রোহিতকে ইনজামাম—জনকদের রিভার্স সুইং শেখাতে এসো না
একজন ভারতকে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আরেকজন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক, খেলা ছেড়েছেন ২০০৮ সালে। দুই প্রজন্মের এই দুই ক্রিকেটার রোহিত শর্মা ও ইনজামাম–উল–হক কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছেন। আর এর মূলে অর্শদীপ সিংয়ের রিভার্স সুইং।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অর্শদীপ কীভাবে রিভার্স সুইং পেয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ইনজামাম। দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে এ কথার জবাব দিয়েছিলেন রোহিত। রোহিতের সে জবাব ইনজামাম খুব একটা ভালোভাবে নেননি। সেই জবাব খণ্ডাতে গিয়ে ইনজামাম কথাগুলো এ রকম—যারা রিভার্স সুইং শিখিয়েছে, তাদেরকে রিভার্স সুইং শেখাতে হবে না!
পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ডিজিটালকে ইনজামাম বলেছেন, ‘মাথা তো আমি নিশ্চয়ই খুলে নেব। প্রথম কথা হচ্ছে, ও স্বীকার করেছে যে রিভার্স সুইং হচ্ছে। এর মানে আমরা যেটা ধারণা করেছিলাম, সেটা ঠিক আছে। কীভাবে রিভার্স সুইং হয়, কতটুকু রোদের মধ্যে হয়, কোন উইকেটে হয়, রোহিত শর্মার সেটা আমাদের বলার প্রয়োজন নেই। যারা রিভার্স সুইং সারা দুনিয়াকে শিখিয়েছে, তাদের শেখাতে হয় না। ওকে বলবেন এ ধরনের কথাবার্তা ঠিক নয়।’
ইনজামাম দাবি করেছেন, তিনি বল টেম্পারিংয়ের কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি বলেছেন, ‘না, আমি এটা (বল টেম্পারিং করা) বলিনি। (রোহিতকে ওই সাংবাদিক) বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। আমি আম্পায়ারকে পরামর্শ দিয়েছিলাম, ১৫তম ওভারে রিভার্স সুইং হচ্ছে, চোখ খোলা রাখুন।’
ইনজামাম যোগ করে বলেছেন, ‘এখনো আম্পায়ারের প্রতি আমার এই পরামর্শ থাকবে। সঙ্গে আম্পায়ার যদি তাঁর মাথাও খোলা রাখেন, তাহলে অনেক ভালো হবে। ও (রোহিত) তো শুধু মাথা খোলা রাখার কথা বলেছে। আমি আম্পায়ারকে বলছি—চোখও খোলা রাখুন, মাথাও খোলা রাখুন।’
মূলত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে অর্শদীপ ১৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসে রিভার্স সুইং আদায় করেন। তখন অস্ট্রেলিয়ার সমীকরণ ছিল এমন—৩০ বলে ৬৫ রান। ক্রিজে ছিলেন ৭৩ রানে ব্যাটিং করা ট্রাভিস হেড। এরপরও সেই ওভারে মাত্র ৭ রান হয়। তার মধ্যে অতিরিক্ত থেকেই এসেছে ৪ রান। স্পষ্টই দেখা গেছে, রিভার্স সুইং খেলতে সমস্যা হচ্ছিল হেড ও অন্য প্রান্তে থাকা টিম ডেভিডের। যা দেখে ইনজামাম প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘১৫তম (আসলে ১৬তম) ওভারে অর্শদীপ সিং রিভার্স সুইং পাচ্ছিল। বলটা তুলনামূলক নতুন ছিল, রিভার্স কি একটু আগেই পাচ্ছিল না? এর মানে বল ১২-১৩ ওভারেও রিভার্স সুইং পাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল। যখন সে বোলিংয়ে এল, রিভার্স হয়েছে। আম্পায়ারদের চোখ খোলা রাখা উচিত।’
বল বিকৃতির অভিযোগ ইনজামাম সরাসরি করেননি। তবে তাঁর ইঙ্গিত ছিল সেদিকেই, ‘পাকিস্তানি কোনো বোলার এমন করলে এ নিয়ে অনেক কথা হতো। আমরা রিভার্স সুইং সম্পর্কে ভালো জানি। ১৫তম ওভারে যদি অর্শদীপের বলে রিভার্স হয়, এর মানে হচ্ছে বলে গুরুতর কোনো কাজ করা হয়েছে।’ এর জবাবে রোহিত বলেছিলেন, ‘আপনি যদি সূর্যের নিচে খেলেন, উইকেট শুষ্ক থাকে, কোনো কিছু ছাড়াই বল রিভার্স সুইং করে। সব দলের বোলাররাই রিভার্স সুইং পাচ্ছে। শুধু আমাদের বোলাররা নয়। মাঝেমধ্যে মাথা খাটানো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। আপনাকে বুঝতে হবে, আমরা কোথায় খেলছি। আমরা ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় খেলছি না।’