বলছেন সাকিব: ‘এটা খুবই বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী’
কোনো অজুহাত দেননি সাকিব আল হাসান। পাকিস্তানি বোলাররা এতটাই ভালো, যেকোনো উইকেটেই তাঁদের মুখোমুখি হওয়া কঠিন। কিন্তু বাংলাদেশ তো খুব ভালো বলে উইকেট দিয়ে আসেনি। দিয়েছে বাজে শট খেলে। লাহোরের গাদ্দামি স্টেডিয়ামে বুধবার ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী টেলিভিশনের সঞ্চালকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাকিবের সহজ স্বীকারোক্তি, ‘আমরা কিছু বাজে শট খেলেছি। এমন উইকেটে ১০ ওভারের মধ্যে ৪ উইকেট হারানো মোটেই ঠিক হয়নি। এ রকম উইকেটে এটা খুবই বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী।’
দশম ওভারে ৪৭ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাকিবই মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি গড়ে সেই আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু সাকিবের আউটে ১২০ বলে ১০০ রানের সেই জুটি ভেঙে যাওয়ার পরই আবার ধসে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। সাকিব নিজেই এই দায় নিলেন কিছুটা, ‘আরও ৭-৮ ওভার থাকা দরকার ছিল, আমাদের জুটিটা আরও কিছুক্ষণ থাকলে লড়াই করার মতো স্কোর পাওয়া যেত। কিন্তু আমি আউট হওয়ার পর আর কোনো জুটিই হলো না।’
বাংলাদেশের ব্যাটিং যে কতটা বাজে হয়েছে, অধিনায়ক সাকিব সেটা বোঝালেন তাঁর দলের বোলারদের প্রশংসা করতে গিয়ে। তাসকিন-শরীফুলদের বোলিংকে পাকিস্তানি বোলিংয়ের সঙ্গে তুলনা করে সাকিব বলেছেন, ‘ওদের দলে তিন পেসার আছে, যারা কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছে ওদের জন্য। আমরাও বোলিং বিভাগে বেশ ভালো করছি। কিন্তু আমাদের ব্যাটিংটা কখনো ভালো হয়, কখনো খারাপ। পাকিস্তানের মতো আমাদের বোলাররাও কয়েক বছর ধরে ভালো বোলিং করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন উইকেটে যদি ব্যাটসম্যানরা ভুল না করে, আপনি উইকেট পাবেন না।’
হার দিয়ে সুপার ফোর শুরু করা বাংলাদেশ পরের ম্যাচটা খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোয়, ৯ সেপ্টেম্বর। সেই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা সাকিবের, ‘আমি যখন সেখানে এলপিএল খেলেছিলাম, দেখেছি, পিচ কিছুটা ধীরগতির, কিছুটা উঁচু-নিচু। সেটা হয়তো আমাদের সাহায্য করবে। আশা করি, আমরা কলম্বোয় ভালো করব।’
সাকিবের মতো নিজের পেসারদের প্রশংসা করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমও। এই টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দারুণ ছন্দে শাহিন শাহ আফ্রিদি-নাসিম শাহ-হারিস রউফরা। এই ম্যাচে ছিলেন আরেক পেসার ফাহিম আশরাফও। চারজন মিলে নিয়েছেন বাংলাদেশের ৯ উইকেট। বাবর মুগ্ধ তাঁর পেস আক্রমণ নিয়ে, ‘এত গরমের মধ্যেও এমন দারুণ বোলিং! প্রথমে শাহিন, তারপর হারিস। আমরা ফাহিমকেও নিয়েছিলাম। কারণ, আগের দিন উইকেটে ঘাস দেখেছি এবং আমাদের সেটা ভালো লেগেছে। সবাই দারুণ বোলিং করেছে।’
এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হচ্ছে এশিয়া কাপের পাকিস্তান পর্ব। বাকি সব ম্যাচ শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে। যেখানে পাকিস্তানের পরের ম্যাচটাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে, ১০ সেপ্টেম্বর। এই জয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাস সেই ম্যাচেও কাজে লাগবে বলে মনে করেন বাবর, ‘এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। আমরা সব সময়ই বড় ম্যাচের জন্য তৈরি। পরের ম্যাচে শতভাগ দিতে তৈরি আমরা।’
বাবরের মতো ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে শতভাগ দিয়ে লড়তে চান ১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হারিস রউফও। তবে এর বাইরেও এশিয়া কাপে ব্যক্তিগত একটা লক্ষ্য আছে তাঁর। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে সেটা সরাসরিই বলে দিয়েছেন, ‘নিজের জন্য আমি একটা বড় লক্ষ্য ঠিক করেছি, আমি এশিয়া কাপের প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ হতে চাই।’