অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ: নেপালকে গুঁড়িয়ে সুপার সিক্স শুরু বাংলাদেশের
সুপার সিক্স পেরিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার পথটা মোটেও সহজ নয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। তবে সেই কঠিন পথে আজ কিছুটা হলেও এগিয়েছেন বাংলাদেশের যুবারা। নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে পাত্তা না দিয়ে পেয়েছেন দাপুটে এক জয়। তবে এটুকুই যথেষ্ট নয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচটাও জিততে হবে দাপটের সঙ্গেই।
ব্লুমফন্টেইনে বাংলাদেশের ৫ উইকেটে পাওয়া জয়ের ভিতটা তৈরি করে দেন বোলাররাই, নেপালকে ১৬৯ রানের মধ্যে আটকে দিয়ে। ১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নেপালের ব্যাটিংকে দাঁড়াতে না দেওয়ার কাজে নেতৃত্ব দেন পেসার রোহানাত দৌল্লাহ, ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন অফ স্পিনার পারভেজ জীবন। রান তাড়ায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জিসান আলমের ৪৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে কাজ সহজ হয়ে আসে বাংলাদেশের, পরে আরিফুল ইসলামের ৩৮ বলে ৫৯ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ১৪৮ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তারা।
সেমিফাইনালে যেতে নেট রানরেট হয়ে উঠতে পারে গুরুত্বপূর্ণ। নেপালের বিপক্ষে সেটিও বাড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৪, নেট রানরেট ০.৩৪৮। শীর্ষে থাকা ভারতের ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট, রানরেট ৩.৩২৭। দুইয়ে থাকা পাকিস্তানের ৬ পয়েন্ট, রানরেট ১.০৬৪। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের এ আসরে আইসিসির একমাত্র সহযোগী দেশ হিসেবে সুপার সিক্সে এসেছে নেপাল। টসে জিতে ব্যাটিং নিলেও ৮.৩ ওভারে ২৯ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তারা। সে ৩ উইকেট অবশ্য নেন বাংলাদেশের তিন পেসার রোহানাত, ইকবাল হোসেন ও মারুফ মৃধা।
চতুর্থ উইকেটে নেপাল অধিনায়ক দেব খানাল ও বিশাল বিক্রম একটু প্রতিরোধ গড়েছিলেন তাঁদের ১১৫ বলে ৬২ রানের জুটিতে। খানালকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন জিসান আলম। বিক্রম এরপর এক প্রান্ত ধরে রাখলেও অন্যদিকে নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে নেপাল।
চতুর্থ উইকেটের পর পঞ্চম উইকেটে গুলশান ঝায়ের সঙ্গে বিক্রমের ৩০ ও শেষ উইকেটে গিয়ে ২৭ রানের বাইরে আর কোনো জুটি দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেনি। মাঝে দ্রুত ৩ উইকেট নিয়ে নেপালের আর কোনো প্রতিরোধের আশা শেষ করে দেন জীবন, শেষে রোহানাত নেন আরও ২ উইকেট। ১ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে যায় নেপাল।
রান তাড়ায় আশিকুর রহমান ও জিসানের উদ্বোধনী জুটিতে ওঠে ৬৭ রান। ৩৪ বলে ১৬ রান করে আশিকুর থামলেও টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা জিসান ৪৩ বলে করেন ৫৫ রান, ৬টি চারের সঙ্গে মারেন ২টি ছক্কা। মাঝে দ্রুত ২ উইকেট হারালেও আরিফুল ইসলামের ঝোড়ো ইনিংসে ২৫.২ ওভারের মধ্যেই জয় পায় বাংলাদেশ। নেপালের অফ স্পিনার সুবাশ ভান্ডারি একাই নেন ৫ উইকেট।
আশিকুর ছাড়া পরের সব ব্যাটসম্যানই দ্রুত রান তোলার দিকে নজর দিয়েছেন, নেট রানরেট যে তাঁদের মাথায় ছিল তা বলাই যায়। তাতে সফলও হয়েছেন তাঁরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৯.৫ ওভারে ১৬৯ (কুমাল ১৩, রাওয়াল ২, ত্রিপাঠি ৩, খানাল ৩৫, বিক্রম ৪৮, ঝা ৩, বোহারা ৩, কান্ডেল ৩, ভান্ডারি ১৮*, চাঁদ ০, গুপ্ত ৯; ইকবাল ৯-০-২৮-১, মারুফ ৬-০-৩৪-১, রোহানাত ৮.৫-২-১৯-৪, মাহফুজুর ১০-০-২২-০, জীবন ১০-২-৩৪-৩, আরিফুল ১-০-৫-০, জিসান ৫-০-১৬-১)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ২৫.২ ওভারে ১৭০/৫ (আশিকুর ১৬, জিসান ৫৫, রিজওয়ান ১৫, আরিফুল ৫৯*, আহরার ১২, শিহাব ০, জীবন ৫*; ঝা ৪-০-২৯-০, চাঁদ ৩-০-৪২-০, গুপ্ত ৩-১-১১-০, কান্ডেল ৬-০-২৯-০, ভান্ডারি ৮-০-৪৪-৫, খানাল ১-০-১১-০, কুমাল ০.২-০-২-০)
ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৫ উইকেটে জয়ী