‘নিরাপদ’ পাকিস্তানে ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছেন বাউচার
পাকিস্তানে কোনো দল সফরের ঘোষণা দিলেই এখন মুখস্থ এক শিরোনাম দিয়ে দেওয়া যায়। ‘… বছর পর পাকিস্তানে যাচ্ছে … দল।’ কারা খেলতে যাচ্ছে, সে নামটা বসিয়ে দেওয়ার পর বছরের হিসাবটা মিলিয়ে দিলেই হয়, ব্যস!
২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকার। অবধারিতভাবেই কত বছর পর পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে দলটি, সে হিসাবটাও চলে আসছে। ১৪ বছর পর আবার পাকিস্তান সফর করছে প্রোটিয়ারা। ২০০৭ সালে সর্বশেষ পাকিস্তান গিয়েছিল দলটি।
দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডে খেলতে আগামীকালই পাকিস্তানের উদ্দেশে রওনা দেবে ২১ সদস্যের টেস্ট স্কোয়াড। সিরিজের আগে পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলতে হয়েছে প্রোটিয়া কোচ মার্ক বাউচারকে। পাকিস্তানকে নিরাপদ বলেই মনে হচ্ছে তাঁর।
পাকিস্তানের সঙ্গে চাইলে আত্মিক এক টানও খুঁজে নিতে পারেন বাউচার। ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সে সফরেই টেস্ট অভিষেক বাউচারের।
২০০৭ সালের সর্বশেষ সিরিজেও ছিলেন বাউচার। আর ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর নির্বাসিত হওয়া পাকিস্তান যখন আবার ধীরে ধীরে ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ফিরে পাচ্ছে, তখন সফরে আসা দক্ষিণ আফ্রিকান দলের দায়িত্বেও আছেন বাউচার।
এরই মধ্যে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দল পাকিস্তানে সফর করে গেছে। তবু ক্রিকেটের ‘নাক উঁচু’ মহলের কোনো প্রতিনিধির প্রথম সফর বলে কথা। তাই পাকিস্তানের নিরাপত্তা প্রসঙ্গ আবার উঠে এসেছে।
এ ব্যাপারে বাউচারের পরিষ্কার মত, ‘আমাদের নিরাপত্তা দল সেখানে গেছে এবং পুরো পরিস্থিতি দেখে এসেছে এবং তারা বলেছে নিরাপদ। তাই আমার দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সেখানে যেতে হবে এবং ক্রিকেট খেলা শুরু করতে হবে।’
বাউচার যে ক্রিকেট নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছেন, সেটা পরিষ্কার। উপমহাদেশে সফর করতে আসা দলগুলো এখানকার স্পিন উইকেট নিয়ে মাথা ঘামায়।
তবে বাউচারের ধারণা, পাকিস্তানের উইকেটে তাঁরা ভালোই করবেন, ‘এটা কঠিন কিন্তু ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভিন্ন, সেখানে বল ঘোরে। পাকিস্তান বরং পেস বোলিংয়ের জন্য বেশি মানানসই। রিভার্স সুইং অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু এখন বল নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে (সুইংয়ের জন্য বল বিকৃতি) আইন অনেক কড়া। ঐতিহ্যগতভাবে তাদের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। ব্যাটসম্যান হিসেবে কোন দিকে রান তুলবেন, সেটা হয়তো ভিন্ন। (তবে) নিজেকে প্রয়োগ করলে সেখানে অনেক রান তোলা যায়।’
পাকিস্তানের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পরিসংখ্যান বেশ ভালো। এর আগে তিন টেস্ট সিরিজে দুবারই বিজয়ী তারা। দুটি দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজেও জয় তাদের। ২০০৭ সালে দুটি সিরিজেই জয় নিয়ে ফেরা বাউচার তাই দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী।
টেস্ট দলে ৯ জন পেসার রাখাও সিরিজ নিয়ে প্রোটিয়াদের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দিচ্ছে। বাউচারের খামতি শুধু ব্যাটিং নিয়ে। ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ব্যাটিং কোচ হিসেবে জ্যাক ক্যালিসের নিয়োগ দেওয়া অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছিল। সে কারণে আপাতত ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সফরে কাজ করছেন সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এ সফরে না পেলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে নিজের পাশে ক্যালিসকে চান বাউচার, ‘দলের পরিকল্পনায় আনার জন্য অনেক দিন ধরেই আমার নজরে আছে সে। আশা করি তাকে সঠিক উপায়েই সম্মান জানাব, কারণ বিশ্বজুড়েই কাজ করার আরও অনেক সুযোগ আছে তার। ওর বিষয়টা (না পাওয়া) বড় ক্ষতি কিন্তু আমি জানি জ্যাক দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কাজ করতে পারলে খুশি হবে। ওর যে জ্ঞান, সেটা কাজে লাগাতে হবে।’