বিপিএল ফাইনাল নিয়ে চিটাগং কিংসের গেম প্ল্যানিংয়ে নিশ্চয়ই ব্যাপারটি আলোচনায় এসেছে। ফাইনালে প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশালের সেরা ব্যাটসম্যানটি কে?
ফাইনালের পরিসংখ্যান বলছে চট্টগ্রামেরই ছেলে এবং বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ১৩ ইনিংসে ৩৫৯ রান নিয়ে এবারের বিপিএলে তামিমই বরিশালের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান। ফাইনালে তাঁকে নিষ্ক্রিয় রাখা কিংবা দ্রুত আউট করাটা হবে বোলিংয়ে নেমে চিটাগংয়ের প্রথম লক্ষ্য।
ভাবতে পারেন, আরও ব্যাটসম্যান তো আছে! তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে অন্য প্রান্তে নামা তাওহিদ হৃদয়ও কম বিপজ্জনক নয়। এই চিটাগংয়ের বিপক্ষেই প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলেছেন অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস। তিনে নামা ডেভিড ম্যালানও আছেন রানের মধ্যে। কিন্তু চিটাগংয়ের টিম অ্যানালিস্ট নিশ্চয়ই জানেন, বিপিএল ফাইনালে প্রতিপক্ষ দলে তামিম থাকলে তাঁকে সবার আগে আউটের পরিকল্পনা করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের ফাইনালে তামিমের ব্যাট যে কখনো হতাশ করেনি।
বিপিএল ফাইনালে তামিমের রানই সবচেয়ে বেশি। ২ ম্যাচে করেছেন ১৮০ রান। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ক্রিস গেইলের চেয়ে বিপিএল ফাইনালে ১ রান বেশি করে শীর্ষে এই বাঁহাতি। গেইলও খেলেছেন ২ ফাইনাল, রান ১৭৯। বিপিএল ফাইনালে সেঞ্চুরি আছে শুধু দুজনেরই। বিপিএল ফাইনালে রান করায় শীর্ষ দশে বাকিদের সঙ্গে তামিমের পার্থক্য আরও আছে। লিটন দাস কিংবা সাকিব আল হাসানের মতো তারকা ৫টি বিপিএলের ফাইনাল খেলেও রান তোলায় তামিমের চেয়ে ন্যূনতম ৫০ রানের বেশি ব্যবধানে পিছিয়ে। ৫ ফাইনালে লিটনের মোট রান ১০৩। সাকিব লিটনের সমানসংখ্যক ফাইনাল খেলে ৮৯ রান করেছেন।
বিপিএলের ফাইনালে পাঁচ ব্যাটসম্যান তাঁদের রানসংখ্যাকে ন্যূনতম ১০০ এর ওপাশে নিতে পেরেছেন। তামিম, গেইল ও লিটনের কথা তো বলাই হলো। বাকি দুজন হলেন—এনামুল হক ও মুশফিকুর রহিম। ৩ ফাইনালে ১৩১ রান এনামুলের, মুশফিকও তাঁর সমানসংখ্যক ফাইনালে করেছেন ১০৮ রান। তবে একজন আজ এই ক্লাবে নাম লেখাতে পারেন—মাহমুদউল্লাহ। ৩ ফাইনালে ফরচুন বরিশালের এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের রানসংখ্যা ৯৯।
তামিম বিপিএল ফাইনালে স্ট্রাইক রেটের হিসাবেও বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। ফাইনালে অন্তত ৫০ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তাঁর স্ট্রাইক রেটই সর্বোচ্চ ২০৬.৮৯। গেইলের মতো বিশ্বের ভয়ংকরতম ব্যাটসম্যানদের একজনও এই তালিকায় তামিমের চেয়ে পিছিয়ে—১৭৯.০০। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলে গেইলের একসময়ের সতীর্থ সুনীল নারিন বিপিএল ৫ ফাইনালে ৫৭ রান করেছেন ১৮২.৯৭ স্ট্রাইক রেটে।
২০১৯ সালে মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৬১ বলে অপরাজিত ১৪১ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। অনেকের মতেই সেটি টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের অন্যতম সেরা ইনিংস। ম্যাচটি ১৭ রানে জিতেছিল তামিমের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
গত বছর মার্চে একই ভেন্যুতে সর্বশেষ বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লার বিপক্ষে ২৬ বলে ৩৯ রানে আউট হন তামিম। ম্যাচটি ৬ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তামিমের দল ফরচুন বরিশাল। আজ সেই একই ভেন্যুতে ক্যারিয়ারের তৃতীয় বিপিএল ফাইনাল খেলবেন তামিম। বড় রান তো বরিশাল অধিনায়কের কাছ থেকে আশাই করা যায়। এ কারণে আজকের ফাইনালে ‘ঘরের ছেলে’ তামিমকে নিয়েই চিটাগংয়ের ভয়টা বেশি থাকার কথা।