কোহলি খারাপ সময়ে এবার পাশে পেলেন জোকোভিচকে
‘লাইক’ ব্যাপারটির মাহাত্ম্য এখন অনেক। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এ যুগে। লাইকের আভিধানিক অর্থ ‘পছন্দ’, কিন্তু হালে ‘লাইক’ মানে পাশে থাকা, লাইক মানে সহমর্মিতা প্রদর্শনও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন বন্ধুর ‘লাইক’ তাই মানুষের কাছে অনেক বড় বিষয়। সেটি সামাজিকতার খাতিরে হলেও।
বিরাট কোহলির ফর্ম ক্রিকেটে এ মুহূর্তে বহুলচর্চিত বিষয়। সেটি যে ক্রিকেটীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে অনেক দূর ছড়িয়ে পড়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে। নয়তো কোহলির উদ্দেশে ইনস্টাগ্রামে দেওয়া সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেনের পোস্টে নোভাক জোকোভিচ ‘লাইক’ দেবেন কেন!
জোকোভিচ যখন কোহলিকে নিয়ে করা পোস্টে ‘লাইক’ মারেন, তখন সেটি আর নিছক সামাজিকতার বিষয় থাকে না। সেটি হয়ে যায় সহমর্মিতা। কোহলির বর্তমান ফর্ম, সে জন্য তাঁর সংগ্রাম বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই টেনিস তারকাকে ছুঁয়ে গিয়েছে বলেই পিটারসেনের সেই পোস্টে জোকোভিচের ‘লাইক’।
ছন্দে না থাকা কোহলি কয়েক মাস ধরেই ক্রিকেট মাঠে ধুঁকছেন। ক্রিকেট–জীবনে এত বাজে সময় তিনি আগে কাটিয়েছেন কি না, সন্দেহ। সবারই চোখ কোহলির দিকে। এই পাখির চোখ তাঁর ফর্মে ফেরাটাকে আরও কঠিন করে দিচ্ছে কি না, উঠেছে সে আলোচনাও। এমন কথাও উঠেছে, ক্রিকেট ইতিহাসে আর কোনো ক্রিকেটারের ফর্ম এমনভাবে আতশি কাচের নিচে গিয়ে গবেষণার বিষয় হয়েছে কি না। ভারতীয় গণমাধ্যমই কেবল নয়, ক্রিকেট দুনিয়ার যেকোনো গণমাধ্যমেই কোহলি এখন রীতিমতো প্রতিদিনের ‘আইটেম’। সবারই একটাই প্রশ্ন, কবে ফর্মে ফিরবেন কোহলি, কবে দেখা যাবে তাঁর সেই আগের ঝলক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০টি শতরানের মালিক যিনি, বছর তিনেক আগেও যাঁর পারফরম্যান্সে মনে হচ্ছিল, ক্রিকেটের সম্ভব সব রেকর্ড শচীন টেন্ডুলকারের পর তিনিই ভেঙে ফেলবেন, তাঁকেই যখন ফর্মের কারণে কাটাছেঁড়া করা হয়, তখন সেটি মন খারাপের বিষয় হয়েই দাঁড়ায়।
কয়েক দিন আগেই কোহলির প্রতি নিজের সমর্থন জানিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কেভিন পিটারসেন ইনস্টাগ্রামে এক বার্তা দেন। তিনি কোহলিকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার চেষ্টাই করেছেন সেই বার্তায়। তিনি লিখেছিলেন, ‘বন্ধু, তোমার ক্রিকেটজীবনে এমন অনেক ইনিংস আছে, যেগুলো খেলতে পারলে অনেক ক্রিকেটারই বর্তে যেত। বিশেষ করে যাদের এখন আর খেলার সুযোগ নেই, তারা। তুমি গর্ববোধ করতে পার সেটি নিয়ে। এগিয়ে চলো সামনের দিকে। জীবনটা উপভোগ করো। ক্রিকেটই তো আর সবকিছু নয়। এটি ছাড়াও অনেক কিছুই রয়েছে তোমার জীবনে। তুমি ঠিকই নিজেকে ফিরে পাবে।’
পিটারসেনের এই পোস্টেই ‘লাইক’ দিয়েছেন জোকোভিচ। ২১ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ীকে যে কথাগুলো ছুঁয়ে গেছে, সেটি স্পষ্ট। কথাগুলো যাঁর উদ্দেশে, সেই কোহলিকে খুব ভালো করেই চেনেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা। ক্রিকেটের বাইরে টেনিস নিয়ে যে আলাদা আকর্ষণ কাজ করে কোহলির মধ্যে। রজার ফেদেরার, নোভাক জোকোভিচদের সঙ্গে ভালোই আলাপ ভারতীয় ক্রিকেটারের। এই তো সেদিন উইম্বলডন শিরোপা জেতার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোকোভিচকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন কোহলি। সেটিরই প্রত্যুত্তর হয়তো কোহলিকে জোকোভিচ দিলেন কোহলির প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে।
বড় তারকারাই নিজেদের মতো কারও কষ্টের ব্যাপারটা অনুধাবন করতে পারেন। জোকোভিচ যেমন করেছেন কোহলিরটা।