আহমেদাবাদের গরমে শুকিয়ে গেছেন স্টোকসরা
অথচ প্রথম টেস্টের পর ইংল্যান্ড দলটাকে কী শক্তিশালীই না মনে হয়েছে। অধিনায়ক জো রুট ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে, জিমি অ্যান্ডারসনের সুইং বিষে নীল প্রতিপক্ষ।
ডম বেস ও জ্যাক লিচ উপমহাদেশের স্পিনিং উইকেট পেয়ে যেন একেকজন জাদুকর বনে গিয়েছিলেন! কিন্তু দ্বিতীয় টেস্ট থেকে সেই দলটাই কেমন ভোজবাজির মতো অচেনা হয়ে গেল!
রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর, রোহিত শর্মাদের নৈপূণ্যে ইংল্যান্ড বাকি তিন টেস্টে একদমই কল্কে পায়নি। শেষ দুই টেস্টে স্পিনিং পিচ পড়তে গিয়ে বারবার খাবি খান ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা।
কিন্তু শুধুই কী পিচের কারণে ইংল্যান্ডের এমন হতোদ্যম দশা? বেন স্টোকসের কথা শুনে মনে হবে, আরও কিছু কারণ তো অবশ্যই ছিল।
কী সেই কারণ? স্টোকস বলেছেন, আহমেদাবাদের গরমে তাঁদের একেকজনের ওজন কমে যাচ্ছিল ভীষণভাবে। অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলেন সবাই। এর মধ্যে টেস্ট কীভাবে জেতে একটা দল? তার ওপর ভারতের মতো ইনফর্ম একটা দলের বিপক্ষে তাদেরই ঘরের মাঠে?
স্টোকস জানিয়েছেন, তীব্র গরমে চতুর্থ টেস্টে অনেক ইংলিশ ক্রিকেটারেরই ওজন কমে গিয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছেন তিনি নিজেও, ‘ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের আত্মনিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। আমার মনে হয় এটা আরও বেশি প্রমাণিত। কারণ, আমরা অসুস্থতা নিয়েও চতুর্থ টেস্ট খেলেছি। ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রায় খেলা অনেক কষ্টকর ছিল। আমার এক সপ্তাহে পাঁচ কেজি ওজন কমেছে। ডম সিবলির ওজন কমেছে চার কেজি। জিমি অ্যান্ডারসনের তিন কেজি। জ্যাক লিচ বল করার মাঝে মাঝে টয়লেটে ছুটছিল। স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি সময় ধরে টয়লেটে থাকছিল।’
তবে নিজেদের বাজে পারফরম্যান্সের জন্য এটাকে বাহানা বানাতে চাননি স্টোকস। মিরর স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টোকস বলেছেন, ‘আমি কোনো বাহানা দিচ্ছি না। কারণ, সবাই খেলার জন্য প্রস্তুত ছিল। ভারত আর ঋষভ পন্ত দুর্দান্ত খেলেছে। তবে আমি আমার খেলোয়াড়দের টুপিখোলা সম্মান দিতে চাই; কারণ, এত কিছুর মধ্যেও তাঁরা তাঁদের সর্বোচ্চ দিয়ে ইংল্যান্ডের জন্য ম্যাচ জেতার চেষ্টা করেছেন।’
ভালো না খেলার জন্য স্বাভাবিকভাবেই দলের তরুণ খেলোয়াড়দের সমালোচনার তিরে বিদ্ধ করা হচ্ছে। স্টোকস সেসব পাত্তাই দিচ্ছেন না, ‘বিশ্লেষকেরা তাঁদের কাজ করছেন ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের ভালো খেলোয়াড় আর ভালো দল হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব তাঁদের নয়, আমাদের। ওদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। নিজের কোচ, সতীর্থ অধিনায়ক—তাঁদের কথাই মাথায় রাখতে হবে। বাইরে কে কী বলল, না বলল ওদিকে নজর দেওয়ার দরকার নেই। আমি চাইব কোনো খেলোয়াড়ই যেন নিজেদের খারাপ খেলোয়াড় না ভাবে এই সিরিজ শেষ হওয়ার পর। বিশেষ করে ডম সিবলি, জ্যাক ক্রলি ও ওলি পোপের মতো তরুণেরা। ওদের জন্য এই সফরটা একটা ভালো শিক্ষাসফরের মতো ছিল। এখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে ওদের এগিয়ে যেতে হবে। ওরা অনেক প্রতিভাবান।’
চতুর্থ টেস্টে এক ইনিংস ও ২৫ রানে হেরেছে ইংল্যান্ড। সিরিজ হেরেছে ৩-১ ব্যবধানে।