চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলেই, নিশ্চিত করল আইসিসি
অবশেষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘিরে অচলাবস্থার অবসান। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি জানিয়েছে, ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে খেলতে যাবে না, পাকিস্তানও তাদের ক্রিকেট দলকে ভারতে পাঠাবে না। ২০২৪–২৭ চক্রের সব আইসিসি টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে।
এ সময় ভারত ও পাকিস্তান অপর দেশ আয়োজিত টুর্নামেন্টে নিজেদের ম্যাচ খেলবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। যার শুরুটা হবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আয়োজিত ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে।
আজ আইসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আইসিসি টুর্নামেন্টে হাইব্রিড মডেল চালু হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের অনড় অবস্থানের কারণে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি–মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পিসিবি, তবে নভেম্বরে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আইসিসিকে জানিয়ে দেয়, সরকার পাকিস্তানে দল পাঠাবে না। ম্যাচ খেলতে চায় অন্য কোথাও।
ভারতের এমন সিদ্ধান্তে বেঁকে বসে পিসিবি। জানিয়ে দেয়, ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে না এলে পাকিস্তানও ভারতে খেলতে যাবে না। দুই দেশের এমন অবস্থানের মধ্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি ঘোষণা ঝুলে যায়, যা নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই প্রকাশিত হওয়ার কথা।
দুই প্রতিবেশী দেশের অনড় অবস্থার মধ্যেই পেরিয়ে গেছে এক মাসের বেশি সময়। এ সময় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ভারতের চাওয়া অনুযায়ী হাইব্রিড মডেল মেনে নিতে কয়েকটি শর্ত দেয়। এর মধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ভারতে না পাঠানো, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সব ম্যাচ আয়োজন না করতে পারার ক্ষতিপূরণ, আরেকটি আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব এবং ভারত ও অন্য একটি দেশকে নিয়ে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট আয়োজনের শর্ত ছিল।
আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সামনের চারটি আইসিসি ইভেন্টে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের দেশে যাবে না। এর মধ্যে পাকিস্তান আয়োজিত দুটি টুর্নামেন্ট হচ্ছে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি–মার্চে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও ২০২৮ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আর ভারত আয়োজিত দুটি টুর্নামেন্ট হচ্ছে ২০২৫ সালের আইসিসি নারী ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ও ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের সঙ্গে যৌথ আয়োজক হিসেবে শ্রীলঙ্কা আছে। যে কারণে পাকিস্তানের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কাতেই রাখা হবে। অন্য তিনটি টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আর ক্ষতিপূরণ ও ত্রিদেশীয় সিরিজের বিষয়ে কিছু জানানো না হলেও পাকিস্তানকে ২০২৮–৩১ চক্র থেকে নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব দেওয়া হয়েছে।
নিরপেক্ষ ভেন্যু চূড়ান্ত হবে আয়োজক বোর্ডের প্রস্তাব ও আইসিসির অনুমোদন সাপেক্ষে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য নিরপেক্ষে ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম আলোচনায় আছে। তবে শ্রীলঙ্কায়ও ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
২০২৩ এশিয়া কাপও হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবারও ভারত তাদের ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে পাঠাতে রাজি হয়নি। পরে আয়োজক স্বত্ব পিসিবির থাকলেও টুর্নামেন্টের বেশির ভাগ ম্যাচ হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়।
ভারত ক্রিকেট দল ২০০৮ সালের পর পাকিস্তান সফরে যায় না। তবে ২০১৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তান দল ভারতে গিয়েছিল।
নতুন সমঝোতায় এখন আনুষ্ঠানিকভাবেই ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে যাবে না, পাকিস্তান ক্রিকেট দলও ভারতে যাবে না।