বিবাদ ভুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বকাপ জেতাতে চান রাসেল
‘দেশের হয়ে খেলার জন্য আমি দ্বারে দ্বারে গিয়ে বলতে পারব না’, টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল সম্পর্কে এভাবে প্রকাশ্যেই অসন্তুষ্টি জানিয়েছিলেন কোচ ফিল সিমন্স।
আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনের মতো যাঁরা দেশের হয়ে না খেলে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়ান, মূলত তাঁদের দিকেই ইঙ্গিত করে এ কথা বলেছিলেন কোচ। কোচের কথার জবাব দিতেও রাসেল খুব বেশি দেরিও করেননি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর আগে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার লিখেছিলেন, ‘জানতাম এ রকম কিছুই আসবে, তবে আমি চুপ থাকব।’
তার এই কথার পাশে ছিল রাগের চারটি ইমো। পরে অবশ্য সেই পোস্ট মুছে ফেলেন রাসেল। পোস্ট মুছে ফেললেও কোচের সঙ্গে মনোমালিন্যের গুঞ্জন মাথাচাড়া দিচ্ছিল। একে তো ২০২১ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এখনো পর্যন্ত এ সংস্করণেও রাসেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে আর খেলেননি, এরপর আবার কোচের সঙ্গে মনোমালিন্যের গুঞ্জন ওঠায় রাসেলকে জাতীয় দলে আর দেখা যাবে কি না, সে শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিল। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে আন্দ্রে রাসেল নিজেই জানালেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এখনো খেলতে চান। জিততে চান বিশ্বকাপ।
রাসেল এখন খেলছেন ইংল্যান্ডের ‘দ্য হানড্রেড’-এ। সেখানেই মঙ্গলবার রাতে ম্যাচের আগে ধারাভাষ্যকার ড্যারেন স্যামির সঙ্গে কথা বলেছেন রাসেল। অহেতুক সমালোচনা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে রাসেল বলেছেন ‘আমি চুপ থাকব, কারণ আমাদের মধ্যে একটি আলোচনা হয়েছিল এবং সেই আলোচনা ছিল খুবই পরিষ্কার। কিন্তু তারপরও এখন আমাকে খারাপ বানানো হচ্ছে, আমাকে দোষ দিয়ে সমালোচনার মুখে ফেলা হচ্ছে। তবে আমি আসলে এমন কিছুর আশাই করছিলাম। সত্যি বলতে, আমি চুপই থাকব, ড্যারেন!’
২০১২ ও ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্যামির নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিরোপা জিতেছিল। সে দুই বিশ্বকাপেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের গুরত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন রাসেল। সাবেক অধিনায়ককে কাছে পেয়ে চুপ করে থাকতে চেয়েও চুপ থাকেননি রাসেল। জানিয়েছেন মনের চাওয়া, ‘এমন নয় যে আমাকে নতুন করে শুরু করতে হবে। বয়স ৩৪ হয়ে গেছে, আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে অন্তত আরও একটি কিংবা দুটি বিশ্বকাপ জিততে চাই।’
ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলে বেড়ালেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে এখনো বিশেষ কিছুই মনে করেন রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার জন্য এখনো তীব্র তাড়না আছে তাঁর।
রাসেল জানিয়েছেন, সে জন্য তাঁর শর্তকে সম্মান করতে হবে, ‘সত্যি বলতে, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আমার দুটি সেঞ্চুরি আছে। আমার মনে হয়, সেঞ্চুরি দুটি যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার সময় করতে পারতাম! হ্যাঁ, এটা নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। জ্যামাইকা তালাওয়াশে খেলা আমি উপভোগ করি। তবে ওই সেঞ্চুরি দুটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এলেই বিশেষ কিছুই হতো। আমি সব সময়ই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চাই ও কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই। কিন্তু দিন শেষে যদি নির্দিষ্ট কিছুতে আমরা একমত না হই, তাহলে তো আপনার শর্তই আমার শর্ত হয়ে গেল! তাঁদেরও আমার শর্তকে সম্মান করা উচিত।’
আগামী সপ্তাহে দ্য হানড্রেড ছেড়ে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের হয়ে সিপিএল খেলতে যাবেন রাসেল। এই টুর্নামেন্টের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে রাসেলের বিশ্বকাপে খেলা। কিছুদিন আগেই প্রধান নির্বাচক ডেসমন্ড হেইন্স বলেছেন, ক্যারিবিয়ান বোর্ডের কোনো টুর্নামেন্টে কেউ ভালো করলে, তাকে জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হবে।