ভারতকে ভালো ভেবেছিলেন শোয়েব আখতার
দুই দিন পরই শুরু হবে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের চতুর্থ টেস্ট। আহমেদাবাদের সে টেস্ট নিয়ে এখনো আলোচনা শুরু হয়নি ঠিকভাবে। সবাই এখনো ব্যস্ত একই ভেন্যুতে দুই দিনেই শেষ হওয়া তৃতীয় টেস্ট নিয়ে।
স্পিন–বান্ধব এক সিরিজে ইংল্যান্ডকে নাকানি–চুবানি খাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছে ভারত। দুই ইনিংস মিলিয়ে ইংল্যান্ডের মাত্র ১৯৩ রান তোলা বলছে ভারতের সে বুদ্ধি কাজে এসেছে। কিন্তু এটাই জন্ম দিয়েছে বিতর্কের।
নিজেদের ইতিহাসে বিপর্যয়ের নতুন সব রেকর্ডের জন্ম হতে দেখা স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগেনি ইংল্যান্ডের। দেশটির সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকে তাই ভারতের এমন কাজে মন খারাপ করেছেন।
এভাবে উইকেট বানিয়ে ভারত টেস্ট ক্রিকেটে ভুল বিজ্ঞাপন দিয়েছে বলে দাবি তুলেছেন। আবার অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার নাথান লায়ন এমন কিছুতে দোষ খুঁজে পাচ্ছেন না। কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস তো চতুর্থ টেস্টেও একই উইকেট চাইছেন!
ওদিকে শোয়েব আখতার আহমেদাবাদের উইকেট নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন। তাঁর যুক্তি হলো, ভারত দল তো এমনিতেই ভালো খেলে। তাহলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ‘খেলা যায় না’—এমন উইকেট বানাচ্ছে কেন?
আহমেদাবাদে দিবারাত্রির টেস্ট পৌনে দুই দিনে শেষ হয়েছে। গোলাপি বল আর উইকেট মিলিয়ে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে ব্যাটসম্যানদের। ভারতের ব্যাটসম্যানরাও যে ভালো খেলেছেন, এমন নয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৯ রান তুলতে কোনো উইকেট না হারালেও প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৩ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত। এমন উইকেট নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনা হয়েছে। তবে ঢালাওভাবে উইকেটের সমালোচনা করে ব্যাটসম্যানদেরও দোষ খুঁজে পেয়েছেন সাবেক কিছু তারকা।
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ব্যাটসম্যানদের কেডসের প্রসঙ্গ ধরে ফুটওয়ার্ক ঠিক করা ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইয়ান চ্যাপেলও পা ঠিকভাবে ফেলায় মনোযোগ না দিয়ে প্রথম বল থেকেই সুইপ করার চেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নাসের হুসেইন খেলোয়াড়দের আতঙ্কিত হয়ে ওঠাটা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন।
সবাইকে এভাবে বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে দেখে আর চুপ থাকতে পারেননি শোয়েব আখতার। নিজের ইউটিউব চ্যানেল এসে এ নিয়ে নিজের মূল্যবান বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছেন।
আহমেদাবাদের টেস্টে দুই দলেরই ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, ‘টেস্ট ম্যাচ কি এমন উইকেটে খেলা উচিত? অবশ্যই না। এমন উইকেট যেখানে এত বেশি অগ্রহণযোগ্য বাঁক নিচ্ছে বল। একটা ম্যাচ দুই দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে, এটা টেস্টের জন্য ভালো কিছু না। আমি বুঝি ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে হয় কিন্তু এত বেশি সুবিধা নেওয়া তো বেশি হয়ে যায়। ভারত যদি ৪০০ রান করত আর ইংল্যান্ড ২০০ রান করত, তাহলে বলা যেত ইংল্যান্ড বাজে খেলেছে। কিন্তু এখানে ভারতও তো ১৪৫ রানে অলআউট হয়ে গেছে।’
এরপরই ভারত দল নিয়ে নিজের হতাশার কথা জানিয়েছেন শোয়েব। তাঁর চোখে ভারতকে অনেক ভালো দল বলেই ভাবতেন তিনি।
কিন্তু ঘরের মাঠে জেতার জন্য উইকেটের এমন দশা করলে সেটা আর সত্যি মনে হচ্ছে না তাঁর, ‘আমি ভেবেছিলাম ভারত এর চেয়ে একটা বড়, আরও ভালো দল। খেলায় ফেয়ার প্লে থাকা উচিত। ওদের উচিত আরও নিরপেক্ষ উইকেট বানানো। আমার ধারণা, তেমন উইকেটেই ইংল্যান্ডকে হারাতে পারবে ভারত। ওদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ তো নেই। ভারতের এমন উইকেট বানানোর দরকার নেই।’
কয়েক দিন আগেই প্রায় অর্ধেক শক্তির দল নিয়েও অস্ট্রেলিয়া থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে এসেছে ভারত। সে দলে বিরাট কোহলি, ইশান্ত শর্মা, যশপ্রীত বুমরা, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনদের অনেকেরই পূর্ণ সেবা পায়নি ভারত।
শোয়েব সে সিরিজের কথা মনে করিয়ে ভারতকে বলেছেন নিজেদের সামর্থ্যে আস্থা রাখতে, ‘ওরা কি অ্যাডিলেডে ভারতকে সুবিধা দেওয়া উইকেট বানিয়েছিল? মেলবোর্নে কি ভারতের সুবিধার কথা ভেবে উইকেট বানানো হয়েছিল? তাহলে তারা সেখানে কীভাবে সিরিজ জিতেছে? দুই দলই খেলতে পারে এমন মাঠ, কন্ডিশনেই খেল এবং বল, “দেখ আমরা ঘরের মাঠে এবং বাইরে সবখানেই খেলতে পারি।”’