সমালোচকদের মুশফিক, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বললেন বরিশাল সবচেয়ে বুড়োদের দল’
অভিজ্ঞতায় ভর করে রংপুর রাইডার্সকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো বিপিএল ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। তামিম ইকবালের অধিনায়কত্বে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞদের নিয়ে এখন বিপিএলের শিরোপা থেকে একটি জয় দূরে দলটি।
অথচ এই দলটাকেই অনেকে বুড়োদের দল বলেছিলেন। আজ রংপুরের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়ের পর তাদের দিকেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ম্যাচসেরা হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মুশফিক। নকআউট ম্যাচে রান তাড়ায় অভিজ্ঞতা কাজে দিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মুশফিক উল্টো প্রশ্ন করলেন, ‘কেন ভাই, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তো বললেন যে বরিশাল সবচেয়ে বুড়োদের দল। এক্সপেরিয়েন্সদের টি-টোয়েন্টিতে খেলা হয় না। তো, হেয়ার উই আর।’
হাসতে হাসতে বলা কথাটার লম্বা ব্যাখ্যাও দিলেন মুশফিক, ‘আমার কাছে মনে হয় এই ধারণাই ভুল, যে-ই বলুক, আপনারা বলেন বা যে কেউই (বলুক)। অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্য, সব সময় একটা মিশ্রণ থাকে যেকোনো ফরম্যাটে। টি-টোয়েন্টি বলেন, ওয়ানডে বলেন, টেস্ট বলেন। আর এটাই হচ্ছে দুনিয়ার একটা নিয়ম। নতুনরা আসবে, পুরোনোরা চলে যাবে এবং তাদের সংমিশ্রণে ওই জিনিসটা তৈরি হয়ে যাবে। ওই লিগ্যাসিটা আমরা যারা আছি তারা যেন রেখে যেতে পারি এবং বাকিরা যেন এখান থেকে বড় হয়।’
তাওহিদ হৃদয় ও তানজিদ হাসানের (তামিম) উদাহরণ টেনে তিনি আরও যোগ করেন, ‘কয়েক দিন পরে হৃদয়, তামিম এরাও সিনিয়র হবে। তারাও ধীরে ধীরে...এই জিনিসটা হচ্ছে একটা স্মুথ...। যেটা কিনা আমার কাছে সব সময় একটা বাস্তবতা, যেটা আমি বললাম—নিয়তি; এভাবেই হবে। এটাকে বারবার বলা হয় যখন, এই জিনিসটা ভেরি ভেরি রং। সিনিয়র বলেন, জুনিয়র বলেন, আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা সবাই বাংলাদেশের জন্য ক্রিকেট খেলি, অন্য কোনো দেশের জন্য খেলি না।’
কেউ বুড়ো বললে সেটাকে মুশফিক ভালো করার অনুপ্রেরণা হিসেবে নেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না ভাই, আমাকে উজ্জীবিত করে না। আমার কাছে খারাপ লাগে।’ এরপর নিজের ফিটনেসের সঙ্গে তরুণ খেলোয়াড়দের তুলনা করে মুশফিক বললেন, ‘আপনি যদি এখনো অনেক ইয়াং প্লেয়ারদের আমার সামনে নেন, আমি অবশ্যই নিশ্চিত আমার ফিটনেসের ধারেকাছেও তারা থাকতে পারবে না। আমি এটা লিখে দিতে পারি। ফিটনেসের মানদণ্ড কীভাবে দেবেন? বয়স বা ধরেন পারফরম্যান্স। আমার কাছে মনে হয় পারফরম্যান্সটা কতটুকু। বয়স শুধু সংখ্যা।’
৪১ বছর বয়সী ইংল্যান্ডের পেসার জিমি অ্যান্ডারসনের উদাহরণও টেনেছেন মুশফিক, ‘না হলে অ্যান্ডারসনের মতো ১৮৮ (টেস্ট), যাক সংখ্যাটা হয়তো এদিক-ওদিক হবে; এ রকম প্লেয়ার খুব রেয়ার থাকত। কিন্তু এখনো হি ইজ ডুয়িং হোয়াট হি ডাজ বেস্ট। তো আমার কাছে মনে হয় এই কথাটা ভেরি রং। আমি পার্সোনালি কাউকে প্রমাণ করার জন্য খেলি না। আমাকে যে নেয়, আমাকে যে টিম নিয়েছে, স্পেশালি তামিম ও বরিশালের মালিকপক্ষ, তাদের ওই আস্থাটা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। তারা যে চিন্তা করে নিয়েছে, সেটা যেন আমি আমার পারফরম্যান্স দিয়ে প্রমাণ করতে পারি। প্রমাণের কিছু না, আস্থার প্রতিদানটা যাতে আমি দিতে পারি।’