অঙ্কের টাকা খরচের ব্যাপারে তারা দ্বিতীয়বার ভাববে।’
আহমেদাবাদ টেস্ট চলাকালে পিচ নিয়ে বেশ কিছু টুইটও করেছেন ভন। সোজাসাপ্টা লিখেছেন, ‘জঘন্য উইকেট। দ্বিতীয় দিনের পুরোটাই লটারি।’
কলামেও ভন ভারতের জয়কে সেভাবে পাত্তা দিচ্ছেন না। তাঁর মতে, এই টেস্টে কেউ জিততে পারেনি, ‘ভারত তৃতীয় টেস্ট জিতেছে, কিন্তু এই জয়ের কোনো গভীরতা নেই। আসলে এ ম্যাচে কেউ জিততে পারেনি।’
ভন স্বীকার করছেন, এমন কন্ডিশনে ভারত দক্ষতায় ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে। ‘কিন্তু খেলার ভালো ভেবেই এসব নিয়ে কথা বলতে হবে এবং সেই দায়িত্বটা সাবেকদের’ বলে মনে করেন ৪৫ বছর বয়সী ভন।