টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বাবরকে অনুসরণের পরামর্শ শাস্ত্রীর
চাপের ম্যাচগুলোতে সফল হতে গেলে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের বাবর আজমের ব্যাটিংয়ের ধরন অনুসরণ করতে বলেছেন ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী। অন্যদিকে এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচে ভারতকেই ফেবারিট মনে করলেও পাকিস্তান আগের চেয়ে ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে এনেছে বলেও মনে করেন সাবেক এ অলরাউন্ডার।
নেপালের বিপক্ষে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাবর। পাকিস্তান অধিনায়কের এটি ছিল ওয়ানডেতে মাত্র ১০২তম ইনিংস। এখনকার ওয়ানডেতে দলগুলোর সফল হতে গেলে বাবরকে অনুসরণ করতে বলেছেন শাস্ত্রী। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোকে তিনি বলেছেন, ‘সে ৩০ ও ৪০ রানের ইনিংসগুলোকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করে। এবং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কয়েকটি বল খেলার কথা বলি ক্রিজে নেমে। কিন্তু শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যানের কেউ যদি সেঞ্চুরি পায়, আপনি ৩০০ রানের বেশি স্কোর পাবেন।’
অবশ্য বাবরের এমন প্রশংসা করলেও আগামীকাল পাল্লেকেলের লড়াইয়ে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল পাকিস্তানের চেয়ে তিন নম্বর দল ভারতকেই এগিয়ে রেখেছেন শাস্ত্রী। তাঁর মতে, ‘আমি ভারতকেই ফেবারিট বলব। ২০১১ সালের পর থেকে এটিই তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দল। এই খেলোয়াড়েরা এবং একজন অধিনায়ক, যে পোড় খাওয়া, যে এই ক্ষেত্রটা অনেকের চেয়েই ভালো বোঝে।’
তবে পাকিস্তানকেও খুব একটা পিছিয়ে রাখছেন না তিনি, ‘এটাও বলতে হবে, পাকিস্তান ব্যবধান কমিয়ে এনেছে। সাত-আট বছর আগে দুই দলের শক্তিমত্তা, খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা ব্যবধান ছিল। তবে পাকিস্তান সেটি কমিয়ে এনেছে। তারা খুবই ভালো দল, ফলে (তাদের হারাতে) আপনার সেরাটা দিতে হবে।’
অবশ্য ভার-পাকিস্তানের মতো এমন চাপের ম্যাচে খেলোয়াড়দের সাম্প্রতিক ফর্মের চেয়ে টেম্পারমেন্ট বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন শাস্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘এটিই গুরুত্বপূর্ণ—শান্ত থেকে এটিকে আরেকটি ম্যাচ বলে বিবেচনা করা। নিজের মনে এটি নিয়ে বেশি উত্তেজিত না হওয়া, যাতে আপনি ভিন্নভাবে ভাবতে পারেন। অন্য যেকোনো ম্যাচের মতোই খেলতে হবে। কিন্তু অবচেতন মনে যে চাপ, সেটির কারণে মানসিক দিক দিয়ে শক্ত মানুষেরা কাজটা ঠিকঠাক করতে পারে।’
সব মিলিয়ে আরেকটি রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের আশা শাস্ত্রীর, ‘দুই দলের খেলোয়াড়দের দিকে তাকালে দেখবেন, তারা দারুণ। দারুণ এক প্রদর্শনী হবে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে কে চাপ ভালোভাবে সামলাতে পারে, কে বেশি স্থিতধী, কার চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়া বেশি পরিষ্কার—তারাই বড় মঞ্চে পারফর্ম করে বেরিয়ে আসতে পারে।’
এ কারণে সাম্প্রতিক ফর্মেও কিছু যায় আসে না বলেও মনে করেন তিনি, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ফর্ম দিয়ে কাউকেই বিচার করবেন না। কারণ, কঠিন মানসিকতার ছেলেরা হয়তো ছয় মাস আগে তেমন কিছু করেনি, কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে তারা ঠিকই এগিয়ে আসবে। তারা এ ম্যাচের গুরুত্ব জানে, তারা জানে ভালো করলে তারা কোথায় চলে যাবে। তারা ঠিকই টগবগ করবে।’
ভালো করার জন্য আরেকটি ব্যাপারেও গুরুত্ব দিয়েছেন শাস্ত্রী, সেটি হচ্ছে ফিল্ডিং। এ ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টেনেছেন তিনি, ‘ফিল্ডিংও গুরুত্বপূর্ণ হবে। কারা ভালো ফিল্ডিং করছে, সেটি দেখতে হবে। শ্রীলঙ্কা গতবার এশিয়া কাপ জিতেছিল ফিল্ডিংয়ে ভর করেই। ১৯৯৬ সাল থেকেই তারা উপমহাদেশের সেরা ফিল্ডিং দল, গত এশিয়া কাপে অসাধারণ ছিল। তারাই শিরোপাজয়ী, সেটি ভুললে চলবে না। শ্রীলঙ্কান কন্ডিশনে তাই তাদের বাদ দেওয়া যাবে না। আর ভারতের ফিল্ডিংয়ে যদি উন্নতি হয়, তাহলে তারা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’