বিপিএল: প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুরের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা
বিপিএলে প্রথম কোয়ালিফায়ার গতকালই নিশ্চিত করেছে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ দল রংপুর রাইডার্স। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের মুখোমুখি হয়েছিল পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। জিতলে শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হতো কুমিল্লার এবং তাতে নিশ্চিত হতো কোয়ালিফায়ারও। ১৪ বল হাতে রেখে রংপুরকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সে লক্ষ্য পূরণ করেছে লিটনের কুমিল্লা।
টসে জিতে রংপুরকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন। জিমি নিশামের ৪২ বলে অপরাজিত ৬৯ রান ছাড়া রংপুরের আর কেউই বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। ১৯.৫ ওভারে ১৫০ রানে অলআউট হয় রংপুর।
তাড়া করতে নেমে প্রথমে লিটন ও মাহিদুল ইসলাম এবং পরে মঈন আলী ও আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে জিতেছে কুমিল্লা। ৪২ বলে ৪৩ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে আউট হন লিটন। ২৯ বলে ৩৯ রান করা মাহিদুলকে ফেরান রংপুরের পেসার আবু হায়দার। তবে কুমিল্লার এই ম্যাচটা জেতার পেছনে রাসেলের অবদানই বেশি। ৪ ছক্কা ও ৪ চারে ১২ বলে ৪৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন ক্যারিবিয়ান তারকা।
এই হারের পরও ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রংপুর। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে কুমিল্লা। শেষ চারের লড়াই শুরুর আগে প্রতি দল খেলবে ১২টি করে ম্যাচে। রংপুরের মতো লিগ পর্বে ১২ ম্যাচের সব কটি খেলে ফেলা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় এবং ১১ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চারে ফরচুন বরিশাল। অর্থাৎ কুমিল্লা লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ হারলে এবং বরিশাল নিজেদের শেষ ম্যাচ জিতলেও কুমিল্লাকে হটিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারবে না। ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম কোয়ালিফায়ারে তাই রংপুরের প্রতিপক্ষ কুমিল্লাই।
কুমিল্লার প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকেই তুলে নেন সাকিব। পঞ্চম ওভারে দলীয় ৩৬ রানে সুনীল নারাইনকে শামীম হোসেনের ক্যাচ বানানোর পর ২ বল পর আবারও উইকেট! এবার সাকিবের শিকার তাওহিদ হৃদয়। ০ রানে রনি তালুকদারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তাওহিদ। কুমিল্লা এরপর এগিয়েছে তৃতীয় উইকেটে লিটন-মাহিদুলের ৫৫ বলে ৬৫ রানের জুটিতে। ১৪তম ওভারে এসে তাঁদের জুটি ভেঙেছেন সাকিব। তুলে নেন লিটনকে। পরের ওভারে মাহিদুলও আবু হায়দারের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মেহেদী হাসানকে। টানা ২ ওভারে ২টি উইকেট হারিয়ে একটু চাপেই পড়েছিল কুমিল্লা।
জয়ের জন্য তখনো ৩৩ বলে দরকার ৪৮ রান। তবে শক্তির জায়গাও ছিল কুমিল্লার। উইকেটে তখন এই সংস্করণের দুই পরীক্ষিত ‘সেনা’ আন্দ্রে রাসেল ও মঈন আলী।
দুজন শুরুতে একটু থিতু হন। এক প্রান্তে মঈন থাকায় অন্য প্রান্ত থেকে হাত খুলে খেলতে দ্বিধা করেননি রাসেল। বিশেষ করে ১৭তম ওভারে ঝালটা টের পেয়েছেন রংপুরের পেসার হাসান মাহমুদ। তাঁর ওই ওভারের আগে জয়ের জন্য ২৪ বলে ৩৩ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। ২ ছক্কা ও ৩ চারে হাসানের ওভার থেকে মঈন-রাসেল ২৫ রান (রাসেল একাই নিয়েছেন ২৪) নেওয়ার পর ম্যাচ প্রায় তখনই শেষ হয়ে যায়। জয়ের জন্য এরপর ১৮ বলে ৮ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। ১৮তম ওভারে রাসেল-মঈন মিলে আনুষ্ঠানিকতাটুকু সেরে ফেলেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি রংপুর। ৯ ওভারের মধ্যে ৬৮ রান তুলতে নেই ৫ উইকেট। ম্যাথু ফোর্ড, মুশফিক হাসান ও রাসেলের বোলিংয়ের জবাব ছিল না রংপুরের ব্যাটসম্যানদের কাছে। ২ ছক্কা ও ৯ চারে এক নিশামই যা একটু জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রাইডার্স: ১৯.৫ ওভারে ১৫০ (নিশাম ৬৯, সাকিব ২৪, রনি ১৪, মেহেদী ৮, মুরস ৮; রাসেল ৩/২০, মুশফিক ৩/১৮, ফোর্ড ২/৩২, তানভীর ১/১২)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ১৭.৪ ওভারে ১৫১/৪ (লিটন ৪৩, রাসেল ৪৩*, মাহিদুল ৩৯, নারাইন ১৫; সাকিব ৩/২০, আবু হায়দার ১/২০)
ফল: কুমিল্লা ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: আন্দ্রে রাসেল (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস)