গেইল কি সেদিন নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন?
ভয়, দুশ্চিন্তা—এসব শব্দ ক্রিস গেইলের সঙ্গে যায় না। ক্যারিবিয়ানের জীবনে কিংবা বাইশ গজে এসবের স্থান নেই। জীবনটাই তাঁর উপভোগ করার। ব্যাটিংয়ে নেমে বোলারদের পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে এই আনন্দ ভাগ করে নেন দর্শকদের সঙ্গে। অথচ এবার আইপিএলে এই গেইল–ই নাকি একটু জড়োসড়ো ছিলেন!
ভ্রুকূটির আগে ঘটনাটা শুনুন। পরশু শারজায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে শেষ বলে হারায় গেইলের কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। অথচ ম্যাচটা পাঞ্জাবের এভাবে জেতার কথা ছিল না। গেইল উইকেটে থাকতে শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ৭ রান। ৪০ বলে গেইল তখন অপরাজিত ছিলেন ৫১ রান করে। ততক্ষণে তাঁর ৫টি ছক্কা মারা হয়ে গেছে। এখান থেকে ম্যাচটা হেসেখেলে জেতার কথা ছিল পাঞ্জাবের। কিন্তু দেখা গেল এর উল্টো, চোখ রগড়ে দেখার মতো দৃশ্য!
১৯তম ওভারে এসেছে ৫ রান। এর মধ্যে ব্যাটে ১ রান নিতে পেরেছেন গেইল। শেষ ওভারে দরকার পড়ে ২ রান। বেঙ্গালুরু স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল আসেন শেষ ওভারে। সবাইকে অবাক করে প্রথম ২টি বল ‘ডট’ দেন গেইল। পরের বলে নেন ১ রান। এরপর পঞ্চম বলে গিয়ে গেইল রান আউট! খুব সহজ লক্ষ্য থেকে ১ বলে ১ রানের সমীকরণে পড়ে যায় পাঞ্জাব। নিকোলাস পুরান শেষ বলে ছক্কা না মারলে পাল্টে যেতে পারত ম্যাচের ফল। এ ম্যাচের পরই প্রশ্ন উঠেছিল—যে গেইলের সামনে পড়লে ভয়ের স্রোত বেয়ে যায় বোলারদের শিঁরদাড়ায়, সেই ব্যাটসম্যানই ম্যাচের ওই মুহূর্তে অমন কুঁকড়ে গিয়েছিলেন কেন? গেইল কি তবে ‘নার্ভাস’ হয়ে পড়েছিলেন?
না। অন্তত গেইলের নিজের ভাষ্য তেমনই। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘নাহ, তেমন কিছু না। ইউনিভার্স বস ব্যাট করছে, কীভাবে নার্ভাস হওয়া সম্ভব। (তখন) অনেকের হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, তবে আমি ভেবেছিলাম সব নিয়ন্ত্রণেই আছে। ক্রিকেটে অনেক সময় অদ্ভুত সব ব্যাপার ঘটে থাকে।’
এবার আইপিএলে এটাই ছিল গেইলের প্রথম ম্যাচ। তার আগে ৭ ম্যাচ পাঞ্জাবের বেঞ্চে বসে ছিলেন তিনি। মাঝে পেটের পীড়ায়ও ভুগেছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। পাঞ্জাব ভীষণ বাজে অবস্থা কাটাতে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে তাঁকে মাঠে নামিয়ে সুফল তুলে নিয়েছে। প্রথম ম্যাচে ভালো ব্যাট করার পর গেইল এখন আত্মবিশ্বাসী। তাঁর ভাষায়, ‘অধিনায়ক আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তা পালন করতে পেরেছি। দলের জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বেঞ্চে বসে থাকতে ভালো লাগে না, তবে পেটের পীড়া ছাড়া সময়টা উপভোগ করেছি। ইনিংসটা ভালো ছিল। ২০২১ আইপিএলে এখন নিয়মিত হতে পারি।’