আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের কষ্টার্জিত জয়
পার্থের ওয়াকা থেকে ক্রিকেট সরেছে ২০১৭ সালে। গতি ও বাউন্সের জন্য বিখ্যাত সেই স্টেডিয়ামের বিকল্প হিসেবে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি হয়েছে ওপটাস স্টেডিয়াম। ওয়াকার মতো গতি ও বাউন্স থাকবে ওপটাসেও - প্রতিষ্ঠার সময়ের প্রতিশ্রুতি ছিল এমন। কিন্তু গত কয়েক মৌসুমে সেই বাউন্স, সেই গতির অপেক্ষায় যারা ছিলেন, তাদের হতাশই হতে হয়েছে।
কিন্তু আজ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বোলাররা সেই অতীত স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। উইকেটের ৪-৫ মিটার লেংথ থেকে বল লাফিয়েছে নিয়মিত। কিপার বল ধরেছে বুকের কাছ থেকে। আর এমন বাউন্সে আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদেরই সমস্যাটা বেশি হওয়ার কথা।
হয়েছেও তাই। ইংল্যান্ড টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে অলআউট করেছে মাত্র ১১২ রানে। ছোট্ট রান তাড়ায় চেনা আগ্রাসী ইংল্যান্ডকে দেখা যায়নি সেই বাউন্সের কারণেই। জয়ের জন্য ইংলিশদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৮.১ ওভার পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ১১ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ড ইনিংসের শুরুটা অবশ্য সহজ জয়েরই আভাস দিচ্ছিল। জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের ওপেনিং জুটি থেকে ৫ ওভারেই চলে আসে ৩৫ রান। বাটলার পাওয়ারপ্লেতে ৩টি বাউন্ডারি পেয়ে যান দ্রুতই। কিন্তু আফগান পাওয়ারপ্লে বিশেষজ্ঞ ফজল হক ফারুকি এসে বাটলারকে আউট করেন। পায়ের ওপরের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগ বাউন্ডারিতে ক্যাচ আউট হন ইংলিশ অধিনায়ক।
বাটলারের বিদায়ের পর রানের গতি আর বাড়তে দেয়নি আফগানরা। পাওয়ারপ্লে শেষে স্পিনাররা লেংথ পিছিয়ে এনে ইংলিশদের বাউন্ডারি মারা কঠিন করে তোলে। দুই অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবি ও মুজিব উর রহমান তো রীতিমতো ইনসুইং বোলিং করেছেন।
বিশেষ করে ২০ বলে ১৯ রান করা অ্যালেক্স হেলস ফরিদ আহমেদের বলে আউট হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় আফগান দাপট। ক্রিজে বেন স্টোকস ও ডেভিড মালান থাকায় আফগান স্পিনাররা ইংলিশদের রান রেটে লাগাম টেনে ধরে। মুজিব ও নবি দুই ইংলিশ বাঁহাতির উইকেটও শিকার করেন।
কিন্তু রানরেট লাগামে আনতে ইংল্যান্ডের দু-একটি বাউন্ডারিই যথেষ্ট ছিল। লিয়াম লিভিংস্টোন সে কাজটিই করেছেন। ২১ বল খেলে ৩টি চারের সৌজন্যে অপরাজিত ২৯ রান করেছেন তিনি। তাতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।
তবে ইংল্যান্ডের কাজটা সহজ করেছে মূলত তাদের পেসাররা। এদিন ইংলিশ পেসারদের দাপটে আফগান ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেনি। আফগান ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩২ রান এসেছে ইব্রাহিম জাদরানের ব্যাট থেকে।
মার্ক উডের কথা এ ক্ষেত্রে আলাদা করে বলতেই হয়। ব্যাক অব দ্য লেংথ থেকে আফগান ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো কাঁপিয়েছেন এই ফাস্ট বোলার। এরপর উডের দেখানো লেংথেই বল করে গেছেন ইংল্যান্ড দলের বাকি পেসাররা। তাতে সাফল্যও এসেছে ধারাবাহিকভাবে।
তবে ওপটাস স্টেডিয়ামের উইকেট থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা আদায় করতে পেরেছেন স্যাম কারেন। ৩ ওভার ৪ বল করে মাত্র ১০ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেছেন এই বাঁহাতি পেসার। এটি তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে কারেনের হাতে। উইকেটশূন্য থাকেননি বাকিরাও। বেন স্টোকস ২টি, উড ২টি ও ক্রিস ওকস ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।