বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাই: পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য দুঃখ হচ্ছে অশ্বিনের

হতাশ পাকিস্তান, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়এএফপি

প্রশ্নটা তুলতে পারেন যে কেউই। বাংলাদেশ সিরিজ জিতে নিয়েছে, নাকি পাকিস্তানই সিরিজ হেরেছে?

রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দল জিতেছে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে। পরের ম্যাচের ব্যবধানও কম নয়—৬ উইকেটে। নাজমুল হোসেনের দল যে ভালো খেলেই সিরিজ জিতেছে, সেটি মাঠের পারফরম্যান্স দেখে যে কেউই বলবেন। রবিচন্দ্রন অশ্বিনও মনে করেন যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে বাংলাদেশ। তবে শান মাসুদদের ধবলধোলাইয়ের সূত্রে পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য খারাপই লাগছে ভারতীয় অফ স্পিনারের। ১৪ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা অশ্বিন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, বিশ্বাস হচ্ছে না পাকিস্তান দল এখন কোথায় নেমে গেছে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টসহ সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচেই হেরেছে পাকিস্তান। আর নিজেদের মাঠে জয়হীন ম্যাচ এখন টানা ১০টিতে দাঁড়িয়েছে তাদের। এর মধ্যে হারই ছয়টিতে, ড্র বাকি চারটি। এরই মধ্যে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ র‍্যাঙ্কিংয়ে ৮ নম্বরে নেমে গেছে শান মাসুদের দল, আর রেটিং কমে দাঁড়িয়েছে ১৯৬৫ সালের পর সর্বনিম্নে।

অশ্বিন পাকিস্তান দলের এই বাজে পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে, ‘বাংলাদেশ কী দুর্দান্ত এক জয়ই না পেয়েছে। আর কী হতাশার এক সিরিজই না কাটল পাকিস্তানের। পাকিস্তান সহজেই হারিয়ে দেওয়ার মতো দল নয়; কিন্তু নিজেদের মাঠে এক হাজারের বেশি দিন ধরে ওরা ম্যাচই জেতেনি।’

আরও পড়ুন

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর ঘরের মাঠে না জেতা পাকিস্তান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দেশটির কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের নাম নিয়েছেন অশ্বিন, ‘আমার সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছে কার জন্য জানেন? পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসের জন্য। ওয়াকার ইউনিস, ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আখতার, ইমরান খান, ইনজামাম উল হক, ইজাজ আহমেদ, সেলিম মালিক, সাঈদ আনোয়ার, আমির সোহেল...এমন আরও কত নাম। পাকিস্তান ক্রিকেটের ঐতিহ্য কত সমৃদ্ধ।’

ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন
আইসিসি

ঐতিহ্যের অধিকারী পাকিস্তান দল অবশ্য নিজেদের ব্যর্থতায় নয়, বাংলাদেশের নৈপুণ্যের কাছেই হেরেছে বলে মনে করেন ১০০ টেস্ট খেলা অশ্বিন, ‘বাংলাদেশও লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছে। আমি ওদের অর্জনকে একেবারেই খাটো করে দেখছি না। গত বছর আমরা বাংলাদেশে খেলতে গিয়েছিলাম। দেখেছি, বাংলাদেশ টেস্টেও কত ভালো। ওদের দলে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজের মতো অভিজ্ঞদের পাশাপাশি একঝাঁক তরুণ প্রতিভা আছে।’

আরও পড়ুন

এক দশক আগে যখন নিরাপত্তার কারণে বিদেশি দল পাকিস্তানে খেলতে যায়নি, তখন দেশটি নিজেদের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলত সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ওই অবস্থায় টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বরে উঠেছিল মিসবাহ উল হকের নেতৃত্বাধীন দল। সে সময়ের কথা তুলে ধরে অশ্বিন বলেন, ‘পাকিস্তানের ক্রিকেট কোথায় যে চলে এসেছে। ১০ বছর আগেও ওদের হারানো কঠিন ছিল। তখন মিসবাহ, ইউনিস খানরা ছিল। ঘরের ম্যাচ খেলত আমিরাতে। দলের মধ্যে ইয়াসির শাহ, দুই বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রেহমান ও জুলফিকাররা ছিল। আর এখন পাকিস্তান দলের কী হাল হয়েছে! আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।’

গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর বাবর আজম অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলে টেস্টে দায়িত্ব দেওয়া হয় শান মাসুদকে। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানের নেতৃত্বে পাঁচ টেস্টের সব কটিই হেরেছে দল। মাসুদের জন্য খারাপ লাগছে জানিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘শান মাসুদের জন্য আমার প্রচণ্ড খারাপ লাগছে। সে খুবই স্মার্ট ক্রিকেটার। আমি ওকে ভালো করে চিনি। ভালো বলে। পাকিস্তানের জন্য ভালো অধিনায়ক হতে পারে; কিন্তু এই মুহূর্তে পাকিস্তান দল সামলানো সহজ নয়, বিশেষ করে দলের মধ্যে যখন বাবর আজমের মতো পোস্টার বয় আছে, যে কিনা নেতৃত্বেও নেই।’

আরও পড়ুন