জিম আর সুইমিংপুলে যেতে মানা...
ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ অতিথিপরায়ণ। এ অঞ্চলে ভ্রমণ করতে আসা বিশ্বের বাদ বাকি অঞ্চলের মানুষমাত্রই স্বীকার করেন তা। এবার দক্ষিণ আফ্রিকানরাও দেখাল তাঁরা কতটা অতিথিপরায়ণ!
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল এখন দক্ষিণ গোলার্ধের দেশটিতে। স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দলটি। সিরিজ শুরু আগামী শুক্রবার। কেপটাউনে একই হোটেলে আছে স্বাগতিক ও অতিথি দুই দলই। আর সেখানেই দক্ষিণ আফ্রিকানরা দেখাচ্ছে নিজেদের অতিথি সেবা করার যোগ্যতা!
ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা যেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হন, তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করে যাচ্ছে স্বাগতিকেরা। আর তা করতে গিয়ে নিজের দেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গেই বৈষম্যমূলক আচরণে করছে তারা। গত শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় এক ক্রিকেটার করোনা পজিটিভ হওয়ার পর নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ন করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ)। আর সেটা এমনভাবে করা হয়েছে যেন ম্যাচের আগে কোনো ইংলিশ ক্রিকেটার কোনো প্রোটিয়া ক্রিকেটারের ছায়াও না মাড়ান।
আমরা হোটেলের সবার ব্যবহার করার জায়গাগুলো ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। খাবারের জায়গাটা আগে থেকেই আলাদা ছিল।
আর তাতেই নিজভূমে পরবাসী অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের। হোটেলের জিম ও সুইমিংপুল ব্যবহার করতে পারছেন না তাঁরা। এই সুবিধা এখন ভোগ করছে শুধুই এউইন মরগানের দল। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেন দেখা না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হোটেলের মূল দরজাও ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে ফাফ ডু প্লেসিদের। এ কারণে হোটেল কর্মচারীরা যে দরজা দিয়ে যাতায়াত করেন, সেই দরজা ও হোটেলের জরুরি নির্গমণপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা শুয়াইব মাঞ্জরা ব্যাখ্যা করেছেন, কেন এমন ব্যবস্থা নেওয়া হলো, ‘আমরা হোটেলের সবার ব্যবহার করার জায়গাগুলো ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। খাবারের জায়গাটা আগে থেকেই আলাদা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় পজিটিভের খবর পাওয়ার পর হোটেল থেকে বেরোনো ও প্রবেশের পথও আলাদা করে দিয়েছি। দুই দল এখন পুরোপুরি ভিন্ন দুটি সুরক্ষাবলয়ে আছে।’
গত শুক্রবার থেকেই প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা হোটেলের জিম ও সুইমিংপুলে যাচ্ছেন না। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের জন্য হোটেলের আলাদা একটি কক্ষকে অস্থায়ী জিম বানানো হয়েছে। এমন পরিবেশে থাকতে যে ভালো লাগছে না, তা গত পরশু জানিয়েছিলেন কাগিসো রাবাদা। দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলারের কাছে জৈব সুরক্ষিত পরিবেশে থাকাকে ‘বিলাসবহুল কারাগার’ মনে হচ্ছে।
তবে আজ-কালের মধ্যে আবার সব খেলোয়াড় করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে ‘স্বাভাবিক’ অবস্থা ফিরে আসবে হোটেলে। রাবাদারা তখন জিমে যেতে পারবেন, সাঁতার কাটতে পারবেন পুলে, পাবেন মূল দরজা দিয়ে বেরোনো ও প্রবেশের অনুমতিও।