লায়নের চোটে ফিরল ম্যাকগ্রার স্মৃতি, দুশ্চিন্তায় অস্ট্রেলিয়া
২০০৫ অ্যাশেজের গ্লেন ম্যাকগ্রা যেন ২০২৩ সালের নাথান লায়ন!
১৮ বছর আগের সেই অ্যাশেজে দ্বিতীয় টেস্টের আগে চোটে পড়ে এজবাস্টন টেস্ট খেলতে পারেননি সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার ম্যাকগ্রা। ম্যাকগ্রাহীন সেই অস্ট্রেলিয়া টেস্ট হেরেছিল ২ উইকেটে। লায়ন ম্যাকগ্রার মতো পেসার নন, তবে বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলে তাঁর গুরুত্ব সেই ম্যাকগ্রার মতোই।
লর্ডস টেস্ট দিয়ে টানা ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়া লায়ন চোটে পড়েছেন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে। চোট কতটা গুরুতর, সেই বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর সতীর্থ স্টিভেন স্মিথসহ অনেকেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন লায়নের চোট বেশ গুরুতর।
প্রথম টেস্টে ৮ উইকেট নেওয়া লায়ন এই টেস্টেও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম উইকেট নিয়েছিলেন। ফিরিয়েছিলেন ৪৮ রানে ব্যাট করা জ্যাক ক্রলিকে। তবে ইনিংসের ৩৭তম ওভারে ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোট পান লায়ন। পায়ের চোটে মাঠ ছাড়া অভিজ্ঞ এই স্পিনার বল করতে পেরেছেন মাত্র ১৩ ওভার।
যেভাবে লায়ন কাঁধে ভর করে মাঠে ছেড়েছেন তাতে স্মিথের ধারণা এই ম্যাচে আর নাও দেখা যেতে পারে লায়নকে, ‘ম্যাচের বাকি অংশে খেলার মতো চোট বলে মনে হলো না। আমি নিশ্চিত না সে (লায়ন) ঠিক কেমন আছে, তবে সে যদি ভালো না থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের জন্য বড় ক্ষতি। আশা করছি লায়ন ঠিক আছে, যদিও দেখে খুব একটা ভালো হয়নি।’
ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন অবশ্য অনেকটাই নিশ্চিত লায়ন খুব দ্রুতই মাঠে ফিরতে পারছেন না, ‘লায়ন যেভাবে বাউন্ডারির পাশে হেঁটেছে, তাতে বোঝা যায় তার শরীরের সব ভার পায়ের ডান দিকে ছিল। আমার মনে হয় তাঁর মাংসপেশি ছিঁড়ে গেছে, আপনার যদি মাংসপেশি ছিঁড়ে যায় তাহলে খুব দ্রুত মাঠে ফিরতে পারবেন না।’
লায়ন খেলতে না পারলে তা অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ক্ষতি মনে করছেন আরেক ইংলিশ সাবেক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস, ‘যদি দুটো দলের দিকে নজর দেন, লায়নই দুই দলের মধ্যে বড় পার্থক্য। সে অস্ট্রেলিয়াকে ভারসাম্য এনে দেয়, যেকোনো কন্ডিশনে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি। অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটা বড় ক্ষতি হবে।’
ক্রলিকে ফিরিয়ে টেস্টে ৪৯৬ উইকেটের মালিক হয়েছিলেন লায়ন। নিশ্চিতভাবেই এই টেস্টেই ৫০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার প্রত্যাশা করেছিলেন। দীর্ঘ সময়ের জন্য লায়ন ছিটকে গেলে অস্ট্রেলিয়া দলে দেখা যেতে পারে তরুণ স্পিনার টড মার্ফিকে।
৪ টেস্টে ১৪ উইকেট নেওয়া স্পিনারকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী স্মিথ, ‘টড নেটে দুর্দান্ত বোলিং করছে, ভারত সফরে সুযোগ পেয়ে সে খুবই ভালো বোলিং করেছে। যদি সে দলে আসে আমি আত্মবিশ্বাসী টড আমাদের জন্য দারুণ কিছু করবে।’
২০০৫ সালে সেই দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অ্যাশেজের সঙ্গে চলতি এই অ্যাশেজের তুলনা প্রথম থেকেই দেওয়া হচ্ছিল। লায়নের চোট যেন আরও একবার সেই অ্যাশেজের কথা মনে করিয়ে দিল। তবে ম্যাকগ্রার চোটের মতো লায়নের চোটের প্রভাব এত বেশি হবে কি না, সেটা সময়ই বলবে।