ইনজামামের বিশ্বকাপ দল দেখে না চমকানো কঠিন
পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলটা নির্বাচন করেছেন ইনজামাম-উল-হক। শেষ মুহূর্তে ওয়াহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ আমিরকে দলে টেনে অনেককেই চমকে দিয়েছেন ইনজামাম। তবে সেটাও ম্লান করে দিয়েছেন পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বাছাই করতে গিয়ে। ইনজামামের সেরা বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন কামরান আকমল।
উইকেটের পেছনে কামরান আকমলের অবিশ্বস্ত হাত পাকিস্তানকে অসংখ্য ম্যাচে ভুগিয়েছে। তবু ব্যাট হাতে তাঁর কিছু পারফরম্যান্স মিলিয়ে তাঁকে দলে রেখেছেন ইনজামাম। তবে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধান নির্বাচক সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছেন ওপেনার বেছে নিতে গিয়ে। কখনো বিশ্বকাপ না খেলা শারজিল খান জায়গা পেয়েছেন ইনজামামের দলে!
নির্বাচক হিসেবে ইনজামামের সময় শেষে হয়ে এসেছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ফল যা–ই হোক না কেন, পদ থেকে সরে যাবেন ইনজামাম। তাঁর অধীনেই বহুদিন পর বিশ্বমঞ্চে কোনো সাফল্য পেয়েছে পাকিস্তান। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ফখর জামানের অন্তর্ভুক্তির পেছনে ইনজামামের অবদানই বেশি দেখেন সবাই। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ফখরের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে শিরোপা উৎসব করার সুযোগ পেয়েছে পাকিস্তান।
সে সাফল্যের পর এ বিশ্বকাপেও পাকিস্তান দল নির্বাচন করেছেন ইনজামাম। মোহাম্মদ হাসনাইন ও শাহিন শাহ আফ্রিদিদের মতো তরুণদের দলে ডেকেছেন। আবার ওয়াহাব রিয়াজের মতো দুই বছর ব্রাত্য থাকা অভিজ্ঞকেও নিয়ে এসেছেন। পাকিস্তানের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যকে এবার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা পাকিস্তান দল নির্বাচন করতে বলা হয়েছিল। ইনজামামের সে দল দেখে চমকে উঠেছেন সবাই। তবে শারজিলকে দলে রাখার পেছনে ইনজামামের যুক্তি, ‘সাঈদ আনোয়ার ও মাজিদ খানের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে আমি শারজিলকে বেছে নেব। শারজিল অবিশ্বাস্য প্রতিভাধর, এটা একটা লজ্জার ব্যাপার যে ওর ক্যারিয়ার এভাবে থেমে গেছে।’
লজ্জার ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করা যাক, ২০১৭ পাকিস্তান সুপার লিগে দুর্নীতির কারণে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন শারজিল। ৪ বছরের ক্যারিয়ারে ২৫টি ওয়ানডে খেলা শারজিল শুধু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একবার সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে ফিফটি করার পর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঢোকার সুযোগ পাননি।
এরপরই ইনজামামের দ্বিতীয় প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত। পাকিস্তানের হয়ে উইকেট রক্ষার কাজ করে বিখ্যাত হওয়া ক্রিকেটারের সংখ্যা কম নয়। ওয়াসিম বারি, রশিদ লতিফদের বেছে না নেওয়ার কারণ থাকতে পার। কিন্তু পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবং ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য মঈন খানের বাদ পড়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ। ক্রিকেটে গত এক যুগে উইকেটরক্ষকদের ভুল নিয়ে যেকোনো লেখার ৮০ ভাগই যে কামরান আকমলের অবদান!
ইনজামামের দলের বাকিদের অবস্থান নিয়ে অবশ্য কোনো প্রশ্ন নেই। পেস বোলিংয়ে সুইং, লাইন লেংথ ও গতি—তিন দিকই সামলে নেওয়া হয়েছে। স্পিন বিভাগে অফ ও লেগ স্পিনকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মিডল অর্ডারেও আছেন সব পরিচিত মুখ। আর এ দলের অধিনায়ক অবশ্যই ইমরান খান।
ইনজামামের পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ দল: শারজিল খান, সাঈদ আনোয়ার, মাজিদ খান, জহির আব্বাস, জাভেদ মিয়াঁদাদ, মোহাম্মদ ইউসুফ, কামরান আকমল, ইমরান খান, আবদুল কাদির, সাকলায়েন মুশতাক, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতার।