২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ওল্ড ট্রাফোর্ডে অ্যাশেজ: ওয়ার্নের ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ থেকে জিম লেকারের ১০

১৯৯৩ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেন ওয়ার্নের সেই জাদুকরী বলে বোল্ড হয়েছিলেন মাইক গ্যাটিংছবি: এএফপি

ওল্ড ট্রাফোর্ডে অ্যাশেজ বলতেই প্রথমে কী মনে আসে ক্রিকেটপ্রেমীদের?

ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের এই মাঠে ইংল্যান্ড–অস্ট্রেলিয়া প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল ১৮৮৪ সালে। সেই টেস্ট থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এখানে অ্যাশেজের ৩০টি টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইংল্যান্ড জিতেছে ৭টিতে, অস্ট্রেলিয়া ৮টি। ড্র হয়েছে ১৫টি টেস্ট।

সংখ্যা আর জয়–পরাজয়ের হিসাব ছাপিয়েও ম্যানচেস্টারের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ড অ্যাশেজের দুটি ঘটনার জন্য বিখ্যাত—একটি শেন ওয়ার্নের সেই বিখ্যাত ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ আর জিম লেকারের ১৯ উইকেট নেওয়ার কীর্তি।

অ্যাশেজে এই মাঠে টেস্ট ড্র হওয়ার একটা পরম্পরা আছে। ১৮৮৪ সালে প্রথম অ্যাশেজ টেস্ট অনুষ্ঠিত হলেও ইংল্যান্ড এখানে প্রথম জিতেছিল ১৮৮৬ সালে। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল আরও ১০ বছর পর—১৮৯৬ সালে। ১৯০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ইনিংস ব্যবধানে জয়ের পর পরবর্তী ৫১ বছর এই মাঠে অ্যাশেজ টেস্ট ছিল নিষ্ফলা। টানা ৮টি টেস্ট তখন ড্র হয়েছিল।

প্রথম আলো গ্রাফিক্‌স

১৯৫৬ সালে এই গেরো খুলেছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ডই। সে ম্যাচেই ইতিহাস গড়েছিলেন জিম লেকার। এক ইনিংসে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট প্রথমবারের মতো তুলে নিয়েছিলেন এই ইংলিশ স্পিনার। দুই ইনিংস মিলিয়ে লেকার নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার সেই রেকর্ড ৩৪ বছর একার করে রেখেছিলেন লেকার। ১৯৯৯ সালে দিল্লিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেট তুলে নিয়ে তাঁর পাশে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে বসেন ভারতের অনিল কুম্বলে। ২০২১ সালে জিম লেকার ও অনিল কুম্বলের পর টেস্টের এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়া তৃতীয় বোলার নিউজিল্যান্ডের এজাজ প্যাটেল।

আরও পড়ুন
ওল্ড ট্রাফোর্ডেই জিম লেকার প্রথম তুলে নিয়েছিলেন ইনিংসে ১০ উইকেট
ছবি: সংগৃহীত

ষাটের দশকে এই মাঠে অস্ট্রেলিয়া মোটামুটি দাপট দেখিয়েছে। জিতেছে দুটি টেস্ট। তবে এ দশকে ইংল্যান্ডের দাপট আরও বেশি। জিতেছে টানা তিনটি টেস্ট।

১৯৮১ সালে ইয়ান বোথাম ইংল্যান্ডকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতিয়েছিলেন এই ওল্ড ট্রাফোর্ডেই। অস্ট্রেলিয়ার ৫০৬ রান তাড়া করে জিতেছিল ইংল্যান্ড। বোথামের ডাবল সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি করেছিলেন অ্যালান নট, ক্রিস টেভার ও জন এম্বুরি। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ইংলিশ পেসার বব উইলিস। তবে সেটিই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ মাঠে ইংল্যান্ডের শেষ ‘অ্যাশেজ–সাফল্য’। আশি ও নব্বইয়ের দশকে এ মাঠে অনুষ্ঠিত টানা তিনটি টেস্টে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।

১৯৮১ সালে ইয়ান বোথামেই সেই বীরত্ব। এরপর আর ওল্ডট্রাফোর্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জেতেনি ইংল্যান্ড
ছবি: এএফপি

১৯৯৩ সালে শেন ওয়ার্নের সেই ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ ওল্ড ট্রাফোর্ডকে ইতিহাসে স্থান দিয়েছে আরও একবার। ইংলিশ ব্যাটসম্যান মাইক গ্যাটিংকে অসাধারণভাবে বাঁক খাওয়ানো এক বলে বোল্ড করেছিলেন ২৩ বছর বয়সী ওয়ার্ন। সেই ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ দিয়েই ক্রিকেট–দুনিয়ায় নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগ স্পিনার।

২০০৫ সালের অ্যাশেজে সেই নখ কামড়ানো শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটির কথাও নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ক্রিকেটপ্রেমীরা। গ্লেন ম্যাকগ্রা ও ব্রেট লির শেষ জুটি প্রচণ্ড চাপের মুখে চার ওভার টিকে থেকে হারের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়াকে।

২০১৯ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেষ অ্যাশেজ টেস্টটা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া
ছবি: এএফপি

২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ অ্যাশেজ সিরিজে ওল্ড ট্রাফোর্ডে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেটি ছিল এ মাঠে ১৮ বছর বিরতির পর অস্ট্রেলিয়ার ইংল্যান্ডকে হারানো। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাথায় আঘাত পেয়েও ৩১৯ বলে ২১১ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছিলেন স্টিভ স্মিথ। এর সঙ্গে নাথান লায়ন ও মিচেল স্টার্কের ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৪৯৭ রানে। জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে পিছিয়ে ছিল ১৯৬ রানে। জো রুট আর ররি বার্নস লড়েছিলেন দুর্দান্ত। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের এগিয়ে নেয় ৩৮২ রানে। এই টেস্টে শেষ পর্যন্ত ১৮৫ রানের জয় তুলে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।