২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘ফার্স্ট বয়’ হাসান

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদএএফপি

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের শেষ টেস্টে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই চাপে রাখার কাজটা তিনিই করেছিলেন। গতকাল তৃতীয় দিনের পড়ন্ত বিকেলে ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক এবং ‘নাইট ওয়াচম্যান’ খুররম শেহজাদকে আউট করে বাংলাদেশকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যান হাসান মাহমুদ।

আজ চতুর্থ দিনের শুরু থেকেও তোপ দাগেন বাংলাদেশের পেসাররা। দিনের প্রথম সেশনে পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে ধস নামানোর কাজটা করেন নাহিদ রানা ও তাসকিন আহমেদ। তবে মধ্যাহ্নবিরতির পর স্বাগতিকদের লেজ ছাঁটাইয়ের দায়িত্বটা যেন হাসানই নিলেন। পাকিস্তানের শেষ ৪ উইকেটের তিনটিই তাঁর দখলে। তাতে বাংলাদেশ যেমন পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করার পথ খুঁজে পেল, হাসানও ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেই প্রথমবারের মতো পেয়ে গেলেন ইনিংসে ৫ উইকেটের দেখা।

হাসানের বোলিং বিশ্লেষণ: ১০.৪ ওভার-১ মেডেন-৪৩ রান-৫ উইকেট, যা বিদেশের মাটিতে টেস্টে বাংলাদেশের কোনো পেসারের তৃতীয় সেরা বোলিং। তবে একটা জায়গায় পেসারের মধ্যে হাসানই এখন সবার ওপরে। যেকোনো সংস্করণ মিলিয়ে এটিই পাকিস্তানের বিপক্ষে হাসানই এখন ‘ফার্স্ট বয়’। মানে তাঁর এই বোলিংই পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশি পেসারের সেরা।

টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার এক ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের পর এভাবেই উদ্‌যাপন করেছেন হাসান
এএফপি

সব সংস্করণ মিলিয়ে এর আগে বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেরা বোলিং ছিল মোস্তাফিজুর রহমানের; ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৭৫ রানে ৫ উইকেট। আর টেস্টে পেসারদের মধ্যে সেরা বোলিং ছিল সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদের; ২০০৩ সালে মুলতানের সেই ‘হৃদয়বিদারক’ হারের ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সপ্তম পেসার হিসেবে বিদেশের মাটিতে ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন হাসান। তবে এমন ঘটনা ক্রিকেট–বিশ্ব দেখল অষ্টমবার। রবিউল ইসলাম যে দুবার এই স্বাদ পেয়েছেন; ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে একবার ৬, আরেকবার ৫ উইকেট নিয়েছেন রবিউল। তিনি ও হাসান ছাড়া বিদেশে অনুষ্ঠিত টেস্টের এক ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া বাংলাদেশি বোলাররা হলেন ইবাদত হোসেন, মনজুরুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন, খালেদ আহমেদ ও রুবেল হোসেন।  

অথচ ইবাদত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে দলে ফিরলে কিংবা শরীফুল ইসলাম নতুন করে চোটে না পড়লে এই টেস্টের একাদশে হয়তো হাসানকে রাখাই হতো না। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তিনি বেশ অভিজ্ঞ হলেও টেস্টে একেবারেই নবীন। গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে তাঁর পা পড়েছে। অভিষেক টেস্টেই ৬ উইকেট (প্রথম ইনিংসে ২টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি) নিয়ে এই সংস্করণেও আলো ছড়ানোর বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন।

উইকেট শিকারের পর সতীর্থদের সঙ্গে হাসানের উদ্‌যাপন
এএফপি

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও খেলেছেন হাসান, যা ছিল বিদেশের মাটিতে তাঁর প্রথম টেস্ট। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় পাওয়া সেই টেস্টে ৩ উইকেট পেয়েছেন। তবে বাঁহাতি পেসার শরীফুল ফিট থাকলে এই টেস্টে জায়গাটা হয়তো তাঁকে ছেড়ে দিতে হতো। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁর ওপরই আস্থা রেখেছে। আস্থার প্রতিদান দিয়ে সেই হাসানই পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের চিত্রনাট্য সাজিয়ে দিলেন!