২৭৭, ২৯৯, ২৯৬—এজবাস্টন টেস্টের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তিন টেস্টে বড় রান তাড়া করে জিতেছে ইংল্যান্ড। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শেষ দুই টেস্টে ভারত দুই শর সামান্য বেশি (২১২ ও ২৪০) লক্ষ্য দিয়ে সেটা রক্ষা করতে পারেনি। এজবাস্টন টেস্টেও এই ধারা বহাল রইল। আগের তিন টেস্টের মতো এবারও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইংল্যান্ড।
এজবাস্টনে আরও বড় অর্জনই হয়েছে ইংল্যান্ডের। আজ ভারতের বিপক্ষে ৩৭৮ রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছে বেন স্টোকসের দল। নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়েছে তারা। রেকর্ড গড়েছে ভারতও। টেস্টে এর আগে এত বেশি রানের পুঁজি নিয়ে কখনো হারেনি দলটি। এর আগে ১৯৭৭ সালে পার্থে ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৩৯ রান করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
জয়ের ভিতটা কালই গড়ে রেখেছিল ইংল্যান্ড। রান তাড়া করতে নেমে জো রুট ও জনি বেয়ারস্টোর অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের জুটিতে ৩ উইকেটে ২৫৯ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করেছিল তারা।
আজ সকালে রুট–বেয়ারস্টো যখন পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করেন, জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১১৯ রান। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কোচিংয়ে টেস্টে বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড এই রান তুলে নিতে বেশি সময় নেয়নি। আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে আজ মাত্র ৭৬.৪ ওভার ব্যাটিং করে প্রথম সেশনেই ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন রুট–বেয়ারস্টে।
দুজনে মিলে চতুর্থ উইকেটে ৩১৬ বলে ২৬৯ রানের জুটি গড়েছেন। রুট অপরাজিত ছিলেন ১৪২ রানে, বেয়ারস্টো করেছেন অপরাজিত ১১৪ রান। রুট আর বেয়ারস্টো যেন রান তোলার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন। সেই প্রতিযোগিতায় গতকাল বেয়ারস্টোর আগেই অর্ধশতক তুলে নেন রুট। ৭টি চারে ৭১ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতক। অর্ধশতক পূর্ণ করতে চার বল বেশি খেলেন বেয়ারস্টো। তবে রুট শতকও বেয়ারস্টের আগে পেয়েছেন। যদিও নব্বইয়ের ঘরে বেয়ারস্টোই আগে পৌঁছেছিলেন। রুট শতক করেন ১৩৬ বলে। দ্বিতীয় পঞ্চাশ রান করতেও প্রথম পঞ্চাশের সমান ৭টি চার মারেন তিনি। বেয়ারস্টোর শতক ১৩৮ বলে, ১২টি চার ও একটি ছয়ে।
প্রথম ইনিংসের ১০৬ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই প্রথম জোড়া সেঞ্চুরি পেলেন বেয়ারস্টো।
কেউ কেউ বলছেন, ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংটা খুব একটা ভালো হয়নি ভারতের বোলারদের। কিন্তু রুট–বেয়ারস্টো যে ব্যাটিং করেছেন, সেটা তো ম্যাককালামের অধীনে টেস্টে বদলে যাওয়া আক্রমণাত্মক ইংল্যান্ড দলেরই ছবি! বেয়ারস্টো না হয় একটু মারকুটে ব্যাটসম্যান, টেস্টেও সবধরনের শট খেলেন। কিন্তু রুটের মতো ব্যাকরণ মেনে ব্যাটিং করা কেউ যখন টেস্টে স্কুপ আর রিভার্স স্কুপ শট খেলেন, তখন তো বদলে যাওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবেই বলতে হয়!