২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

কুমিল্লার ‘সবাই ১২০% করে দেয় দলের জন্য’

জনসন চার্লসের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। মুখে চওড়া হাসি। তখনো শিরোপা জয়ের আমেজে। মিনিট দশেক আগেই সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে বিপিএল ফাইনালে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন। ৫২ বলে অপরাজিত ৭৯ রান করে ম্যাচসেরাও হয়েছেন চার্লস। এরপর সতীর্থদের সঙ্গে বুনো উদ্‌যাপন। উদ্‌যাপনের ফাঁকেই প্রথম আলোর সঙ্গে বিপিএল ও ফাইনাল ম্যাচের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিলেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান।

বিপিএল ফাইনালে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন জনসন চার্লসছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

এর আগে রংপুর রাইডার্সের হয়ে বিপিএল শিরোপা জিতেছেন। এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে। কেমন লাগছে?

জনসন চার্লস: সিলেট, চট্টগ্রাম দারুণ ছিল। বিশেষ করে সিলেট উপভোগ্য ছিল। সেখানে একটা সেঞ্চুরি পেয়েছি। এরপর মিরপুরে যখন শেষ পর্বের জন্য এলাম, তখন আশা করিনি উইকেট এত ভালো থাকবে। আমি এর আগেও বিপিএল খেলেছি। ঢাকায় অন্তত এমন উইকেট আশা করিনি। সেদিক থেকে বিপিএলের শেষটা ব্যক্তিগতভাবে উপভোগ্য ছিল।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

এর আগে বিপিএল ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই সাহায্য করেছে…

চার্লস: অবশ্যই সাহায্য করেছে। এর আগে আমি বিপিএল খেলেছি। ফাইনাল খেলেছি। চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। আমি জানি যে এখানে আবহটা কেমন থাকতে পারে। নকআউট ম্যাচ সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে আগের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান থাকলে কাজটা কিছুটা সহজ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্য ছিলেন। আন্দ্রে রাসেলও সেই দলের সদস্য। ২০১২ সালে বিশ্বকাপ জিতেছেন সুনীল নারাইন। গত বছর তো মঈন আলীও বিশ্বকাপ জিতেছেন। এসব নিশ্চয়ই বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে?

চার্লস: আপনি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললে বুঝতে পারবেন চাপ কী জিনিস। স্নায়ুর আসল পরীক্ষাটা তখনই হয়। আমাকে ওই বিশ্বকাপ শিখিয়েছে চাপের মুখে শান্ত থাকার উপকারিতা। শুধু আমি না, ওই বিশ্বকাপজয়ী দলের অনেকেই টি-টোয়েন্টি লিগে অনেক সাফল্য পেয়েছে। আমাদের সবার জন্যই সেই অভিজ্ঞতা কাজে দিয়েছে।

প্রশ্ন :

আপনি ছাড়াও কুমিল্লায় তারকার অভাব ছিল না। ভেবেছিলেন তারকার ভিড়ে ফাইনালের ম্যাচসেরা হতে পারবেন?

চার্লস: সবাই ফাইনালের নায়ক হতে চায়। আমি যেহেতু চারে খেলছি এবার, আমার সুযোগ ছিল থিতু হয়ে ম্যাচ শেষ করে আসার। আমি আজ সেই ছকে বাঁধা ব্যাটিংটাই করেছি। ক্রিজে টিকে থাকার চেষ্টা করেছি শুরুতে। ম্যাচটা শেষের কয়েক ওভারে নিতে চেয়েছি। জানি যে তখন লড়াইটা হবে অভিজ্ঞতা আর স্নায়ুর। আর এ ক্ষেত্রে নিজের সামর্থ্যে আমার যথেষ্ট আস্থা আছে।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

একপর্যায়ে স্ট্রাইক রেট ‘১০০’–তে নেমে এসেছিল। দেখে মনে হয়নি আপনি রান তাড়ার চাপে ছিলেন…

চার্লস: আমি চেয়েছিলাম দুই-একজন বোলারকে টার্গেট করে খেলতে। আমাদের জুটি ভাঙতে ওদের মূল বোলারদের বোলিং করাতেই হতো। মাশরাফিও ঠিক তাই করেছে। আর আমি অপেক্ষা করেছি তুলনামূলক অনভিজ্ঞদের জন্য। তাদের বোলিংয়ে ওভারপ্রতি ১৫-২০ রান করার আত্মবিশ্বাস ছিল আমার। আর ডিউ ফ্যাক্টরও মাথায় ছিল। এই জন্যই আমি খুব শান্ত ছিলাম। শুরুর দিকে আমার স্ট্রাইক রেট ১০০ ছিল মনে হয়। আমি জানতাম সেটা পুষিয়ে দিতে পারব।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস সম্পর্কে কিছু বলুন।

চার্লস: অসাধারণ। ব্যাক রুম স্টাফ থেকে শুরু করে কোচ, মালিক, ক্রিকেটার—সবাই ১২০% করে দেয় দলের জন্য। আমি গত একটা মাস খুব উপভোগ করেছি শুধু এই দলের আবহের কারণে। ভেবে দেখুন, আমরা অন্য সংস্কৃতি থেকে এসেছি। আমাদের মানিয়ে নেওয়ার সঙ্গে পারফরম্যান্সের একটা যোগসূত্র আছে। দলের সঙ্গে যদি দ্রুত মানিয়ে নিতে পারি, তাহলে পারফরম্যান্সও ভালো হয়। কুমিল্লায় সেটাই হয়েছে। ভক্তদের কথাও বলতে হয়। সিলেট ও চট্টগ্রামে দেখেছি এই দলটার সমর্থন। আর মিরপুরে তো অনেকটা হোম ভেন্যুর মতো আবহ পেয়েছি।