লিভিংস্টোন–বেথেলে সিরিজে সমতায় ইংল্যান্ড

জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়ের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন ইংল্যান্ডের আদিল রশিদএএফপি

ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। নিজের জাতটা আবারও চেনাতেই হতো। কার্ডিফে গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে সেই লিয়াম লিভিংস্টোনকেই দেখা গেল, যেমনটা দেখতে চান ইংল্যান্ডের ভক্তরা। অস্ট্রেলিয়ার ৬ উইকেটে ১৯৩ তাড়া করতে নেমে ৮.২ ওভারে ৭৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। কিন্তু সেখান থেকে শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ৬ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে জয়ের নেপথ্য নায়ক লিভিংস্টোন।

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি খেলতে নামা জ্যাকব বেথেলের কথাও বলতে হবে। নবম ওভারে ফিল সল্ট (২৩ বলে ৩৯) অস্ট্রেলিয়ার ‘পার্টটাইম’ স্পিনার ম্যাথু শর্টকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন। এরপর চতুর্থ উইকেটে লিভিংস্টোনের সঙ্গে ৪৭ বলে ৯০ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন বেথেল। এর মধ্যে কারও অবদান কারও চেয়ে কম নয়। লিভিংস্টোন এই জুটিতে করেন ২৩ বলে ৪৪, বেথেল ২৪ বলে ৪৪। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে বেথেল (৪৪) যখন শর্টের বলে আউট হলেন, জয় থেকে ২৩ বলে ২৫ রানের দূরত্বে ইংল্যান্ড। ম্যাচটি না দেখে থাকলে ভাবতে পারেন, এরপর তো ইংল্যান্ডের জিততে আর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়!

না, তা না হলেও অস্ট্রেলিয়া কিন্তু এরপরও ৩টি উইকেট তুলে নিয়েছে। বেথেল আউট হওয়ার ২ বল পর স্যাম কারেনকেও তুলে নেন শর্ট। ১৯তম ওভার শুরুর আগে জয়ের জন্য যখন ১২ বলে ১৩ রানের প্রয়োজন, তখন সেই ওভারের প্রথম ৩ বল থেকেই ১২ রান তুলে নেয় ইংল্যান্ড। এর মধ্যে একটি করে চার ও ছক্কা লিভিংস্টোনের।

মজার ব্যাপার হলো, ইংল্যান্ড এরপরও উইকেট হারিয়েছে টানা দুই বলে! শর্টের করা ওই ওভারের চতুর্থ বলে বোল্ড হন ক্যারিয়ারের ৫০তম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে ৪৭ বলে ৮৭ রান করা লিভিংস্টোন। তাঁর ইনিংসে ছিল ৫ ছক্কা ও ৬ চার। পরের বলে ব্রাইডন কার্স আউট হলেও শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন আদিল রশিদ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১–১ ব্যবধানে সমতায় ফিরল ইংল্যান্ড। ম্যানচেস্টারে আগামীকাল রাতে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।

অস্ট্রেলিয়া এ ম্যাচে সাত বোলার ব্যবহার করেছে। ৭ নম্বর বোলার হিসেবে ২২ রানে ৫ উইকেট নেন শর্ট। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে প্রথম ওপেনার হিসেবে ছেলেদের টি–টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট নিলেন শর্ট।

আরও পড়ুন

গত বুধবার লিভিংস্টোনের কাছ থেকেই অভিষেকের ক্যাপ বুঝে নিয়েছেন বেথেল। দ্য হানড্রেডে বার্মিংহাম ফোনিক্সে তাঁর মেন্টরও লিভিংস্টোন। জয়ের পর বেথেলের প্রশংসা করে ম্যাচসেরা লিভিংস্টোন বলেছেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ সে হানড্রেডে ছিল। অবিশ্বাস্য প্রতিভা। তবে তরুণ কাঁধের ওপর বুদ্ধিমান মস্তিষ্কও আছে। সে ভয়ডরহীন বলেই এটা বিশেষ কিছু ছিল।’

টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ফিল সল্ট। ১৪ বলে ৩১ রান করা হেড ৪.২ ওভারে আউট হওয়ার আগে দলীয় স্কোরবোর্ডে ৫২ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়াকে ভালো শুরু এনে দেন। অস্ট্রেলিয়ার বড় সংগ্রহের পেছনে রয়েছে কয়েকটি জুটির অবদান।

ইংল্যান্ডের জয়ে দারুণ এক ইনিংস খেলেন লিভিংস্টোন
এএফপি

২৪ বলে ২৮ রান করা ওপেনার শর্ট দ্বিতীয় উইকেটে জেইক ফ্রেজার–ম্যাগার্কের সঙ্গে ২৭ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। তৃতীয় উইকেটে জস ইংলিসের সঙ্গে ২৩ বলে ৩২ রানের জুটিও গড়েন তিনে নামা ম্যাগার্ক। ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৩১ বলে ৫০ রানে আউট হওয়া ম্যাগার্ক টি–টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটি তুলে নেন ২৯ বলে। এরপর সপ্তম উইকেটে অ্যারন হার্ডিকে নিয়ে ক্যামেরন গ্রিনের ১৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। ৮ বলে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন গ্রিন। ৯ বলে ২০ রানে অন্য প্রান্ত ধরে রাখেন হার্ডি। স্যাম কারেনের করা ২০তম ওভার থেকে ২০ রান তুলে নেন দুজন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১৯৩/৬ (ম্যাগার্ক ৫০, ইংলিস ৪২, হেড ৩১, হার্ডি ২০*, গ্রিন ১৩*; লিভিংস্টোন ২/১৬, কার্স ২/২৬, আদিল ১/৩৫, কারেন ১/৩৭)।

ইংল্যান্ড: ১৯ ওভারে ১৯৪/৭ (লিভিংস্টোন ৮৭, বেথেল ৪৪, সল্ট ৩৯, জ্যাকস ১২; শর্ট ৫/২২, অ্যাবোট ২/৩৭, হার্ডি ০/২৩)।

ফল: ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: লিয়াম লিভিংস্টোন (ইংল্যান্ড)।

সিরিজ: দুই ম্যাচ শেষে তিন ম্যাচ সিরিজে ১–১ সমতা।